মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্
রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে হাজীগঞ্জ বাজারের আমিন রোডের (থানা রোড) একটি কনফেকশনারীর সামনে একজন নারী ওড়না জড়িতে তাঁর কোলে নবজাতক শিশু বাচ্ছাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। প্রথম দৃষ্টিতে এমনি দেখা গেছে।
আমি তখন ওই সড়ক দিয়ে মেইন রোডের (কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক) দিকে আসছিলাম। কিন্তু না, হঠাৎ করে আমার চোখ গেল অন্য জায়গা। দেখলাম, ওই নারীর কোল থেকে একটি লেজ বের হয়ে রয়েছে। মনে কৌতুহলের সৃষ্টি হলো।
আমার সাথে দুইজন সিনিয়র সহকর্মী ছিলেন। আমি দাঁড়ালাম এবং সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে কথা বললাল ওই নারীর সাথে। তিনি বললেন, কোলে শিশু নয় একটি বিড়াল রয়েছে। তারপর তিনি কাপড় সরিয়ে আমাদের বিড়ালটি দেখালেন।
এরপর তিনি জানালেন, পোষা বিড়ালটির পায়ে ব্যাথা পাওয়ায় হাঁটতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। যেন সেই কষ্ট বিড়ালের নয়, মালিকের। ভাবছেন সেরে যাবে, কিন্তু না। দুইদিন পার হয়ে গেল। এখনো বিড়ালটি ঠিকমতো হাঁটতে পারছেনা। তাই-তো দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
অবশেষে তিনি বিড়ালটিকে নিজের গায়ের জামা (ওড়না) জড়িয়ে হাজীগঞ্জ বাজারে নিয়ে এলেন। চিকিৎসক দেখালেন। ঔষধ দেওয়া হলো। চিকিৎসক জানালেন, নিয়মিত ঔষধ সেবন করালে বিড়ালটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে। শুনে ওই নারী আশ^স্ত হলেন এবং হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন। কিন্তু তিনি তাঁর পরিচয় দিলেন না।
যাই হোক, সেই নারী প্রাণীর প্রতি যে ভালোবাসা ও সহমর্মিতা দেখালেন। যা আমাদের সমাজে একেবারেই নগণ্য। বিরলও বলা চলে। কারণ পোষা প্রাণীর মধ্যে হাঁস, মুরগী, গরু, ছাগলসহ যেসব প্রাণী মাংস, ডিম ও দুধ দেয় এবং যা আমাদের জন্য লাভজনক সাধারণত আমরা তার সেবাই করে থাকে, অলাভজনকে নয়।
তাই, প্রাণীর প্রতি ওই নারীর সহমর্মিতা আমাদেরকে মানবিক মূল্যবোধ শেখাতে সহযোগিতা করবে বলে মনে করি। আসুন, আমরা তাঁকে অনূসরণ ও অনূকরণ করে অবলা প্রাণির প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতা দেখাই।