এস. এম. চিশতী:
৩ কিলোমিটার লাঠিতে ভর করে এক পায়ে হেঁটে, শারীরিক প্রতিবন্ধী খালেদা অবশেষে ডিগ্রি পাস করেছে। জানাযায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের পাতানিশ গ্রামের বকাউল বাড়ীর এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া খালেদা অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর মানসিক মনোবল কাজে লাগিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে থেকেও কিভাবে সাফল্য পাওয়া যায় তার বাস্তব এক উদাহরণ হচ্ছে প্রতিবন্ধী খালেদা। তার বাবার নাম আবদুস সাত্তার। সে হাজীগঞ্জ উপজেলার সুহিলপুর ডিগ্রি মাদ্রাসা থেকে ২০১৬ দাখিল, ২০১৮আলিম ও সর্ব শেষ ২০২২ ফাযিল (ডিগ্রি) লাভ করেন। এ বিষয়ে সুহলিপুর ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রহিম বলেন, খালেদা খুবই অসহায় একটি মেয়ে, তাকে আমরা সম্পূর্ণ ফ্রিতে লেখা পড়ার ব্যবস্থা করেছি। সে ডিগ্রি পাস করায় আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষথেকে তাকে নিয়ে গর্বিত।
সুহিলপুর ফাযিল মাদরাসার গভর্নিংবডির সহ-সভাপতি ও হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ আসফাকুল আলম চৌধুরী বলেন, অসহায় ও দরিদ্র মেয়ে খালেদা আক্তারকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয় মানবিকদৃষ্টিকোন থেকে তার পাশে দাঁড়াবে বলে আমার বিশ্বাস। মেয়েটি অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শেষ করেছে। আমি যতটুকু জানি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাকে অর্থ নৈতিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন এবং ভবিষ্যতে মেয়েটি ডিগ্রি পাশ করলে তাকে প্রতিবন্ধী কোটায় একটি চাকুরী দিবেন বলেছিলেন। আশা করি তিনি অসহায় ও সুশিক্ষিত মেয়েটির পাশে তিনি থাকবেন।
২০১৮ সালে আলিম পাস করার পর চাঁদপুর জেলার বভিন্নি পত্রিকায় “তিন কিলোমিটার লাঠিতে ভর করে এক পায়ে হেঁটে শারীরিক প্রতিবন্ধী খালেদার এইচএসসি পাস” এ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে, চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী খালেদার বাড়িতে নিজের গাড়ি পাঠিয়ে তাকে জেলা পরিষদে নিয়ে লেখা পড়া চালিয়ে যেতে উৎসাহ প্রদান করেন। এবং সে সাথে খালেদাকে ১০ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন। চেক প্রদান কালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী বলেন,খালেদা ডিগ্রি পাস করলে তাকে জেলা পরিষদে প্রতিবন্ধী কোটায় চাকুরি দেবেন।
সরেজমিনে খালেদার সাথে একান্ত সাক্ষাতে ত্রনিদী পত্রিকার প্রতিনিধিকে বলেন, আমার বিশ্বাস চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী, তিনি তাঁর কথা রাখবেন,তিনি আমাকে চাকুরি দিবেন বলেছেন,সে থেকে আমি স্বপ্ন দেখেছি নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে লেখা পড়ার কোনো বিকল্প নেই। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না। আমি চাকুরি পেলে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে পারবো। আলহাজ্ব ওচমান গণি স্যার পুণরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে স্যারের জন্য দোয়া করেছি। আমি ডিগ্রি পাস করেছি যার পিছনে স্যারের অনে অবদান রয়েছে।তাই আমার বিশ^াস ওচমান স্যার আমার পাশে দাঁড়াবেন।
ত্রিনদী পত্রিকার পরিবারের পক্ষ থেকে আমরাও চাই, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী খালেদার স্বপ্ন পুরণে তার পাশে দাঁড়াবেন।