হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. মোহাসীন ফারুক বাদলকে নাজেহাল করার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার বিকালে খাটরা-বিলওয়াই থেকে মিছিলটি বের হয়ে ধেররা এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
এরপর ধেররা বাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশে এলাকার কয়েক শতাধিক নারী ও পুরুষ অংশ নেন।
সমাবেশে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন, মো. সালাউদ্দিন ফারুক মামুন। তিনি ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, এই ওয়ার্ড থেকে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে কাউন্সিলর বাদল তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতির পর বিএনপি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। এরপর ১৯৯৯ সালে সবচে কম বয়সে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং প্যানেল মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলেও তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি রাজনীতিবীদ ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনপ্রিয়তার সাথে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, কাউন্সিলর বাদলের এই জনপ্রিয়তা অনেকের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, তাকে হেয়-প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে নাজেহাল করা হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এলাকাবাসীর পক্ষে সর্বস্তরের জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান।
এদিকে একই দিন বিকালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সাবেক কাউন্সিলর মোহাসীন ফারুক বাদল। হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে সাবেক কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাঁর রাজনৈতিক, পারিবারিক ও জনপ্রতিনিধির বিভিন্ন পজেটিভ দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, এলাকার এক ভাড়াটিয়ার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর ওই মেয়ের পূর্বতন (সাবেক) প্রেমিক দাবি করে এক যুবক এলাকার কিছু লোকজন নিয়ে তাদের বাসার সামনে জড়ো হয় এবং এলাকার কিছু লোকজন তার পক্ষ নিয়ে একটা অনভ্রিপ্রভেত ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে। বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি ঘটনাস্থলে যাই।
তিনি বলেন, বিষয়টি আমি বুঝতে পারি নাই যে, এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমাকে ঢেকে নিয়ে কতিপয় সাংবাদিক নামধারীসহ তিন/চারজন লোক নাজেহাল করার অপচেষ্টা করে। তারা ভিডিও ধারণ করে, তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার তরে আমার ওয়ার্ডবাসীকে বিভ্রান্ত এবং আমার দীর্ঘ সময়ে রাজনীতি ও জনপ্রিয়তাকে ব্যহৃত করার চেষ্টা করে।
ওই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কাউন্সিলর মোহাসীন ফারুক বাদল বলেন, ঘটনার সম্পৃক্ততা ও সত্যতা যাচাই-বাছাই না করে এবং অন্যের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে যারা বিষয়টি প্রচার করেছেন, আমি বলবো তারা তাদের দায়িত্ববোধ ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দেন নাই। যা অপপ্রচার ও পরনিন্দা। যা ইসলামে হারাম।
তিনি সংবাদকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আশাকরি আপনারা ঘটনার সত্যতা উপস্থাপন করে আমার ওয়ার্ডবাসীসহ জনমানুষের উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও বিভ্রান্ত দূর করবেন। যাতে করে অপ-প্রচারকারীদের স্বার্থের ব্যঘাত ঘটে। পাশাপাশি স্বার্থানেষী মহলের কারণে আমার তিন দশকের গড়ে তোলা এই অর্জন, যেনো বিসর্জন না হয়।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৩ মে) রাতে পৌরসভাধীন ৩নং ওয়ার্ড খাটরা-বিলওয়াই এলাকায় পরকীয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলর মোহসীন ফারুক বাদলকে নাজেহাল করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
যার ফলে, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মোহাসীন ফারুক বাদল তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন এবং উল্লেখিত ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার পক্ষে ওই ওয়ার্ডের লোকজন বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধণ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।