অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
অতিরিক্ত লোকসমাগম ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কেউ–ই তা মানছেন না। এতে করে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালের সামনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কর্মী–সমর্থকদের প্রচণ্ড ভিড় তৈরি হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের মূল ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কার্যালয়ের ভেতর থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, শৃঙ্খলা না ফিরলে মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হবে না।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্য দিয়ে দলটির মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, শত শত নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মিছিল করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে আসছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তাঁদের কারও কারও অনুসারীরা একই রঙের টি–শার্ট পরেছেন। অনেকে আবার বাদ্য বাজাতে বাজাতে আসছেন।
সব মিলিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগত নেতা–কর্মীদের মধ্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কোন তলা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন, সেই নির্দেশনা কার্যালয়ের সামনে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক মনোনয়নপ্রত্যাশীকে সর্বোচ্চ দুজনকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র কিনতে আসতে বলা হয়েছিল, তবে সেই নির্দেশনা কেউই মানছেন না। কার্যালয়ের ভেতরে শত শত নেতা–কর্মী অবস্থান করার কারণে মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে।
এদিকে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মীর উপস্থিতির কারণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পল্টন মোড় হয়ে গুলিস্তানের দিকে আসা রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পুলিশ মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিতন্ত্রণ করতে না পেরে এক ঘণ্টার জন্য ফরম বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান কার্যালয়ের মূল ফটকে এসে ঘোষণা দেন, ‘আপনাদের অসহযোগিতার জন্য ফরম বিক্রি এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ। সহযোগিতা করতে না পারলে ফরম বিক্রি করতে পারছি না।’
এর আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন মাইকে ঘোষণা দেন, কার্যালয়ে ভেতরে দাঁড়ানোর আর জায়গা নেই। আপাতত এক ঘণ্টার জন্য ফরম বিতরণ বন্ধ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নেতা–কর্মীদের উপচে পড়া ভিড় ঠেকাতে না পেরে কার্যালয়ের মূল ফটকে অনেক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে পুলিশ সদস্যরা দলীয় নেতা–কর্মীদের কার্যালয় সামনে থেকে সরাতে পারছেন না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও নেতা–কর্মীরা জায়গা ছেড়ে যাচ্ছেন না।
মনোনয়ন ফরম বিতরণ বন্ধ করার কারণে কার্যালয়ের সামনে দলের নেতা–কর্মীদের চাপ আরও বাড়ছে।
সাবের হোসেন চৌধুরীর পক্ষে দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১ নম্বর ওয়ার্ড (খিলগাঁও এলাকা) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জুয়েল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেবল প্রার্থী অথবা তাঁর প্রতিনিধি কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করবেন বলা হলেও অনেকে মানতে চান না। কারণ, অনেকে এটাকে উৎসব মনে করেন। পাঁচ বছর পর অনেকে এই সুযোগ পান, তাই কেউ একে হাতছাড়া করতে চান না।’