স্টাফ রিপোর্টার॥
হাজীগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বসতঘর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামের দুধ মিয়া জমিদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকা দেখা দেয়। খবর পেয়ে তাৎখনিক হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক প্রভাকর বড়ুয়াসহ সঙ্গীয় ফোর্স ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
ভুক্তভোগি আকবর হোসেন জানান, পৌরসভাধীন ৮৩নং মকিমাবাদ ২১১৮নং খতিয়ানে হাল ৩৪৮ দাগে ১০ ফুট প্রশস্থ এবং ৭৫ ফুট লম্বা ওই বাড়ির চলাচলের পথ রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং জনসাধারণের চলাচলের পথে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ মিনুয়ারা বেগমের কাছ থেকে প্রতিকার এবং ওই পথে সবধরনের নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চাঁদপুরে একটি আবেদন করেন তিনি।
ওই আবেদনের (নং- ১৩২৮/২০২২ইং) বিষয়টি বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে নালিশি ভূমিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। আদালত ফৌজাদারী কার্য বিধি আইনের ১৪৫ ধারার বিধান মোতাবেক নালিশি ভূমিতে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) স্থিতাবস্থা বজায় জারি এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রতিপক্ষকে (মিনুয়ারা বেগম) কারণ দর্শানোর নির্দেশনা প্রদান করেন।
আকবর হোসেন সংবাদকর্মীদের বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার) সকালে ২০/২৫ জন শ্রমিক নিয়ে আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞাকৃত (স্থিতাবস্থা) ভূমিতে মিনুয়ারা বেগম বসতঘরের নির্মান কাজ শুরু করেন। বিষয়টি আমরা দেখতে পেয়ে তাদেরকে বাধা দেই এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার অনুরোধ জানাই। কিন্তু মিনুয়ারাসহ তার পরিবারের লোকজন মারমূখী হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে।
এ সময় আমরা নির্মাণকাজের সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের কাজ না করার অনুরোধ জানাই। কিন্তু মিনুয়ারা বেগম জোরপূর্বক বসতঘরের কাজ শুরু করেন। এরপর আমরা নিরুপায় হয়ে জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের বিষয়টি জানাই। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন এবং তারাসহ আমাদের সবাইকে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে মিনুয়ারা বেগম জানান, তার বসতঘরের উপর আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই, তিনি কাজ করাচ্ছেন। উল্টো তারা সবাই (আকবর হোসেন) এক হয়ে তার বসতঘরের চালের টিন লাগাতে বাধা দিচ্ছে। এবং এই বাধার কারণে তিনি ঘরের কাজ শেষ করতে পারছেন না। এতে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ সময় তিনি বলেন, তারা (আকবার হোসেন) আমার পরিবারের সদস্য না, এমনকি আত্মীয়-স্বজনও না। তারপরও তিনি মানবিক দিক বিবেচনা করে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে আকবর হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের হাঁটা-চলার পথ দিয়েছেন। অথচ এখন তারা, তার বসতঘরের কাজে বাধা দিচ্ছে। তিনি এর প্রতিকার চান।
হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রভাকর বড়ুয়া জানান, শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে উভয় পক্ষকে নালিশি ভূমিতে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু আদালতের স্থিতাবস্থা রয়েছে। তাই উভয় পক্ষকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি এবং আগামি দিনগুলোতে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছি।