অবরোধ ও অগ্নিসন্ত্রাস করে কেউ যেন পার না পায় সেজন্য নেতাকর্মীদের সংগঠিত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর বিসিআইসি মিলনায়তনে শুক্রবার বিকালে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবাইকে যার যার এলাকায় এমনভাবে সংগঠিত হতে হবে যেন ওই অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস করে একটাও পার না পায়। আর যদি কোনোটা ধরা পড়ে হাতেনাতে যে আগুন দিচ্ছে ওইটাকে ধরে সঙ্গে সঙ্গে ওই আগুনেই ফেলতে হবে। তার হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে হাত আগুন দেবে, ওই হাতই পোড়াতে হবে। তাহলেই তারা সোজা হবে, না হলে সোজা হবে না। যে যেমন, তেমন করতে হয়। ‘যেমন কুকুর, তেমন মুগুর’ দিতে হয়। তখন ওদের শিক্ষা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর সেই সঙ্গে আমি বলব, ওদের (বিএনপি-জামায়াত) চক্রান্ত হচ্ছে নির্বাচনটা বানচাল করা। আর এই নির্বাচন বানচাল করার পেছনে অনেকেরই হাত আছে। কিন্তু আমাদের শক্তি জনগণ। বাংলাদেশের মানুষ। ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করে অনেক অত্যাচার নির্যাতন জেল জুলুম বারবার মৃত্যুর মুখে গেছি। সবকিছু অতিক্রম করেই কিন্তু আজকে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, আজকে ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেন বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে আমাদের যে নেতাদের আমরা হারিয়েছি তাদের কাছে আমাদের এটাই ওয়াদা, যে আপনাদের জীবন নিয়ে গেছে সত্যি। কিন্তু যে বাংলাদেশ আজকে জাতির পিতা রেখে গেছেন, জাতীয় চারনেতা। আমরা এটুকু বলব, এই আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। ওই সমস্ত দুষ্কৃতকারী কয়েকজনের লাফালাফিতে এ দেশে কখনো নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না, এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার অনুরোধ থাকবে, সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচনে নানাভাবে গোলমাল করার চেষ্টা করবে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং মানুষের ভোটের অধিকার যেটা অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আদায় করেছি, সেই অধিকার যাতে নিশ্চিত থাকে, মানুষ যেন তার ভোট শান্তিপূর্ণভাবে দিতে পারে- সেই পরিবেশ রাখতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, বিএনপি ওরা আসলেই সিট পাবে কিনা- নির্বাচন করবে কিনা সন্দেহ। আর নির্বাচনে আসলেও আসবে ওই নমিনেশন বাণিজ্য করার জন্য। সেই ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে নমিনেশন সেটাতো আমি দেব। কারণ আমি বসে থাকি না। প্রতি ছয় মাস পরপর আমার একটা হিসাব থাকে। কেউ যদি আবার মনে করে যে ও এখন তো ওরা (বিএনপি) নাই আমরা দাঁড়ালে তো আমরা জিতেই যাব। আর একটা কথা একটা সিট না পেলে কী হবে, বাকি সিট তো পাবে, সরকার গঠন করবে। এই চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। কারণ, এই চিন্তাই কিন্তু সর্বনাশ ডেকে আনবে। কাজেই আমি যেই সিদ্ধান্ত দেব, সেই সিদ্ধান্ত মানতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আর এখন এই অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রত্যেক এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেক এলাকায়, শুধু এই ঢাকা শহর বলে না। যেখানে যেখানে তারা এই ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস করবে সেই এলাকায় কত বিএনপি আছে খুজে বের করতে হবে বা জামায়াত খুজে বের করতে হবে। ওইগুলোকে ধরিয়ে দিতে হবে। আর মানুষের জানমালের যেন ক্ষতি করতে না পারবে তাদেরকে সুরক্ষা দিতে হবে। এটা হলো আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। কারণ, আমাদের আর কিছু নাই। আমাদের মুরব্বি নাই। আমাদের আছে জনগণ। সেই জনগণ নিয়েই আমাদের চলতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.