মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
হাজীগঞ্জে দুই দিনব্যাপী জমজমাট পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাজীগঞ্জ ফোরামের আয়োজনে বিজনেস পার্ক ট্রেড সেন্টারের শুক্রবার ও শনিবার (২৬ ও ২৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত মেলায় ২০জন নারী উদ্যোক্তা শতরকমের পিঠাপুলি, কেক ও পায়েস নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত উৎসবে হাজার হাজার ক্রেতা ও দর্শনার্থীর পদচারনায় গ্রামীণ সংস্কৃতির এ উৎসব মুখরিত হয়ে ওঠে।
পিঠা উৎসবের শেষ দিন শনিবার রাতে ফুড লাভার্স এন্ড পার্টি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান মানিক। এদিন বিকালে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ্ত রায়।
উৎসবের প্রথম দিন শুক্রবার বেলা তিনটায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের পক্ষে দুই দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পঙ্কজ কুমার দে। হাজীগঞ্জ ফোরামের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শাহরিয়ার আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে, হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু কুমার দত্ত মিঠু উপস্থিত ছিলেন।
হাজীগঞ্জ ফোরামের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পিঠা উৎসব কমিটির আহবায়ক সাংবাদিক মহিউদ্দিন আল আজাদ ও সদস্য সচিব এস.এম চিশতীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সুনির্মল দেউরী, হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক গোপি নাথ।
পিঠা উৎসব কমিটির সদস্য জাহিদ হাসানের উপস্থাপনায় দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ উৎসব চলে। এতে হাজীগঞ্জ ফোরামের সার্বিক সহযোগিতায় ২০ জন নারী উদ্যোক্তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্টল দেন এবং তারা প্রায় শতাধিক রকমের পিঠাপুলি ও কেক, পায়েস, হাঁসের মাংস ও চালের রুটি নিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, পিঠা উৎসব ঘুরে দেখা গেছে, পিঠার স্টলগুলো বেশ জমে উঠেছিল। শিশুদের নিয়ে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্য, বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে অনেকেই এসেছিলেন গ্রামবাংলার পিঠার স্বাদ নিতে। বেশিরভাগ মানুষেরই আগ্রহের পিঠা ছিল মিষ্টি জাতীয়। তবে ঝাল-টক পিঠা এবং কেক, পায়েসেও ছিল না অরুচি। উৎসব প্রাঙ্গণের উন্মুক্ত মঞ্চে বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নৃত্য, গান, আবৃত্তিসহ বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
পিঠাপুলির মধ্যে ছিলো, নকশি পিঠা, কদম পুলি, ডিম সুন্দরী, ভাপে রোল, বল পিঠা, ইলিশ পিঠা, আস্কে পিঠা, নারকেল পুর, তিলের পিঠা, লাচ্ছা পিঠা, মুগ পাকন, তিলে ডোনাট, তালের কোন ছাইন্না পিঠা, ডিম চপ, লিচু পিঠা, ফুড কাস্টার, মেমো, শিউলী ফুলের পিঠা, তালের বরা, শাহি পায়েস, ঝাড় কেক, পাটি সাপটা, কমলা পিঠা, চিংড়ি মাছের পিঠা, নারকেল পুলি ডিম পুলি, নারকেল পাক্কন, সবজি পাকড়া, সুজির পিঠা, ফুল পিঠা, চিতল পিঠার পায়েস, তিল পিঠা, কাউনের চালের মিস্টান্ন।
এছাড়াও ছিলো, ক্ষিরের সন্দেস, ভাপ পুলি, চিড়া মোয়া, নারকেল বাটা, কুচার সন্দেশ, ক্ষীরের পাটি সাপটা, ভাজা পুলি, সেমাই পিঠা, ঝালের নাড়ু, ডিমের পিঠা, পুডিং, ক্ষীর পাটি, খেজুর রসের পায়েস, তিল পুলি পিঠা, চিকন রোল, ডিমের কেক, কাপ কেক, জেনাট কেক, রেড ভেলবেট, অরেঞ্জ কেক, মিনি কেক, বেন্টু কেক, জার কেক, মিনি কেক, মালাই কেক, ক্রীম কুনফো, নবাবি সেমাই, পোয়া পিঠা, শিম ফুল পিঠা, গোটা পিঠা, এলোজেলে পিঠা, ছিড়ার মোয়া, নাড়ু, চন্দ্র কাটা পিঠা, হাসের মাংস, চালের রুটি ও পায়েস বাহারি সব পিঠা।