ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই জুলাই আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞ চালান শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে শেষ সাক্ষী হিসেবে এ কথা বলেন আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম। তিনি দায়ীদের বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
অবশেষে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলামের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে শেষ হলো জুলাই হত্যাযজ্ঞের মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ মামলায় সবশেষ সাক্ষী হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দেন নাহিদ ইসলাম। জবানবন্দিতে আন্দোলনের সময়, সমন্বয়কদের গুম করে ডিবি অফিসে নির্যাতন, নির্বিচারে ছাত্র-জনতার ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি, আওয়ামী ও ছাত্রলীগের নির্যাতন, আন্দোলন দমনে গোয়েন্দা সংস্থার চাপসহ নানা তথ্য উঠে আসে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি এবং ভিকটিম পরিবাররা ভিকটিমের পক্ষ থেকে আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছি। শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা যারা জড়িত ছিল তাদের প্রধানদের দায়ী করেছি।
যারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের দায়ী করেছি। তাদের বিচার এবং কঠোর শাস্তি আমি আদালতের কাছে প্রত্যাশা করেছি।’
শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা জুলাই গণহত্যায় জড়িত উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু বিচার করে নজির সৃষ্টি করতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অন্য সমন্বয়কদের গুম করা হয়েছিল, তারপর আমরা যখন গণস্বাস্থ্যে ভর্তি হই সেখানে আমাদের সঙ্গে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া, সেখানে নির্যাতন, আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া, ৪ ও ৫ আগস্টের বর্ণনা আমি দিয়েছি।
’
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি যা কিছু বলেছেন তা এ মামলার প্রেক্ষাপট প্রতিষ্ঠার জন্য, এ মামলার বিষয়বস্তু মেলানোর জন্য আসামিদের কোথায় কী ভূমিকা ছিল বিষয়গুলো তিনি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। সেগুলো এ মামলার প্রমাণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কারণ তিনি ছিলেন আন্দোলনের ফ্রন্ট যোদ্ধা।’
নাহিদের জবানবন্দির মধ্য দিয়েই শেষ হলো মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ। প্রতিটি সাক্ষ্য এ মামলার বিচারের জন্য অকাট্য প্রমাণ বলে জানান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন।