জহির হোসেন:
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে গাছ ভেঙে পড়ে, দেয়ালধসে এবং পানিতে ডুবে দেশের ১৪ জেলায় মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ভারি বর্ষণ আর স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সঙ্গী করে সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। এর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই ঝড়ো হাওয়া আর ভারি বর্ষণ শুরু হয় উপকূলের জেলাগুলোতে।
৩৩ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। সেখানকার সন্দ্বীপ চ্যানেলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে তীব্র বাতাস ও ঢেউয়ে বালু তোলার ড্রেজার ডুবে আট শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
সোমবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন উপকূলীয় জেলায় গাছ ভেঙে সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর আসতে থাকে, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে বহু এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়।
এর মধ্যে ভোলা সদর, দৌলতখান, লালমোহন ও চরফ্যাশনে মারা যান চারজন।
চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় বিভিন্ন গাছ পালা ও কাচা ঘর ভেঙ্গে পড়েছে। তবে কোন মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ঝড়ো বাতাসে ঘরের ওপর গাছ পড়ে এক দম্পতি এবং তাদের চার বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
টাঙ্গাইলে ঝড়ের কবলে পড়ে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গাছ ভেঙে পড়ে দুজন এবং নড়াইলের লোহাগড়া ও বরগুনা সদর উপজেলায় একজন করে মারা গেছেন।
সিরাজগঞ্জের সদরে যমুনা নদীর একটি খালে নৌকা ডুবে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
পটুয়াখালীতে ট্রলার ডুবে মারা গেছেন এক শ্রমিক।এ ছাড়া ঝড়ের সময় ঢাকার হাজারীবাগেও দেয়ালধসে এক রিকশাচালকের মৃত্যুর খবর দিয়েছে পুলিশ।
বরগুনা সদর উপজেলার সোনাখালী এলাকায় একটি ঘরের চালে গাছ পড়লে ওই ঘরে থাকা আমেনা খাতুন নামের এক নারী মারা যান।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা গ্রামে ঝড়ের সময় রান্নাঘরের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শরীয়তপুরে গাছের নিচে চাপা পড়ে সাফিয়া বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ইকুরিয়া গ্রামে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় ঘরচাপায় আনিসুর রহমান (৯) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবের সময় বসত ঘরে গাছ ভেঙে পড়লে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়।