গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, ‘৭১ এর পর শেখ মুজিবের নেতৃত্বে একবার গণহত্যা হয়েছে, ২০২৪ এ তার মেয়ের নেতৃত্বে গণহত্যা হলো। আওয়ামীলীগকে তৃতীয়বার আর গণহত্যার সুযোগ দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মতো নিষিদ্ধ করতে হবে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পল্টন এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘৫ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও এখনো আওয়ামী হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারের খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা হওয়া মানে বিচারের নামে প্রহসন করা। আমাদের স্পষ্ট কথা শেখ হাসিনা ও কাদেরসহ ভারতে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। এদের শাস্তি না হলে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা হবে।’
আ. লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই খুনি দলটি বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে। বিচারের পূর্বে তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমাদের দাবি, আওয়ামী লীগসহ সকল লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সরকার বা হাইকোর্টের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে, তারা নির্বাচনে যেতে পারবে।
আমাদের কথা হলো, স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ দিলে, তার বিরুদ্ধেই আন্দোলন শুরু হবে। আওয়ামী লীগকে কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে, সেটা আমাদের রক্তের উপর দিয়ে করতে হবে।’
সরকারকে সবার মতামত নিয়ে ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি জাতীয় কমিশন গঠন করার মাধ্যমে ঘোষণাপত্র তৈরি করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ৮৩৪ জন শহীদের গেজেট প্রকাশ করেছে। বাকিদের তালিকা কই? ৭১ এর মতো কোনো বিকৃত ইতিহাস শুনতে চাই না।
দ্রুত শহীদের সঠিক তালিকা করুন, শহীদ পরিবারকে ১ কোটি করে ক্ষতিপূরণ দিন এবং আহতের ধরণভেদে ৫০ লাখ করে ক্ষতিপূরণ দিন।’
দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাসান আল মামুন বলেন, ‘১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা এসেছে ৪৩ তম বিসিএসে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের গেজেজভুক্ত করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে যে প্রশিক্ষণার্থী এসআইদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের চাকরিতে পূর্ণবহাল করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘গণহত্যায় জড়িত অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। তার প্রতি আহ্বান আপনি না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অনেকেই উপদেষ্টা হয়েছেন। অধিকাংশ উপদেষ্টারই গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না। আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো কাজ করলে, জনগণ কিন্তু আপনাদের পদে রাখবে না।’
গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঈসমাইল আহমেদ বন্ধন, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2025 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.