শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, দেশের সাংবাদিকদের কল্যাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কাজ করেছেন। বর্তমান তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট করে দিয়েছেন। দেশের কল্যাণমূলক কাজের জন্য শেখ হাসিনা সরকাররের ধারবাহিকতা দরকার। দেশের উল্লেখযোগ্য ও বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বর্তমান সরকার করেছেন। শেখ হাসিনা আমাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়ন করেছেন। পরবর্তীতে উন্নয়নের মধ্যে মেঘা প্রকল্প হবে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে প্রেসক্লাব আয়োজিত সাংবাদিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের কারণে আমরা উন্নত জীবন যাপন করতে পারছি। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আরো উন্নত দেশ গড়ার জন্য শেখ হাসিনা সরকার প্রয়োজন। সামনে যে নির্বাচন সে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুস্থ্য করার জন্য সাংবিধানিক আইন অনুসরণ করছে সরকার। বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে দেশের ৭০ভাগ মানুষের আস্থা শেখ হাসিনার ওপর। এর কারণ হাচ্ছে এ সরকার জনগণের নিকট যে প্রতিশ্রুদি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির বেশীও কাজ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে আগের অনেক জনপ্রতিনিধির বাড়ীর সামনের উন্নয়ন কাজগুলোও করে দিতে হয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা যদি সেবা দিয়ে থাকি, তাহলে জনগণ আমাদেরকে আবারও সুযোগ করে দিবে। আমরা বিশ^াস করি আবারও নৌকার বিজয় হবে। আর সাংবাদিক হিসেবে আপনারা অতীতের ন্যয় সব সময় আমাদের ভাল কাজে সহযোগিতা করবেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকদের ইতিহাস অনেক পুরোন এবং সমৃদ্ধ। এখান থেকে প্রকাশিত অনেকগুলো পত্রিকা শুরু থেকে তাদের মান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তবে অনেকে পত্রিকায় চটকদার হেড লাইন ব্যবহার করলেও ভিতরে তথ্যবহুল কিছুই পাওয়া যায় না। সাংবাদিকতায় বস্তুুনিষ্ঠতা এবং নির্মোহতা অনুসরণ করবেন। আমরা যারা রাজনীতি করি তারা অনেক সময় কারণে হেডলাইন হয়ে যাই। কিন্তু যখন অকারণে হেডলাইন তখন খুবই দুঃখ পাই। আশা করি আপনারা এই বিষয়ে আরো সচেষ্ট হবেন।
দীপু মনি বলেন, সাংবাদিকতা জগতের সংঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক দিনের। কারণ আমার পিতার হাত ধরেই অনেক বড় মাপের সাংবাদিক তৈরী হয়েছে। চাঁদপুর প্রেসক্লাব আমাকে আজীবন সদস্য করে সম্মানিত করেছেন। তাদের সাথে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। বর্তমানে সাংবাদিকতা অনেক বিস্তৃত। শুধুমাত্র সংবাদপত্রের সীমাবদ্ধতা নেই। অনলাইন ও ইলিকট্রনিক্স মিডিয়া অনেক এগিয়েছে। কিন্তু বিস্তৃত হওয়ার পাশাপাশি সংবাদ উপস্থাপনের মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।
সমাবেশে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৫ আসনের সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। তিনি বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। এই পেশ আমি বেশ কিছু সময় কাজ করেছি। আপনাদের কাজ হবে সঠিক ও নিরপেক্ষ সংবাদ জনগণের সামনে তুলে ধরা। আপনাদেরকে সংবিধান স্বীকৃতি দিল কিনা তা দেখার প্রয়োজন নেই। সবার ওপর হচ্ছে আল্লাহর আইন। সাংবাদিক একটি জাতিকে রক্ষা করে।
তিনি বলেন, আপনাদেরকে বিশ^ ঘটনা প্রবাহের দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ কখন কি হয় বুঝা যাচ্ছে না। মধ্যপ্রাচ্যে এখন যা হচ্ছে, তা ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের চাইতেও খারাপ। অনেকেই এর মেধ্য জড়িয়ে যাচ্ছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
মেজর রফিক বলেন, আন্তর্জাতিক কিছু বিষয় আছে যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। আন্তর্জাতিক কারণে দেশের মানুষ কিছুটা কষ্ট করতে হচ্ছে। তবে এটি নিরসণে শেখ হাসিনা সরকার কাজ করছে। এই সমস্যা থেকে আমেরিকাও রেহাই পাচ্ছে না। বিশে^র চলমান এই পরিস্থিতির কারণে আমাদের সমস্যাগুলো সাংবাদিক হিসেবে জনগণের কাছে সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। পৃথিবীর সবকিছু মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। মূল্য নিয়ন্ত্রণে আমরা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যা। আমাদের ১২-১৩ কোটি জনগণ থাকলে এমন সমস্যা হত না। সাংবাদিক হিসেবে আপনারা মানুষের মাঝে হতাশা সৃষ্টি না করে আলো দেখাতে হবে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এ এইচ এম আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান সুমনের সঞ্চালনায় সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই এর পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন।
এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন-চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বিএম হান্নান, শরীফ চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শান্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাদের পলাশ।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সভাপতি সুভাস চন্দ্র রায় প্রমূখ।
সমাবেশে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত জেলা শহর ও উপজেলার শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।