হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। স্থানীয়দের হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলায় বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের সর্ব-সম্মতিক্রমে ডিজির প্রতিনিধি মো. সিরাজুল ইসলাম পাটওয়ারী এ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন।
তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগে এরেজমেন্ট প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়েছে। তাই আজকের (শনিবার) নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হলো এবং স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষা পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম জাহাঙ্গীর আলম, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন, সদস্য মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী ও প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে আবেদৃনকৃত ১৫ জন শিক্ষকের মধ্যে যাচাই-বাছাই এবং কাম্য ও যোগ্যতা না থাকায় ৩ জনের আবেদন বাতিল করা হয়। অপর ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে নুরুন নাহার ও মিজানুর রহমানের পক্ষ নেন স্থানীয় ও এলাকাবাসী। শনিবার নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আবেদনকৃত প্রার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে স্থানীয় একটি পক্ষের বিরুদ্ধে।
এছাড়া নিয়োগ পরীক্ষায় চলাকালীন সময়ে যেন ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য যেন উপস্থিত না হন, এজন্য তাদেরকে বাধাগ্রস্ত করা হয় এবং নিয়োগ পরীক্ষায় প্রভাবিত করতে বিদ্যালয়ে দুই পক্ষের লোকজন জড়ো হন। এ নিয়ে বিদ্যালয়ে হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ডিজির প্রতিনিধি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ আনেন একপক্ষ।
স্থানীয় জসিম মুন্সী ও শাহাজান বেপারীসহ কয়েকজন ডিজির প্রতিনিধিসহ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ে আসলে প্রধান শিক্ষক জোৎ¯œা আক্তার তাদেরকে সন্ত্রাসী বলেন এবং নিয়োগ পরীক্ষায় প্রভাবিত করতে তিনি একজন প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাছাড়া তাঁর সময়ে বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য হারিয়েছে। তাই, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতসহ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেন অভিযোগকারীরা।
পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য মাসুদ মোল্লা নিয়োগ বোর্ডের কাছে বলেন, আজকের মতো বিদ্যালয়ে এতো খারাপ পরিস্থিতি আর হয় নাই। তাই, পরবর্তী একটা তারিখ নির্ধারণ করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হোক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবেদনকৃত দুইজন শিক্ষক বলেন, সকালে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসলে কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা সম্মুখিন হয়েছি। পরে পরিচালনা পর্ষদের সহযোগীতায় আমরা ৫জন শিক্ষক কেন্দ্রে আসি।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সফিকুল ইসলাম ও রাশেদা বেগম সংবাদকর্মীদের জানান, বিদ্যালয়ে আসার সময় তারাও বাধার সম্মুখিন হয়েছেন। এ সময় রাশেদা বেগম বলেন, আমার বাড়িতে গিয়ে কয়েকজন বলেছেন, ঝামেলা হবে, তাই আমি যেন বিদ্যালয়ে না যাই।
প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তার বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হবে। আমিও চাই একজন যোগ্য লোক এ পদে আসুক। কিন্তু এদিন সকালে বেশ কিছু লোক বিদ্যালয়ের সম্মুখে অবস্থান করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেন এবং তারা হট্টগোল শুরু করেন। আমি ওই শিক্ষকদের ফোন পেয়ে বিদ্যালয়ের সামনে গেলে তারা আমার সাথেও খারাপ আচরণ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, বিষয়টি আমি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করি। পরে সভাপতির হস্তক্ষেপে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা ৫জন শিক্ষক কেন্দ্রে আসেন। এর মধ্যে ডিজির প্রতিনিধি মহোদয় উপস্থিত হলে তাঁর সামনেও তারা হট্টগোল শুরু করে। পরে পরীক্ষা নেয়ার পরিবেশ না থাকায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন তিনি।
এ সময় হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু নছর নিপু, ইউপি সদস্য হাবিব মোল্লাসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অন্যান সদস্য, স্থানীয় ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মহিউদ্দিন আল আজাদ, ই-মেইল: trenadinews@gmail.com, মোবাইল-০১৭১৭-৯৯২০০৯
Copyright © 2024 সাপ্তাহিক ত্রিনদী. All rights reserved.