ঢাকা 2:49 am, Saturday, 28 June 2025

১৫ মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:07:09 am, Monday, 20 November 2023
  • 8 Time View

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে তিনি মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মুক্তির পর খাদিজা কাশিমপুর কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে, পুরোটাই অন্যায়। বিনা দোষে আমি প্রায় ১৫ মাস জেল খাটলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু আর এখন বলতে চাই না। বলার মতো মন-মানসিকতা আমার নেই।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

খাদিজাতুল কুবরা আজ সকালে বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে খুব বেশি ভালো ছিলাম না। নামাজ পড়ে, রোজা রেখে আর লেখাপড়া করে সময় কাটিয়েছি। আজকে আমার স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা। তাই এখান থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব।’

আদালত ও আইনজীবী সূত্রের তথ্যমতে, বিচারিক আদালতে দুবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়।

অন্যদিকে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে খাদিজা আবেদন করেন, যা রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের সঙ্গে গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আপিল বিভাগ আবেদন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। ফলে এই সময় পর্যন্ত খাদিজার জামিন স্থগিত থাকে। আগের ধারাবাহিকতায় খাদিজার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম শুনানি করেন। খাদিজার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অপরটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদীই পুলিশ।

গত বছরের মে মাসে দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত বছরের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ। তখন থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। আর দেলোয়ার বিদেশে পলাতক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কচুয়ায় বৃদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় একজন গ্রেফতার, মোবাইল উদ্ধার

১৫ মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা

Update Time : 10:07:09 am, Monday, 20 November 2023

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে তিনি মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মুক্তির পর খাদিজা কাশিমপুর কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে, পুরোটাই অন্যায়। বিনা দোষে আমি প্রায় ১৫ মাস জেল খাটলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু আর এখন বলতে চাই না। বলার মতো মন-মানসিকতা আমার নেই।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

খাদিজাতুল কুবরা আজ সকালে বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে খুব বেশি ভালো ছিলাম না। নামাজ পড়ে, রোজা রেখে আর লেখাপড়া করে সময় কাটিয়েছি। আজকে আমার স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা। তাই এখান থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব।’

আদালত ও আইনজীবী সূত্রের তথ্যমতে, বিচারিক আদালতে দুবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়।

অন্যদিকে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে খাদিজা আবেদন করেন, যা রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের সঙ্গে গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আপিল বিভাগ আবেদন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। ফলে এই সময় পর্যন্ত খাদিজার জামিন স্থগিত থাকে। আগের ধারাবাহিকতায় খাদিজার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম শুনানি করেন। খাদিজার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অপরটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদীই পুলিশ।

গত বছরের মে মাসে দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত বছরের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ। তখন থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। আর দেলোয়ার বিদেশে পলাতক।