চাঁদপুর হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সাহেগঞ্জের কৃষি জমি রাতের আধারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে বরিশালের ভূমিদস্যু জাকির সিকদার।
হাইমচর উপজেলার ৪নং নীলকমল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের এলাকার মাটি মুন্সিগঞ্জের ইটভাটায় বিক্রি করে যাচ্ছেন স্থানীয় কতিপয় মাটি খেকু। যার ফলে নীলকমল ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এ ইউনিয়নটি। এ বালু খেকুদের হাত থেকে নীলকমল ইউনিয়নকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে বালু খেকুদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান এলাকাবাসী।
জানা যায়, সোমবার ১৩ নভেম্বর থেকে বরিশালের জাকির সিকদারের নেতৃত্বে ৫-৬ টি ভিকু দিয়ে রাতের আঁধারে ব্যাপক মাটি কাটার হিড়িক চলছে। চাঁদপুরের শেষ সীমানা হিজলা সীমান্তবর্তী হওয়ায় প্রশাসনের নজরের ফাঁকি দিয়ে চাঁদপুরের মানচিত্র থেকে বিলীন করে দিচ্ছে নীলকমল ইউনিয়ন। এলাকাবাসী জানায় প্রশাসন এবং মিডিয়াকে ম্যানেজ করেই এসব কাজ করে যাচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩ টি ইউনিয়ন নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ৩টি ইউনিয়ন কাগজে কলমে থাকলেও ঐ তিনটি ইউনিয়নের বেশির ভাগই এখন নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। নীলকমল ইউনিয়নে যে টুকু জায়গা রয়েছে সেটুকুতেও কুনজর পড়েছে বরিশালের মাটি খেকো সিকদার ও স্থানীয় কতিপয় মাটি খেকু ব্যক্তিদের।
বেকু দিয়ে কয়েকটি জাহাজে করে প্রতিদিনই বিক্রি করছে মাটি। যার ফলে মানচিত্র থেকে বিলীনের পথে রয়েছে নীলকমল ইউনিয়নে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণাকৃত এ মধ্যচরের মাটি কেটে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার মত জঘন্যতম কাজ করছে এ মাটি খেকু চক্রটি।
আর অসহায় কৃষকের আর্তনাদ পৌঁছায় না প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের কানে। শত শত লিখিত অভিযোগের পরও আরো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে জাকির। এ বালু খেকো জাকিরের ক্ষমতার দাপট আর অর্থের কাছে অসহায় হড়ে পড়েছে প্রশাসন ও স্থানীয়রা।
বরিশার জেলার হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীর তীরের মাটি যাচ্ছে অর্ধশত অবৈধ ইটের ভাটায়। ঘুমিয়ে রয়েছে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর। অসহায় কৃষকদের লিখিত অভিযোগের পরও তাদের ঘুম ভাঙ্গছেনা।
বরিশাল-চাঁদপুর জেলার সীমান্তবর্তী অংশে মেঘনা নদীর তীর থেকে শত শত একর জমির মাটি কেটে নিচ্ছেন জাকির শিকদার। এসব মাটি কাটায় স্প্রিট বোর্ডে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জাকির বাহিনীর একাধিক লোক পাহাড়া দিতে দেখা যায়।
জাকির সিকদার নেতৃত্বে, কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই অন্যের কৃষি জমি নষ্ট করে জোরপূর্বক ভাবে মাটি কেটে নিচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, এতে করে একদিকে যেমন নদীর পাড় ভাঙছে, তেমনি ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে না খেয়ে অসহায় কৃষকদের মরতে হবে । স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালীর পকেটে যাচ্ছে এই মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা। হুমকি ধমকি আর প্রাণ-নাশের ভয়ে কেউ জাকির বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না। কৃষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাদের ইট ভাটায়।
নাম বলতে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকার ফসলী জমি জোর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছে জাকির সিকদার সহ প্রায় ১০ থেকে ১২ জনের নেতৃত্বে তারা ৫টি বেকু দিয়ে মাটি কেটে জাহাজে করে নিয়ে মুন্সিগঞ্জে মাটি বিক্রি করছে। যার কারণে আমাদের গ্রামটা এখন বিলীনের পথে। আমরা প্রশানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এবং এ চরের মাটি বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাগ্রহন করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, হিজলা সীমান্তবর্তী গ্রামের মাটি অন্যত্র বিক্রি করার কারনে গ্রামটি বিলুপ্তির পথে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক বিষয়। আমরা জানতে পারি বরিশালে জাকির শিকদারের নেতৃত্বে গত কয়েক বছর ধরে চাঁদপুর হিজলা সীমান্তবর্তী এলাকায় মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এবং মুন্সিগঞ্জে বিক্রি করছে এটা সকলেরই জানা। তবে গ্রামটি রক্ষার স্বার্থে এ মাটি কাটা বন্ধ করা প্রয়োজন এবং অবৈধ মাটি কাটা বন্ধের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে কোনো লিখিত অভিযোগ করেন নেই।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.