ঢাকা ১০:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেনে নিন, বাইত্যার শাকের যত গুন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৬১ Time View

ত্রিনদী অনলাইন ডেস্ক :

গ্রামবাংলার প্রতিটি গম ক্ষেত, মরিচ ক্ষেত এবং বেগুন ক্ষেতে প্রচুর পরিমানে বথুয়া শাক পাওয়া যেত।বথুয়া শাক মূলত শীতকালে পাওয়া যায়। এটি কেউ চাষ করে না। জমিতে আগাছার মত আপনা-আপনি জন্ম নেয় এ শাক।

কিন্তু এখন আর চোখে পড়ে না সেই বথুয়া শাক। বেথুয়া, বথুয়া শাক, বাইথ্যা শাক, বাইত্যা, বাইত্তা, বৌতা, ভাত্তা, বেথে শাক, ভাইত্যা শাক, ভেতে শাক প্রভৃতি স্থানীয় নামে পরিচিত। উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Chenopodium album, Goosefoot and fat-hen বা Lamb’s quarters বলে ইংরেজিতে।

এ শাকের গড় উচ্চতা ২-৩ ফুট। এটি বিরুত্‍ জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছের পাতার রং ফ্যাকাসে সবুজ। কাণ্ডে উঁচু শিড়া ও বেগুনি রেখা দেখা যায়। পাতার উপর মোমের প্রলেপ থাকায় জল ধরে না। পাতার নিচেও সাদাটে আস্তরণ থাকে। কাণ্ডে উঁচু শিরা ও বেগুনি রেখা দেখা যায়। চৈত্র-বৈশাখে এদের বীজ মাটিতে ঝরে পড়ে। গাছে প্রচুর বীজ হয়।

বথুয়া বা বেথো শাক গ্রাম-বাংলার খুব পরিচিত একটি শাক। প্রতিটি মানুষের কাছে খুবই পরিচিত শাক এটি। খেতেও বেশ মজাদার। এটি কেউ চাষ করে না। জমিতে আগাছার মত আপ-আপনি জন্ম নেয় এ শাক। বথুয়া আগাছা হিসেবে পরিচিত হলেও খুবই পুষ্টিসমৃদ্ধ শীতকালীন সুস্বাদু শাক।

এ শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ, ফসফরাস ও জিংক এবং গুরুত্বপূর্ণ আটটি অ্যামাইনো এসিড থাকে। বথুয়া শাকে থাকা পটাশিয়াম, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হজম শক্তি বাড়ায়, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে, কনজাংটিভাইটিস নিরাময়ে সাহায্য করে।

কিডনিতে পাথর হলে বথুয়া শাকের জুস খুব উপকার করে।এতে কিডনিতে থাকলে পাথর গলতে শুরু করে। লিভারের সমস্যা, পিত্ত, মলাশয়ের সমস্যা দূর করে। মুখে ঘা হলে বথুয়া শাক চিবিয়ে খেলে বা রান্না করে খেলে ঘা সেড়ে যায়।

বথুয়া শাকে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। একই সাথে শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়। এই শাক রক্ত পরিশোধক হিসেবেও কাজ করে।

গৃহিনী নুরুন্নাহার বলেন,আমাদের সময়ে প্রচুর পরিমানে বথুয়া শাক পাওয়া যেত। খুব মজা করে খাইতাম আমরা। কিন্তু এখন আর চোখে দেখিনা এই বথুয়া শাক।

একজন কৃষি কর্মকর্তা বলেন, অবাধে ফসলের জমিতে কিটনাশক ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে শীতকালীন এই বথুয়া শাক।চাষের মাধ্যমে এখন বিলুপ্ত হওয়া এই শাকের আবাদ করা যেতে পারে। অনেক এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃষক বথুয়া শাকের চাষ করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল অবরুদ্ধ

জেনে নিন, বাইত্যার শাকের যত গুন

Update Time : ০৬:২১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩

ত্রিনদী অনলাইন ডেস্ক :

গ্রামবাংলার প্রতিটি গম ক্ষেত, মরিচ ক্ষেত এবং বেগুন ক্ষেতে প্রচুর পরিমানে বথুয়া শাক পাওয়া যেত।বথুয়া শাক মূলত শীতকালে পাওয়া যায়। এটি কেউ চাষ করে না। জমিতে আগাছার মত আপনা-আপনি জন্ম নেয় এ শাক।

কিন্তু এখন আর চোখে পড়ে না সেই বথুয়া শাক। বেথুয়া, বথুয়া শাক, বাইথ্যা শাক, বাইত্যা, বাইত্তা, বৌতা, ভাত্তা, বেথে শাক, ভাইত্যা শাক, ভেতে শাক প্রভৃতি স্থানীয় নামে পরিচিত। উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Chenopodium album, Goosefoot and fat-hen বা Lamb’s quarters বলে ইংরেজিতে।

এ শাকের গড় উচ্চতা ২-৩ ফুট। এটি বিরুত্‍ জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছের পাতার রং ফ্যাকাসে সবুজ। কাণ্ডে উঁচু শিড়া ও বেগুনি রেখা দেখা যায়। পাতার উপর মোমের প্রলেপ থাকায় জল ধরে না। পাতার নিচেও সাদাটে আস্তরণ থাকে। কাণ্ডে উঁচু শিরা ও বেগুনি রেখা দেখা যায়। চৈত্র-বৈশাখে এদের বীজ মাটিতে ঝরে পড়ে। গাছে প্রচুর বীজ হয়।

বথুয়া বা বেথো শাক গ্রাম-বাংলার খুব পরিচিত একটি শাক। প্রতিটি মানুষের কাছে খুবই পরিচিত শাক এটি। খেতেও বেশ মজাদার। এটি কেউ চাষ করে না। জমিতে আগাছার মত আপ-আপনি জন্ম নেয় এ শাক। বথুয়া আগাছা হিসেবে পরিচিত হলেও খুবই পুষ্টিসমৃদ্ধ শীতকালীন সুস্বাদু শাক।

এ শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ, ফসফরাস ও জিংক এবং গুরুত্বপূর্ণ আটটি অ্যামাইনো এসিড থাকে। বথুয়া শাকে থাকা পটাশিয়াম, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হজম শক্তি বাড়ায়, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে, কনজাংটিভাইটিস নিরাময়ে সাহায্য করে।

কিডনিতে পাথর হলে বথুয়া শাকের জুস খুব উপকার করে।এতে কিডনিতে থাকলে পাথর গলতে শুরু করে। লিভারের সমস্যা, পিত্ত, মলাশয়ের সমস্যা দূর করে। মুখে ঘা হলে বথুয়া শাক চিবিয়ে খেলে বা রান্না করে খেলে ঘা সেড়ে যায়।

বথুয়া শাকে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। একই সাথে শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়। এই শাক রক্ত পরিশোধক হিসেবেও কাজ করে।

গৃহিনী নুরুন্নাহার বলেন,আমাদের সময়ে প্রচুর পরিমানে বথুয়া শাক পাওয়া যেত। খুব মজা করে খাইতাম আমরা। কিন্তু এখন আর চোখে দেখিনা এই বথুয়া শাক।

একজন কৃষি কর্মকর্তা বলেন, অবাধে ফসলের জমিতে কিটনাশক ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে শীতকালীন এই বথুয়া শাক।চাষের মাধ্যমে এখন বিলুপ্ত হওয়া এই শাকের আবাদ করা যেতে পারে। অনেক এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃষক বথুয়া শাকের চাষ করছেন।