বন্ধুর হবু স্ত্রীকে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও মোবাইলে ভিডিও ধারণের ঘটনায় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার জাকির হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মামলা গ্রহণ করে রোববার দিনগত রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো- বরিশাল নগরীর রূপাতলী উকিল বাড়ি সড়কের জামিয়া কাসিমিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আবিদ হাসান ওরফে রাজু, বাবুগঞ্জ উপজেলার গাঙ্গুলি বাড়ি মোড় এলাকার বাইতুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইম হাওলাদার এবং সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র হৃদয় ফকির।
পুলিশ জানিয়েছে, তিনজন বর্তমানে তিন এলাকার বাসিন্দা হলেও তারা আগে একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্রে পরিচয় এবং ঘটনার সময়ে তারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একই বাসায় মিলিত হয়ে অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, এয়ারপোর্ট থানার পাংশা এলাকার একটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষা দেন। তার সঙ্গে একই এলাকার মাহফুজুর রহমান সায়মনের প্রেমের সম্পর্ক ও পারিবারিকভাবে বিয়ের কথা ঠিক হয়। বিষয়টি সায়মনের বন্ধু আবিদ হাসান, সাইম এবং হৃদয় ফকির জানত।
গত ২০ আগস্ট রাতে হৃদয় ফকির ওই ছাত্রীর মোবাইলে কল করে জানান, সায়মনের সঙ্গে বিয়ের কথা ঠিক হলেও সে অন্য নারীর সঙ্গে মেলামেশা করেন। বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেনি সায়মনের হবু স্ত্রী। পরে অপর দুই বন্ধু বললে বিশ্বাস করে এবং সায়মনের বন্ধুরা জানান- ২৭ আগস্ট বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেরেবাংলা সড়কে ডা. হামিদ লেনের হৃদয় ফকিরের ভাড়া বাসায় সায়মন অন্য মেয়ে নিয়ে যাবে। হাতেনাতে ধরার জন্য ওই ছাত্রীকে হবু স্বামীর বন্ধুর বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন।
কথামতো ওই ছাত্রী সকাল ১০টার দিকে গেলে সেখানে আটকে তাকে তিনজনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে মোবাইলে ভিডিও করে রাখে। ধর্ষণে ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এতে বাধ্য হয়ে কোথাও চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
এরপর ধর্ষণের ভিডিওর কথা বলে ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে হবু স্বামীর বন্ধুরা ৫ বার সেই বাসায় নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। পরে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ছাত্রী। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা তাদের ধর্ষণের ভিডিও হবু বর সায়মনের পিতাকে দেখান।
এরপরই বিষয়টি জানাজানি হলে হবু স্বামীর সহায়তায় রোববার (২৭ নভেম্বর) থানায় অভিযোগ দেন সেই ছাত্রী। এরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.