মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
বিএনপির ডাকা ৩ দিনের অবরোধের প্রথম দিনে হাজীগঞ্জে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় ৪ জন আহত হয়েছেন এবং ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে একজন ও উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নে পিকেটিং করার সময় এক যুবদল নেতাকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে সেন্দ্রা বাজারে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের সেন্দ্রা বাজারে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গাড়ী চলাচলে বাঁধা দেয়। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতারা শান্তি সমাবেশের উদ্দেশ্যে উপস্থিত হলে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে সাবেক ছাত্রনেতা আহসান হাবিবসহ বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন মজুমদার খোকন, ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মাসুম গাজী, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক শাহনেওয়াজ শরীফ আহত হয়।
আহতদের মধ্যে আলাউদ্দিন মজুমদার খোকনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে তাদের উপর ইট-পাটকেল ছুড়ে মারেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় যুবদলের এককর্মীকে আটক করে পুলিশ।
এ ছাড়াও দুপরে হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়কের হাজীগঞ্জ বাজারস্থ মকিমাবাদ রেলক্রসিং এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করার চেস্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিত স্বাভাবিক করেন। এসময় পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাছান রাব্বির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলে।
দুপুর ১টার দিকে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদি হাসান মানিকের নেতৃত্বে ১ প্লাটুন বিজিবি নিয়ে পৌরসভাধীন টোরাগড়, হাজীগঞ্জ বাজার ও বাকিলা এলাকায় টহল দিতে দেখা যায়। তার সাথে ছিলেন, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিগার সুলতানা। একই সময়ে র্যাব সদস্যেরও টহল দিতে দেখা গেছে।
এছাড়াও সকাল থেকে দিনব্যাপী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ-ফরিদগঞ্জ সার্কেল) পঙ্কর কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে টহল দেয়। এ সময় পিকেটিং করার দায়ে বাকিলা ইউনিয়ন থেকে যুবদল নেতা মাহবুব এলাহিকে আটক এবং পিকেটারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এছাড়া উপজেলার কোথাও অপ্রিতিকর পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে এদিন বিএনপির কোন নেতৃবৃন্দকে মাঠে দেখা যায়নি।
এ দিকে অবরোধের প্রতিবাদ করে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপন, সকাল ১০টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী মাইনুদ্দীন, বিকালে বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে আহসান হাবিবসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বে সেন্দ্রা বাজার, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাছান রাব্বির নেতৃত্বে হাজীগঞ্জ বাজার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক টোরাগড় এলাকায় আবদুল্লাহ আল মামুন জীবনের নেতৃত্বে শান্তি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা গেছে, সেন্দ্রা বাজারে পুলিশের উপর হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করবে পুলিশ। এর আগে সোমবার হাজীগঞ্জ বাজারস্থ নদী বাড়ি ক্যাপে এন্ড রেস্টুরেন্ট থেকে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.