প্রতিবছর বর্ষা এলেই বৃষ্টির পানি জমে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় স্বর্ণকলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর জলাবদ্ধতার সেই হাঁটু পানি থেকে প্রায় আধা কেজি (৫০০ গ্রাম) ওজনের একটি সাকার ফিশ ধরেছেন স্থানীয় জহির হোসেন নামের এক যুবক। এতে এক প্রকার অবাক হয়ে যান স্থানীয়রা।
জহির জানান, শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে তিনি হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির সামনে স্কুল মাঠে যান। এসময় তিনি স্কুল মাঠে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে একাধিকার কিছু একটা নড়াচড়া করতে দেখেন। এসময় তিনি শোল মাছ ভেবে সাকার ফিশটি ধরেন এবং স্কুলের সামনে দোকানে নিয়ে আসার পর তিনি সাকার ফিশটি দেখে ভয় পেয়ে যান।
ভয় পাওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি আরও জানান, এটি মাছ না অন্য কিছু তা, তিনি বুঝতে পারেন নাই। যেহেতু তিনি হাত দিয়ে মাছটি ধরেছেন তাই, ভয় পেয়েছেন। পরে স্থানীয় একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে এটি ‘সাকার ফিশ’ বলে জানতে পারলে তার ভয় কেটে যায়। পরে সাকার ফিশটি মেরে মাটি চাপা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রথমেই উদ্ভুত ও নাম না জানা মাছটি ধরা পড়ার খবর পেয়ে স্থানীয় ও এলাকার নারী ও শিশুসহ উৎসুক মানুষজন এটি দেখার জন্য ভিড় জমান। এসময় ওই সংবাদকর্মীর মাধ্যমে সাকার ফিশের ক্ষতিকরের বিষয়টি জানার পর অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, মাছটি স্কুল মাঠের পানিতে কিভাবে এলো ?
ধারণ করা হচ্ছে, স্কুলের পাশেই দুইটি বড় পুকুর রয়েছে এবং পুকুরে পোনা মাছ ছাড়ার সময়, ওই পোনা মাছের সাথে সাকার ফিশের পোনাটিও এসেছে। পরে এটি বড় হয়ে যায় এবং পানি নিস্কাশনের পাইপ দিয়ে স্কুল মাঠের জমে থাক হাঁটু পানিতে চলে আসে।
উল্লেখ্য, সাকার ফিশের পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। অ্যাকুরিয়ামে শোভাবর্ধনকারী হিসেবে রাখা হয় বিদেশি প্রজাতির এ মাছটিকে। মাছটি বুড়িগঙ্গা নদীতে ব্যাপক হারে দেখা যায় এবং বর্তমানে দেশের বিভিন্ন ডোবা-নালাসহ বিভিন্ন জলাশয়ে হরহামেশাই দেখা মিলছে মাছটির।
দ্রুত বংশ বিস্তারকারী মাছটি জলজ পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি ছোট মাছ এবং মাছের পোনা খেয়ে থাকে। তাছাড়া সাকার ফিশের পাখনা খুব ধারালো। ধারালো পাখনার আঘাতে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষত তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে পচন ধরে সেগুলো মারা যায়।
সাকার ফিশ রাক্ষুসে প্রজাতির না হলেও প্রচুর পরিমাণে খাবার ভক্ষণ করে। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্যের জোগান নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না বিলুপ্তির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের। সরকারিভাবে এ মাছটি চাষ কিংবা অ্যাকুরিয়ামে পালন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2025 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.