শাহরাস্তির রুস্তম আলীর মেয়েকে নিয়ে দুই স্বামীর টানা হেঁছড়ার ঘটনা নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। দুই স্বামীই বলছে তাদের কাছে বিয়ের কাগজপত্র রয়েছে। তাহলে আসল স্বামীকে।
রাস্তায় ওই নারীকে নিয়ে টানাটানির সময় দুই স্বামীসহ আটক করে পুলিশে দেন জনতা। বুধবার বিকালে মহানগরীর লামাবাজারস্থ আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকের পর নারী কাউন্সিলর রেবেকা আক্তার লাকীর কাছে নিয়ে গেলে তিনিও প্রকৃত স্বামী কে তা নিশ্চিত করতে না পারায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
রেবেকা বলেন, দুই স্বামী-ই বলছেন বিয়ের প্রমাণ রয়েছে। তাই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। শাহপরান থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমি একটু বাইরে আছি। থানায় ফিরলে বিস্তারিত জানাব।
তবে আটক তিনজনের বক্তব্য শুনে সমাধানের সুযোগ নেই। কারণ আটক দুই পুরুষই নিজেদের প্রকৃত স্বামী দাবি করছেন। তাদের নাকি বিয়ের কাগজপত্রও আছে। কাগজ ছাড়া বিষয়টির সমাধান দুরূহ। এ নিয়ে বড় বিপাকে পুলিশ।
আটক তিনজনের বক্তব্য থেকে জানা গেছে, আটক মহিলা কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার শাহজাহান মিয়ার মেয়ে আইরিন সুলতানা (৩৫)। ১৯ বছর আগে তার বিয়ে হয় চাঁদপুর জেলার শাহারাস্তি থানার বাদিয়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে মো. খোকন মিয়ার সঙ্গে। তাদের সংসারে চার সন্তানের জন্ম হয়। একপর্যায়ে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সিলেটে আসেন। পরে ২০১৯ সালের শুরুতে চলে যান মালদ্বীপ।
এরপরই সুলতানা বিভিন্নজনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। একপর্যায়ে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার কাউয়াদি গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে কবির হোসেনের (৩৬) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে সুলতানার। ১৫ মাস আগে সিলেটে কোর্ট ম্যারেজও করেন কবির এবং সুলতানা। চার সন্তান ও স্বামী খোকনের সংসার ছেড়ে যান কবিরের ঘরে। কবিরের সঙ্গে বিয়ের সময় সুলতানা নিজেকে তালাকপ্রাপ্তা উল্লেখ করেন।
এদিকে দেশে ফিরে হন্যে হয়ে সুলতানাকে খুঁজতে থাকেন খোকন। বুধবার বিকালে লামাবাজারস্থ আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনের রাস্তায় সুলতানা ও কবিরকে পেয়ে পাকড়াও করেন খোকন। এ সময় তাদের মাঝে বাগবিতণ্ডা এবং হাতাহাতি হয়।
পরে খোকন ও তার সঙ্গীরা দুজনকে ধরে শাহজালাল উপশহরের তেররতনে নিয়ে যান। সেখানে একটি বাসায় খোকন সন্তান ও তার বোনকে নিয়ে থাকেন। পরে খোকন বিষয়টি নিয়ে সিসিকের ২২, ২৩ ও ২৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেবেকা আক্তার লাকীর দ্বারস্থ হন।
আটক কবির হোসেন আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতাল রেস্টুরেন্টের কর্মচারী। বিয়ের পর সুলতানাকেও তিনি এই হাসপাতালে আয়ার চাকরি পাইয়ে দেন।