চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের বাঘড়া বাজারে আগুন লেগে বিভিন্ন ধরনের ১২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়েগেছে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিনগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের পাশে বাজার সম্মুখের ওই মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তবে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আগুনের সূত্রপাত তা কেউ বলতে পারেনি।
বুধবার (১ মে) ভোর ৬টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা অনেকেই কান্নাকাটি করছেন। দোকানে রেখে যাওয়া জিনিসগুলো তারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন কিছুই অক্ষত নেই। সব পুড়ে ছাই হয়ে আছে।
আগুনে পুড়ে যাওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-মার্কেটের পশ্চিম দিকের আলমগীরের ভ্যান গাড়ীর গ্যারেজ, মো. মোছার মটর বাইকের গ্যারেজ, হাসানের সাইকেলের দোকান, গণি মিজির চায়ের দোকান, সমুন মিয়ার খাবার হোটেল, বারেক গাজী, মমিন মিয়া ও নজরুল ইসলামের রড সিমেন্টের দোকান, নান্নু বহরদারের জ্বালানি তেলের দোকান, অহিদ মিয়ার ডেকোরেটর দোকান, মানসুর মেম্বারের রড সিমেন্টের দোকান ও রবিন্দ্র কর্মকারের কামারের দোকান।
স্থানীয়রা জানান, রাত আনুমানিক আড়াইটা থেকে পৌনে ৩টার মধ্যে আগুন লাগে। সড়কের পাশে হওয়ায় আগুন তাৎক্ষনিক লোকজনের নজরে আসে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফরিদগঞ্জ ও চাঁদপুরের ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে আসে। একই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। আগুনে সবচাইতে বেশী জিনিসপত্র পুড়েছে অহিদ মিয়ার ডেকোরেটর দোকানে। তিনি সম্প্রতি সময় দোকানের সকল আসবাবপত্র নতুন করে ক্রয় করেছেন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালেন ক্ষতিগ্রস্ত চা দোকানদার গণি মিজি। তিনি বলেন, আমার আর কিছু নেই। গত ৮ মাস পূর্বে একই বাজারের ভিতরে আমার চা দোকান আগুনে পুড়ে যায়। সেখান থেকে এসে এখানে আবার দোকান শুরু করি। এখানেও আমার সব শেষ হয়ে গেলো। বোনদের কাছ থেকে টাকা ঋন করে মালপত্র কিনেছি। পরিবারের ৭ সদস্যের সংসার এখন কিভাবে চলবে।
ক্ষতিগ্রস্ত রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ৩টার দিকে তার পাশের ব্যবসায়ী নান্নু বহরদার তাকে ফোন করে জানান তাদের সব দোকান আগুনে পুড়েগেছে। এসে দেখেন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। তার দোকানে থাকা মালামালসহ প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্স চাঁদপুর কার্যালয়ের উপ পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন বলেন, রাত ৩টায় আমরা আগুন লাগার সংবাদ পাই। ৩টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ শুরু করি। আমাদের দুটি ও ফরিদগঞ্জের দুটিসহ ৪টি ইউনিট একসঙ্গে কাজ করে আধাঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে ৩টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কাজ শেষে ভোর ৫টায় আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষিতর বিষয়ে এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তবে ওই মার্কেটের ১২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.