ঢাকা 10:51 pm, Wednesday, 23 July 2025

খালেদা জিয়া তার মা, তার জন্য তিনি জীবন দিতেও প্রস্তুত- হাইকোর্টকে হাবিব

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:34:39 pm, Wednesday, 22 November 2023
  • 14 Time View

ছবি-ত্রিনদী

আদালত অবমাননার দায়ে ৫ মাসের কারাদণ্ড হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের। এই দণ্ডাদেশের আগে এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে আদালতকে তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া তার মা। তার জন্য তিনি জীবন দিতেও প্রস্তুত। ১০০ বছরের সাজা হলেও তিনি ভয় পান না।

বুধবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লার বেঞ্চে শুনানিকালে তিনি একথা বলেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় তার ব্যাখ্যা দিতে হাবিবুর রহমান হাবিবকে তলব করা হয়।

আদালতে হাবিবের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো ফজলুর রহমান, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজলসহ অর্ধশত আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসুদ রোমী।

আদালতে হাবিবুর রহমান হাবিবের বক্তব্য সংবলিত একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো পুরোটা দেখানো হয়। এরপর এক জনসভায় দেওয়া হাবিবের বক্তব্যের অংশ বিশেষ দেখানো হয়। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবী ও সাংবাদিক সবাই দেখেন। এরপর আদালত হাবিবের কাছে জানতে চান- আপনি কি শপথ করে বলতে পারবেন এসব কথা বলেছেন। জবাবে হাবিব বলেন, ‘হুম আমি শপথ নিয়ে বলছি, এসব কথা আমি বলেছি।

এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমার মমতাময়ী মা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আমার লিভার, কিডনি, এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। আমার ১০০ বছরের সাজা হলেও আমি ভয় পাই না। আমার চার বছরের সাজা হয়েছে, আমি সবসময় মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেছি। আমি দেশের জন্য রাজনীতি করেছি, সাদামাটা জীবন-যাপন করেছি। কখনও গাড়ি পোড়াইনি তারপরও সাজা হয়েছে। গাড়ির নেমপ্লেট ছিল না, নম্বরও ছিল না। তারপরও গাড়ি পোড়ানোর মামলায় চার বছরের সাজা দিয়েছেন নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের অবস্থা গিয়ে দেখে আসেন। আমি বাসায় ছিলাম, আপনারা আমাকে ডেকেছেন, এসেছি।আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে, আপনারা আমার কথাগুলো শুনেছেন কৃতজ্ঞ থাকব।’

এ সময় হাবিব গত ৬ নভেম্বর আদালতে না আসার বিষয়ে বলেন, ‘আমি এর আগে আদালতে আসিনি কারণ হলো আদালতের প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাস কম। তাই মনে করেছি, আপনারা আমাকে ধরে নিয়ে আসেন যা ইচ্ছা তাই করেন। আমার কথায় যদি আপনাদের মনে কোনো কষ্ট লেগে থাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

এর আগে গত ২০ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। রাজধানীর পল্লবী থানার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করার কথা জানায় র‌্যাব। নির্দেশ অমান্য করে আদালতে হাজির না হওয়ায় হাবিবকে গ্রেফতার করা হয়।

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিব হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। যিনি নিম্ন আদালতের বিচারক থাকার সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন।

গত ১৫ অক্টোবর বিচারপতিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠার পর তার ব্যাখ্যা দিতে হাবিবুর রহমান হাবিবকে তলব করেন হাইকোর্ট। গত ৬ নভেম্বর তাকে হাজির হতে বলা হয়। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন; কিন্তু তলবের পরও আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আদালত তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

খালেদা জিয়া তার মা, তার জন্য তিনি জীবন দিতেও প্রস্তুত- হাইকোর্টকে হাবিব

Update Time : 07:34:39 pm, Wednesday, 22 November 2023

আদালত অবমাননার দায়ে ৫ মাসের কারাদণ্ড হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের। এই দণ্ডাদেশের আগে এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে আদালতকে তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া তার মা। তার জন্য তিনি জীবন দিতেও প্রস্তুত। ১০০ বছরের সাজা হলেও তিনি ভয় পান না।

বুধবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লার বেঞ্চে শুনানিকালে তিনি একথা বলেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় তার ব্যাখ্যা দিতে হাবিবুর রহমান হাবিবকে তলব করা হয়।

আদালতে হাবিবের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো ফজলুর রহমান, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজলসহ অর্ধশত আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসুদ রোমী।

আদালতে হাবিবুর রহমান হাবিবের বক্তব্য সংবলিত একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো পুরোটা দেখানো হয়। এরপর এক জনসভায় দেওয়া হাবিবের বক্তব্যের অংশ বিশেষ দেখানো হয়। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবী ও সাংবাদিক সবাই দেখেন। এরপর আদালত হাবিবের কাছে জানতে চান- আপনি কি শপথ করে বলতে পারবেন এসব কথা বলেছেন। জবাবে হাবিব বলেন, ‘হুম আমি শপথ নিয়ে বলছি, এসব কথা আমি বলেছি।

এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমার মমতাময়ী মা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আমার লিভার, কিডনি, এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। আমার ১০০ বছরের সাজা হলেও আমি ভয় পাই না। আমার চার বছরের সাজা হয়েছে, আমি সবসময় মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেছি। আমি দেশের জন্য রাজনীতি করেছি, সাদামাটা জীবন-যাপন করেছি। কখনও গাড়ি পোড়াইনি তারপরও সাজা হয়েছে। গাড়ির নেমপ্লেট ছিল না, নম্বরও ছিল না। তারপরও গাড়ি পোড়ানোর মামলায় চার বছরের সাজা দিয়েছেন নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের অবস্থা গিয়ে দেখে আসেন। আমি বাসায় ছিলাম, আপনারা আমাকে ডেকেছেন, এসেছি।আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে, আপনারা আমার কথাগুলো শুনেছেন কৃতজ্ঞ থাকব।’

এ সময় হাবিব গত ৬ নভেম্বর আদালতে না আসার বিষয়ে বলেন, ‘আমি এর আগে আদালতে আসিনি কারণ হলো আদালতের প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাস কম। তাই মনে করেছি, আপনারা আমাকে ধরে নিয়ে আসেন যা ইচ্ছা তাই করেন। আমার কথায় যদি আপনাদের মনে কোনো কষ্ট লেগে থাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

এর আগে গত ২০ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। রাজধানীর পল্লবী থানার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করার কথা জানায় র‌্যাব। নির্দেশ অমান্য করে আদালতে হাজির না হওয়ায় হাবিবকে গ্রেফতার করা হয়।

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিব হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। যিনি নিম্ন আদালতের বিচারক থাকার সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন।

গত ১৫ অক্টোবর বিচারপতিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠার পর তার ব্যাখ্যা দিতে হাবিবুর রহমান হাবিবকে তলব করেন হাইকোর্ট। গত ৬ নভেম্বর তাকে হাজির হতে বলা হয়। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন; কিন্তু তলবের পরও আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আদালত তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়।