ঢাকা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুর মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরের মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে স্বাভাবিকের চাইতে পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৩ফুট। এতে করে ওইসব অঞ্চলের সড়ক, পুকুর ও বসত বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়, জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমা ৪ সেন্টিমিটারের ওপরে পয়েন্ট ২১ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনার পানির উচ্চতা বেড়েছে। এ সময় চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী উপকূলীয় এলাকায় পানি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও শহর রক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় নদীর পানি সড়ক সমান অবস্থায় রয়েছে।

শহরের পুরান বাজার রনাগোয়াল এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ভুলু জানান, গতকাল পানি কিছুটা কম ছিলো। আজ বিকেল থেকে বাতাসের তীব্রতার সাথে নদীর ঢেউ বেড়েছে। এসময় আমাদের দোকানে পানি উঠে যায়। পানির কারণে দোকানের মালপত্র সরিয়ে নিয়েছি।

সদর উপজেরার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ জানান, ফেরিঘাট এলাকায় পানি রাস্তা সমান। আশপাশের নীচু সড়কে পানি উঠেছে।

পাশবর্তী চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী জানান, সেচ প্রকল্পের বাইরে সব বাড়ি, রাস্তা ও পুকুরে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। তার নিজের পুকুরে মাছ চাষ করা হয়েছে। ওই পুকুরের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আজকে বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই পানি বেড়েছে। এতে মাছ চাষীদের বেশি ক্ষতি হবে এবং পাকা সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, সেচ প্রকল্পের বাইরের মাছ চাষীদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে মাছ সংরক্ষণের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।

হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, চলতি মাসের মিটিংয়ে মৎস্য চাষীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে ২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে। এরপরেও উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জেলেদের সতর্ক করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা শাহ্ মো. শোয়েব বলেন, নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চাইতে ১ থেকে ৩ফুট বৃদ্ধি পাবে এই সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল হক বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বিষয়টি আমরা অবগত। আমাদের কর্মকর্তারাও সতর্ক রয়েছেন। তবে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়লেও বেশি সময় স্থায়ী হয় না। আজকে বিকেলে জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমা ৪ সেন্টিমিটারের অধিক পয়েন্ট ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কচুয়ায় এসএসসি ২০০০ ব্যাচ ফ্রেন্ডস ক্লাবের বন্ধুত্বদের মিলন মেলা

চাঁদপুর মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত

Update Time : ১১:৫৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরের মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে স্বাভাবিকের চাইতে পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৩ফুট। এতে করে ওইসব অঞ্চলের সড়ক, পুকুর ও বসত বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়, জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমা ৪ সেন্টিমিটারের ওপরে পয়েন্ট ২১ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনার পানির উচ্চতা বেড়েছে। এ সময় চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী উপকূলীয় এলাকায় পানি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও শহর রক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় নদীর পানি সড়ক সমান অবস্থায় রয়েছে।

শহরের পুরান বাজার রনাগোয়াল এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ভুলু জানান, গতকাল পানি কিছুটা কম ছিলো। আজ বিকেল থেকে বাতাসের তীব্রতার সাথে নদীর ঢেউ বেড়েছে। এসময় আমাদের দোকানে পানি উঠে যায়। পানির কারণে দোকানের মালপত্র সরিয়ে নিয়েছি।

সদর উপজেরার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ জানান, ফেরিঘাট এলাকায় পানি রাস্তা সমান। আশপাশের নীচু সড়কে পানি উঠেছে।

পাশবর্তী চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী জানান, সেচ প্রকল্পের বাইরে সব বাড়ি, রাস্তা ও পুকুরে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। তার নিজের পুকুরে মাছ চাষ করা হয়েছে। ওই পুকুরের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আজকে বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই পানি বেড়েছে। এতে মাছ চাষীদের বেশি ক্ষতি হবে এবং পাকা সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, সেচ প্রকল্পের বাইরের মাছ চাষীদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে মাছ সংরক্ষণের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।

হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, চলতি মাসের মিটিংয়ে মৎস্য চাষীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে ২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে। এরপরেও উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জেলেদের সতর্ক করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা শাহ্ মো. শোয়েব বলেন, নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চাইতে ১ থেকে ৩ফুট বৃদ্ধি পাবে এই সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল হক বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বিষয়টি আমরা অবগত। আমাদের কর্মকর্তারাও সতর্ক রয়েছেন। তবে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়লেও বেশি সময় স্থায়ী হয় না। আজকে বিকেলে জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমা ৪ সেন্টিমিটারের অধিক পয়েন্ট ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।