ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বামীকে বাবা ডেকেও রেহাই পাননি স্ত্রী

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:০৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ৮০ Time View

চরফ্যাশনে বোরকা পরে ফিল্মি স্টাইলে স্ত্রীকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্বামী ফরহাদ তার বাড়িতে একটি নির্জন ঘরে স্ত্রীকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে নির্যাতন করেন। এ সময় স্বামীকে বাবা ডেকেও রেহাই পাননি স্ত্রী।

পরে ওই নারী কোনোরকম প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেই বাড়ির লোকজন তার পরিবারকে খবর দিলে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বুধবার (৯ জুলাই) উপজেলার দুলারহাট থানার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ফরহাদ ওই এলাকার লিটন সিকদারের ছেলে। স্ত্রী সুমাইয়া চরফ্যাশন পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুল্লাহর মেয়ে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমাইয়ার অভিযোগ, দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সুমাইয়া দেখে তার স্বামী ফরহাদ মাদকাসক্ত এবং বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবন করে তাকে নির্যাতন করত। তিনি একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন স্বামীর সঙ্গে সংসার করবেন না। প্রায় ৮ মাস পর স্বামীর বাড়ি থেকে বাড়িতে চলে আসেন এবং একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেন।

বুধবার সকালে সুমাইয়া কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তার পেছন থেকে একটি সিএনজি এলে তিনি সিএনজিতে উঠেন। তবে তার স্বামী সেই সিএনজিতেই বোরকা পরে নারী সেজে বসেছিলেন। সিএনজিচালক সুমাইয়াকে বলেন পৌর শহর থেকে একটু দূরে তার স্ত্রী অপেক্ষা করছেন। এই বলে সিএনজি একটি অচেনা রাস্তা দিয়ে স্বামী ফরহাদের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে গেলে সুমাইয়া দেখতে পান বোরকা পরিহিত নারীই তার স্বামী। পরে একটি নির্জন ঘরে নিয়ে তাকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ রেখে অমানবিক নির্যাতন করেন।

স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বাবা ডেকেও রেহাই পাননি সুমাইয়া। কোনোরকমে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে ওই এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। সেই বাড়ির লোকজনদের পুরো বিষয়টি বলেন। পরে তারা সুমাইয়ার বাবা-মাকে খবর দিলে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সুমাইয়ার বাবা হাবিবুল্লাহ জানান, জামাতা ফরহাদ মাদকাসক্ত হওয়ায় মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। তবে মেয়েকে তুলে নিয়ে এমন অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জামাতা ফরহাদের উপযুক্ত বিচার চান তিনি।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ফরহাদ আত্মগোপনে চলে যান। তার ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা যায়নি।

দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমকে দেখে আসবে এবং ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল অবরুদ্ধ

স্বামীকে বাবা ডেকেও রেহাই পাননি স্ত্রী

Update Time : ১১:০৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

চরফ্যাশনে বোরকা পরে ফিল্মি স্টাইলে স্ত্রীকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্বামী ফরহাদ তার বাড়িতে একটি নির্জন ঘরে স্ত্রীকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে নির্যাতন করেন। এ সময় স্বামীকে বাবা ডেকেও রেহাই পাননি স্ত্রী।

পরে ওই নারী কোনোরকম প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেই বাড়ির লোকজন তার পরিবারকে খবর দিলে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বুধবার (৯ জুলাই) উপজেলার দুলারহাট থানার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ফরহাদ ওই এলাকার লিটন সিকদারের ছেলে। স্ত্রী সুমাইয়া চরফ্যাশন পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুল্লাহর মেয়ে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমাইয়ার অভিযোগ, দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সুমাইয়া দেখে তার স্বামী ফরহাদ মাদকাসক্ত এবং বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবন করে তাকে নির্যাতন করত। তিনি একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন স্বামীর সঙ্গে সংসার করবেন না। প্রায় ৮ মাস পর স্বামীর বাড়ি থেকে বাড়িতে চলে আসেন এবং একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেন।

বুধবার সকালে সুমাইয়া কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তার পেছন থেকে একটি সিএনজি এলে তিনি সিএনজিতে উঠেন। তবে তার স্বামী সেই সিএনজিতেই বোরকা পরে নারী সেজে বসেছিলেন। সিএনজিচালক সুমাইয়াকে বলেন পৌর শহর থেকে একটু দূরে তার স্ত্রী অপেক্ষা করছেন। এই বলে সিএনজি একটি অচেনা রাস্তা দিয়ে স্বামী ফরহাদের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে গেলে সুমাইয়া দেখতে পান বোরকা পরিহিত নারীই তার স্বামী। পরে একটি নির্জন ঘরে নিয়ে তাকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ রেখে অমানবিক নির্যাতন করেন।

স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বাবা ডেকেও রেহাই পাননি সুমাইয়া। কোনোরকমে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে ওই এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। সেই বাড়ির লোকজনদের পুরো বিষয়টি বলেন। পরে তারা সুমাইয়ার বাবা-মাকে খবর দিলে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সুমাইয়ার বাবা হাবিবুল্লাহ জানান, জামাতা ফরহাদ মাদকাসক্ত হওয়ায় মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। তবে মেয়েকে তুলে নিয়ে এমন অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জামাতা ফরহাদের উপযুক্ত বিচার চান তিনি।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ফরহাদ আত্মগোপনে চলে যান। তার ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা যায়নি।

দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমকে দেখে আসবে এবং ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।