শাখাওয়াত হোসেন শামীম :
হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা বাজারের তাজ হোটেলে পঁচা ও পোকাযুক্ত খাবার বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে। গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভোক্তা মোড়কজাত খাবার ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে গেলে খাবারে কৃমি জাতীয় পোকা দেখতে পায়। এ বিষয়ে তিনি তাজ হোটেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তার সাথে অশোভন আচরণ করায় তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিলনকে মৌখিক অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভোক্তা জানান, বাকিলা বাজারের তাজ হোটেলে প্রতিনিয়ত অবাধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রি হওয়ার কারনে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মূখীন হয়ে পড়েছে।
এছাড়া হোটেল মালিক বিভিন্ন রকমারী খাবার হোটেলের সামনে খোলা করে রাখে। এতে মশা-মাছির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকারের পোকামাকড়ও খাবারের উপর বসে। খাবার তৈরীতে দীর্ঘদিন আগে ব্যবহৃত পচা (খাবার অযোগ্য) তেল ব্যবহার করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
তিনি আরো জানান, বাজারের সড়কের দক্ষিণ পাশে প্রতিষ্ঠিত তাজ হোটেলে প্রতিনিয়ত রাস্তার ধূলাবালি মশা-মাছি খাবারে পড়ে রোগ জীবানু ছড়াচ্ছে। প্রত্যেকদিন খাবার আলগা করে রাখা হলেও হোটেল মালিকের বিন্দু মাত্র সচেতনতা নেই। এসব খাবার প্রতিনিয়ত অজ্ঞ ক্রেতা সাধারণের কাছে বিক্রি করা হয়। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, রাস্তার পাশ দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, টেম্পো, নসিমন, লেগুনা, মাইক্রো, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরণের যানবহন ও পরিবহন চলাচল করে। হোটেল মালিকের অসচেতনতার কারণে জনসাধারণের শরীরে রোগ জীবানু প্রবেশ করছে। হোটেল মালিক ক্রেতা সাধারণকে যে পানি পান করায় তাও নিরাপদ নয়। যে পাত্রে খাবার পরিবেশন করা হয় তা-ও অপরিচ্ছন্ন। হোটেল মালিক অন্যত্র থেকে গভীর নলকূপের পানি আনে। যে সব পাত্রে ওই পানি রাখে তাও ময়লা আবর্জনায় ভরা।
বাজারের আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন,তাজ হোটেল মালিকের পানি রাখা পাত্র এত অপরিষ্কার যার মধ্যে পোকামাকড় পাওয়া যায়। প্রতিদিন এসব পানির পাত্র পরিষ্কার করা হয়না। হোটেলে ব্যবহৃত থালা বাটিও অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন থাকে। তাজ হোটেলে ধোয়া মোছার বালাই নেই। হোটেলে প্রবেশ করলে মনে হয় গন্ধের রাজ্যে প্রবেশ করা হয়েছে। হোটেল বয়দের অবস্থা আরও নাজুক। এদের পরিহিত জামা কাপড় অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন থাকে। এদের হাত পা থাকে নোংরা।
বাকিলা বাজারের সচেতন মহল মনে করেন তাজ হোটেল মালিকের খাবার বিক্রি ও পরিবেশনে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এবং এই হোটেল মাঝে মাঝে প্রশাসন তদারকি করা দরকার। তাহলে তারা স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে খাবার বিক্রিতে সচেতন হত। অবিলম্বে তাজ হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহেণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মহল ও এলাকাবাসী
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক সামছুল আলম রমিজ বলেন,অপরিস্কার নোংরা পরিবেশে এসব হোটেলের খাবার খেয়ে বড় ধরনের রোগও হতে পারে। কিন্তু আমার একার পক্ষে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে। তবে খুব তাড়াতাড়ি এসব হোটেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল জানান, যে সমস্ত খাবার হোটেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হয়। সে সমস্ত হোটেলে অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.