ঢাকা 8:26 pm, Thursday, 20 November 2025

যাত্রাশিল্পীর মুখে কালি মেখে চুল কেটে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

ছবি-ত্রিনদী

যাত্রাশিল্পীর মুখে কালি মেখে চুল কেটে নির্যাতন করার অপরাধে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতিবেশী একটি পরিবারের সঙ্গে পূর্ববিরোধ ও দাবি করা মোটা অঙ্কের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ময়মনসিংহে নারী যাত্রা নৃত্যশিল্পী রুপাকে চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে হেনস্তার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার। ওই নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী একটি মামলা দায়ের করে।

গ্রেপ্তার আসামির নাম শাহ আলম (৪০)। তিনি নগরীর চরকালীবাড়ি এলাকার মো. রাশেদের ছেলে। তিনি মামলার ৩ নম্বর আসামি।

অন্যদিকে স্থানীয় কয়েকজন দাবি করেছেন, বিভিন্ন যাত্রাপালায় অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করায় রুপার ওপর স্থানীয় অনেকেরই ক্ষোভ রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার রুপা নগরীর বড় কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। তবে তারা নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

মামলার নথি ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে বড় কালীবাড়ি লোকনাথ মন্দির-সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের একটি বস্তিতে বাস্তুহারা সমবায় সমিতির কাছ থেকে ৩ লাখ টাকায় একটি জমি কেনেন রুপা। গত বছর সেখানে আধাপাকা ঘর করতে গেলে সমবায় সমিতির সদস্য শাহ আলম তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। রুপা ১ লাখ টাকা দেওয়ার পর আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রুপার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রুপা আদালতে মামলা করেন।

এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল রুপার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মো. রনি সুলতানকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় রুপা ৯ এপ্রিল মামলা করলে আসামি শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে রুপার করা ভাঙচুরের মামলার তদন্ত করতে পুলিশ গত ১২ নভেম্বর দুপুরে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজন রুপাকে ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করেন। তার চুল কেটে ও মুখে কালি মেখে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে।

এ সময় তার সামনে মাদকদ্রব্য ও টাকা রেখে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে রুপার স্বামী ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানান, যাত্রা নৃত্যশিল্পী হিসেবে রুপা যাত্রাপালায় অশ্লীল নাচ-গান করেন। এটি ভালো চোখে নেননি স্থানীয়রা। রুপা ছাড়াও তার দুই বোন নিপা আক্তার এবং সীমা আক্তারও যাত্রা নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। সব মিলিয়ে রুপার প্রতি এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ ছিলেন।

অন্যদিকে মো. শাহ আলম ও তার স্ত্রী মাহফুজার সঙ্গে রুপার পারিবারিক বিরোধ ছিল। রুপার বাসা দখল, চাঁদা না দেওয়ায় মারধর, সন্তানকে অপহরণের বিষয়ে শাহ আলম ও তার স্ত্রী মাহফুজাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন রুপা। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন মামলার আসামিরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ নভেম্বর রুপাকে হেনস্তা করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব একজন নারী বলেন, শাহ আলম ও মাহফুজার সঙ্গে রুপার মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। এতে আরও লোকজন যুক্ত ছিল। তবে চুল কেটে মুখে কালি দেওয়ার ঘটনা আমি দেখিনি। পুরো ঘটনাটি পুলিশের তদন্ত করা প্রয়োজন।

মামলার প্রধান আসামি মাহফুজা বলেন, রুপার সঙ্গে শুধু আমাদের একার বিরোধ না। তাকে এলাকার কোনো লোকই পছন্দ করে না। রুপার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে সে একের পর এক মামলা দিচ্ছে। রুপাকে চুল কেটে মুখে কালি মেখে তাড়িয়ে দিয়েছেন কি না? এমন প্রশ্নে প্রথমে মাহফুজা বলেন, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

এলাকার একজন চুল কাটার ঘটনা সত্য বলে জানিয়েছেন, মাহফুজাকে এ কথা জানালে তিনি বলেন, এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রুপার সামান্য কয়েকটি চুল কেটেছে। এ ঘটনা বড় করতে রুপা নিজের চুল নিজেই বেশি করে কেটে ফেলে। নিজের মুখে নিজেই কালি দেয়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী যাত্রাশিল্পী রুপা বলেন, আমি বাসার কাজ শুরু করার পর চাঁদা চায়। আমি টাকা না দেওয়ায় আমার বাড়িঘরে হামলা করে। পরে আমি শাহ আলমকে ১ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হই। তারপরও আমার বাড়িঘরে হামলা করে। ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আমি আদালতে মামলা করলে সেই মামলার আসামি শাহ আলম এক মাস জেল খেটে বাড়িতে আসে। এর পর সে লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পরই আমাকে রাস্তায় ধরে নিয়ে গিয়ে বেঁধে চুল কেটে মুখে কালি মেখে দেয়। আমার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে কামড় দেয়। আমি বিচার চাই। সঠিক বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।

রুপা আরও বলেন, আমি যাত্রা করি। আমার দুই বোনও যাত্রা করে। এটিকে টার্গেট করা হয়েছে।

রূপার বোন নিপা আক্তার বলেন, আমরা তিন বোন আগে নিয়মিত যাত্রায় নাচতাম। আমি এখন আর যাত্রায় নাচি না। তবে আমার বোন রুপা ও সীমা যাত্রা করে। যাত্রা করলে কি সমাজে জায়গা পাওয়া যাবে না? আমার বোনের সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে তার উপযুক্ত বিচার চাই।

আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে রুপার স্বামী শহিদুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমার স্ত্রীকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। চুল কেটে মুখে কালি দেওয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

‘সমাজ রুপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ’ ময়মনসিংহের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ তানসেন বলেন, রুপার নাচানাচির অনেক ভিডিও আমি দেখেছি। সে গানের তালে অশ্লীলভাবে নাচানাচি করে। তার নামের আগে শিল্পী শব্দটি মানায় না। তবে একজন নারীকে মারধর করে চুল কেটে মুখে কালি দেওয়াকে সমর্থন করি না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ জামেলী বলেন, দুটি পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে ছিলেন। আদালতের আরেকটি ভাঙচুরের মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ১২ নভেম্বর দুপুরে ফিরে আসে। তখন রুপাকে আটকে মারধর করে চুল কেটে কালি মাখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শুক্রবার ১৪ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে শাহ আলমকে জুবিলী ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

চাঁদপুরে কাচ্চি ডাইনের অন্য রকম এক উদ্বোধন; অতিথি হলেন কোরআনের পাখিরা

যাত্রাশিল্পীর মুখে কালি মেখে চুল কেটে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

Update Time : 08:06:08 pm, Thursday, 20 November 2025

যাত্রাশিল্পীর মুখে কালি মেখে চুল কেটে নির্যাতন করার অপরাধে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতিবেশী একটি পরিবারের সঙ্গে পূর্ববিরোধ ও দাবি করা মোটা অঙ্কের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ময়মনসিংহে নারী যাত্রা নৃত্যশিল্পী রুপাকে চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে হেনস্তার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার। ওই নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী একটি মামলা দায়ের করে।

গ্রেপ্তার আসামির নাম শাহ আলম (৪০)। তিনি নগরীর চরকালীবাড়ি এলাকার মো. রাশেদের ছেলে। তিনি মামলার ৩ নম্বর আসামি।

অন্যদিকে স্থানীয় কয়েকজন দাবি করেছেন, বিভিন্ন যাত্রাপালায় অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করায় রুপার ওপর স্থানীয় অনেকেরই ক্ষোভ রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার রুপা নগরীর বড় কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। তবে তারা নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

মামলার নথি ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে বড় কালীবাড়ি লোকনাথ মন্দির-সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের একটি বস্তিতে বাস্তুহারা সমবায় সমিতির কাছ থেকে ৩ লাখ টাকায় একটি জমি কেনেন রুপা। গত বছর সেখানে আধাপাকা ঘর করতে গেলে সমবায় সমিতির সদস্য শাহ আলম তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। রুপা ১ লাখ টাকা দেওয়ার পর আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রুপার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রুপা আদালতে মামলা করেন।

এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল রুপার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মো. রনি সুলতানকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় রুপা ৯ এপ্রিল মামলা করলে আসামি শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে রুপার করা ভাঙচুরের মামলার তদন্ত করতে পুলিশ গত ১২ নভেম্বর দুপুরে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজন রুপাকে ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করেন। তার চুল কেটে ও মুখে কালি মেখে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে।

এ সময় তার সামনে মাদকদ্রব্য ও টাকা রেখে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে রুপার স্বামী ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানান, যাত্রা নৃত্যশিল্পী হিসেবে রুপা যাত্রাপালায় অশ্লীল নাচ-গান করেন। এটি ভালো চোখে নেননি স্থানীয়রা। রুপা ছাড়াও তার দুই বোন নিপা আক্তার এবং সীমা আক্তারও যাত্রা নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। সব মিলিয়ে রুপার প্রতি এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ ছিলেন।

অন্যদিকে মো. শাহ আলম ও তার স্ত্রী মাহফুজার সঙ্গে রুপার পারিবারিক বিরোধ ছিল। রুপার বাসা দখল, চাঁদা না দেওয়ায় মারধর, সন্তানকে অপহরণের বিষয়ে শাহ আলম ও তার স্ত্রী মাহফুজাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন রুপা। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন মামলার আসামিরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ নভেম্বর রুপাকে হেনস্তা করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব একজন নারী বলেন, শাহ আলম ও মাহফুজার সঙ্গে রুপার মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। এতে আরও লোকজন যুক্ত ছিল। তবে চুল কেটে মুখে কালি দেওয়ার ঘটনা আমি দেখিনি। পুরো ঘটনাটি পুলিশের তদন্ত করা প্রয়োজন।

মামলার প্রধান আসামি মাহফুজা বলেন, রুপার সঙ্গে শুধু আমাদের একার বিরোধ না। তাকে এলাকার কোনো লোকই পছন্দ করে না। রুপার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে সে একের পর এক মামলা দিচ্ছে। রুপাকে চুল কেটে মুখে কালি মেখে তাড়িয়ে দিয়েছেন কি না? এমন প্রশ্নে প্রথমে মাহফুজা বলেন, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

এলাকার একজন চুল কাটার ঘটনা সত্য বলে জানিয়েছেন, মাহফুজাকে এ কথা জানালে তিনি বলেন, এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রুপার সামান্য কয়েকটি চুল কেটেছে। এ ঘটনা বড় করতে রুপা নিজের চুল নিজেই বেশি করে কেটে ফেলে। নিজের মুখে নিজেই কালি দেয়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী যাত্রাশিল্পী রুপা বলেন, আমি বাসার কাজ শুরু করার পর চাঁদা চায়। আমি টাকা না দেওয়ায় আমার বাড়িঘরে হামলা করে। পরে আমি শাহ আলমকে ১ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হই। তারপরও আমার বাড়িঘরে হামলা করে। ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আমি আদালতে মামলা করলে সেই মামলার আসামি শাহ আলম এক মাস জেল খেটে বাড়িতে আসে। এর পর সে লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পরই আমাকে রাস্তায় ধরে নিয়ে গিয়ে বেঁধে চুল কেটে মুখে কালি মেখে দেয়। আমার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে কামড় দেয়। আমি বিচার চাই। সঠিক বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।

রুপা আরও বলেন, আমি যাত্রা করি। আমার দুই বোনও যাত্রা করে। এটিকে টার্গেট করা হয়েছে।

রূপার বোন নিপা আক্তার বলেন, আমরা তিন বোন আগে নিয়মিত যাত্রায় নাচতাম। আমি এখন আর যাত্রায় নাচি না। তবে আমার বোন রুপা ও সীমা যাত্রা করে। যাত্রা করলে কি সমাজে জায়গা পাওয়া যাবে না? আমার বোনের সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে তার উপযুক্ত বিচার চাই।

আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে রুপার স্বামী শহিদুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমার স্ত্রীকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। চুল কেটে মুখে কালি দেওয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

‘সমাজ রুপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ’ ময়মনসিংহের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ তানসেন বলেন, রুপার নাচানাচির অনেক ভিডিও আমি দেখেছি। সে গানের তালে অশ্লীলভাবে নাচানাচি করে। তার নামের আগে শিল্পী শব্দটি মানায় না। তবে একজন নারীকে মারধর করে চুল কেটে মুখে কালি দেওয়াকে সমর্থন করি না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ জামেলী বলেন, দুটি পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে ছিলেন। আদালতের আরেকটি ভাঙচুরের মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ১২ নভেম্বর দুপুরে ফিরে আসে। তখন রুপাকে আটকে মারধর করে চুল কেটে কালি মাখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শুক্রবার ১৪ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে শাহ আলমকে জুবিলী ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।