এবার প্রেমের টানে সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে গোপালগঞ্জে এসে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করলেন জার্মান তরুণী জেনিফার স্ট্রায়ার্স (১৮)। সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জের আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে জেনিফার স্ট্রায়ার্স ও চয়ন ইসলাম জুটির বিবাহ সম্পন্ন হয়। পাত্রা গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরো গ্রামের ইতালি প্রবাসী রবিউল ইসলামের ছেলে চয়ন ইসলাম (২২)।
এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে জার্মান থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন। সেখানে জেনিফারকে স্বাগত জানান চয়ন ইসলাম ও তার স্বজনরা। পরে গোপালগঞ্জে এসে শহরের মডেল স্কুল রোডের চয়নের এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন তারা।
এ সময় বিদেশি বধূকে পেয়ে চয়নের স্বজনরা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। খবর পেয়ে নবদম্পতিকে দেখতে পাড়া প্রতিবেশী ও উৎসুক মানুষদের ওই বাড়িতে ভিড় করতে দেখা যায়। পরে পুত্রবধূকে ফুল দিয়ে বরণ করেন চয়নের মা ঝর্ণা বেগম।
জেনিফার স্ট্রায়ার্সের বাবা জোসেফ স্ট্রায়ার্স ও মা ইসাবেলা স্ট্রায়ার্স। জার্মানির বাইলেফেল্ড স্টেটে তারা বসবাস করেন। পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও জেনিফারের আরও দুই বোন রয়েছে। তিনি বোনদের মধ্যে দ্বিতীয়। জেনিফার খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী। তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছেন।
বর চয়ন ইসলাম জানান, পাঁচ বছর আগে জার্মানিতে ভাষা শিক্ষার ওপর একটি কোর্স করার সময় জেনিফারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেখান থেকে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়। একপর্যায় তাদের সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয়। এরপর ২০২২ সালের ১০ মার্চ তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এতে তাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। ওই সময় তাদের মধ্যে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ হতো।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জেনিফার বাংলাদেশে আসার জন্য আগ্রহী হলে আমি তাকে সম্মতি দেই। পরে দুজনের সম্মতিতে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।
জার্মানি তরুণী জেনিফার তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, স্বামীর বাড়ির লোকজনের ভালোবাসা ও আতিথেয়তায় তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। শাশুড়ি, ননদ ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা এভাবে তাকে কাছে টেনে নেবে তা সে কল্পনাও করতে পারেননি। স্বামীর বাড়ির লোকজনের ভালো ব্যবহারের কথা আমি আমার বাবা-মাকে জানিয়েছি। তারা খুব খুশি হয়েছেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করেছেন।
জেনিফারের শাশুড়ি ঝর্ণা বেগম জানান, বিদেশি পুত্রবধূকে পেয়ে আমরা অনেক খুশি। অল্প সময়ের মধ্যে জেনিফার আমাদের খুবই আপন করে নিয়েছে। গরমে ওর একটু কষ্ট হচ্ছে। এতেও কোনো অভিযোগ নেই তার। আমাদের সঙ্গে স্বাভাবিক খাবার খেয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই পুত্রবধূকে আমাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাব। নবদম্পতির জন্য দোয়া চেয়েছেন ঝর্ণা বেগম।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.