শাখাওয়াত হোসেন শামীম,,
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কাপাইকাপ আলিম মাদ্রাসায় আয়া পদে ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়কের স্ত্রীকে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলার ১২ নং দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়নের কাপাইকাপ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ পরিক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ করছেন নিয়োগ পরিক্ষায় অংশগ্রহনকারীরা। এতে ঐ ইউনিয়নের যুবলীগের আহবায়ক ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুলহাশ মোল্লার স্ত্রীকে আয়া পদে নিয়োগ দেয়ায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে জানায়ায়, সর্বশেষ সরকারি বিধি মোতাবেক কাপাইকাপ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসা, ডাকঘর-নাসিরকোর্ট, উপজেলা-হাজীগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুরের জন্য উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, নিরাপত্তাকর্মী, আয়াসহ প্রতি পদে ০১ (এক) জন করে আবশ্যক চেয়ে গত ১৯ জানুয়ারী একটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ঐ বিজ্ঞপ্তি দেখে ৪ পদে বেশ কয়েকজন প্রার্থী আবেদন করেন।
গত ৪ মার্চ শনিবার কাপাইকাপ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ পক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। নিয়োগ পক্রিয়ায় অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে প্রার্থীগণ মাদ্রাসার সভাপতি ডা. আহছান উল্যাহ ও অধ্যক্ষ মাওলানা সোলাইমানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেন। এতে আয়া পদে প্রার্থী ফাতেমা অভিযোগ করে বলেন, আমি নিয়োগের লিখিত ও ভাইবা পরিক্ষায় ভালো করেও আমাকে নিয়োগ না দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইউনিয়নের যুবলীগের আহবায়ক ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুলহাস মোল্লার স্ত্রীকে নিয়োগ দেয়া হয়।
ফাতেমা আরো বলেন, ইউনিয়নের যুবলীগের আহবায়ক ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুলহাস মোল্লা আমাকে হুমকি ধমকি দিয়েছে, যাতে আমি পরিক্ষায় অংশগ্রহন না করি। এছাড়াও জুলহাস মোল্লা যুবলীগের প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও সভাপতিকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে তার স্ত্রীকে আয়া পদে নিয়োগ দেয়।
অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী প্রার্থী মো. আল আমিন জানান, আমি লিখিত ও ভাইবা পরিক্ষায় পাশ পরেও আমাকে নিয়োগ না দিয়ে দাতা সদস্যের বাড়ী লোককে নিয়োগ দেয়া হয়, এ ছাড়াও আমার কাছে মনে হচ্ছে এ নিয়োগ পরিক্ষাটি শুধুমাত্র লোক দেখানো, তিনারা পূর্বেই অর্থের বিনিময়ে তাদের প্রার্থী চুড়ান্ত করে রেখেছে।
নিরাপত্তাকর্মী প্রার্থী আক্তার হোসেন জানান, নিরাপত্তাকর্মী পদে আমরা ৪ জন পরিক্ষা দিয়েছি, ৪ জনের মধ্যে আমি ভালো পরিক্ষা দিয়েছি, আমার পরিবর্তে যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উক্ত নিয়োগ পরিক্ষায় যারা প্রথম হয়েছে তাদের নিয়োগ না দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সোলাইমান ও মাদ্রাসার সভাপতি ডা. আহসান উল্যাহ’র যোগ সাজশে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে ডিজি প্রতিনিধিকে বলেন, ডিজি প্রতিনিধি নাম্বার সিটে স্বাক্ষর না করে চলে যান। সরেজমিনে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়।
কাপাইকাপ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সোলাইমান জানান, আমি নিয়োগ বোর্ডে ছিলাম, তবে সভাপতির সিদ্ধান্তমতেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টাকা নেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি কোন লেনদেন করিনি। আয়া নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি তো ডিজির প্রতিনিধি ও সভাপতির উপরে কথা বলতে পারিনা, তাই সভাপতির সিদ্ধান্ত মতে নিয়োগ হয়েছে।
কাপাইকাপ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি ডা. আহছান উল্যাহ জানান, আমরা নিয়োগ পক্রিয়াটি সঠিক ভাবেই সম্পন্ন করেছি। আয়া পদে ইউনিয়নের যুবলীগের আহবায়ক ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জুলহাশ মোল্লার স্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছি। জুলহাশ মোল্লার স্ত্রীকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী মিয়া ও উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দিনের সুপারিশে আমরা আয়া পদে নিয়োগ দেই।