জানা যায়, ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা প্রায়ই দাবি করতেন, সংখ্যালঘু মুসলমানদের একাংশও নাকি এখন তাদের ভোট দিচ্ছেন। আবার অনেকেই এই দাবিকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ হিসেবে অবিহিত করেন। তবে শুভেন্দুদের দাবি যদি সত্য বলে ধরে নেওয়া হয় তাহলে তার প্রতিফলন কোথায়?
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, মোট ভোটারের ১৪ শতাংশ ভোটার মুসলিম। তবুও মোদির নবগঠিত মন্ত্রিসভায় নেই কোনো সংখ্যালঘু প্রতিনিধি। রোববার (৯ জুন) রাষ্ট্রপতি ভবনে নরেন্দ্র মোদিসহ ৭২ জন শপথগ্রহণ করেন। এই ৭২ জনের মধ্যে কোনো মুসলিম নেই। এমনকি শরিক দল তেলেগু দেশম বা জনতা দল ইউনাইটেডও কোনো মুসলিম প্রার্থীকে মন্ত্রী করেনি।
৭২ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হলেন ৩০ জন। প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন ৩৬ জন এবং স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী (ওই সব মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী থাকবেন না) পাঁচজন।
৩০ পূর্ণ মন্ত্রীর ২৫ জনকেই নিজ দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) থেকে বেছে নিয়েছেন মোদি। জোটের শরিকদের মধ্য থেকে নিয়েছেন পাঁচজন।
রাজনাথ সিং: বিজেপির এই নেতা মোদির আগের মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
অমিত শাহ: মোদির আগের মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নতুন সরকারেও আছেন।
নীতীন গড়করি: কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নীতীন গড়করি এবারও ভারতের এনডিএ জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন।
জেপি নাড্ডা: জাতীয় পর্যায়ে বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা মোদির মন্ত্রিসভায় এবার পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে জায়গা পেয়েছেন।
শিবরাজ সিং চৌহান: মধ্যপ্রদেশের সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী এবার মোদির মন্ত্রিসভার পূর্ণ মন্ত্রী।
নির্মলা সীতারমণ: রাজ্যসভার সদস্য নির্মলা সীতারমণ আগের সরকারে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে যে দুজন নারী জায়গা পেয়েছেন, তাঁদেরই একজন সীতারমণ। তিনি মন্ত্রিপরিষদে তৃতীয়বার ঠাঁই পেলেন।
এস জয়শঙ্কর: মোদির আগের সরকারের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবারও মন্ত্রিপরিষদে জায়গা পেয়েছেন।
মনোহর লাল খাত্তার: গত মার্চে হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো মনোহর লাল খাত্তারকে নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে।
পীযূষ গয়াল: কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো লোকসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত পীযূষ গোয়াল প্রথমবারেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছেন।
ধর্মেন্দ্র প্রধান: আগের সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
সর্বানন্দ সোনোয়াল: আসামের এই বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন।
বীরেন্দ্র কুমার: তৃতীয়বারের মতো মোদির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদে জায়গা করে নিয়েছেন এই বিজেপি নেতা।
জুয়াল ওরাম: মোদি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন এই বিজেপি নেতা।
প্রহ্লাদ যোশি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন এই বিজেপি নেতা।
অশ্বিনী বিষ্ণু: এর আগে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা এই বিজেপি নেতা এবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
গিরিরাজ সিং: বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া: পঞ্চমবার লোকসভা নির্বাচনে জেতা বয়োজ্যেষ্ঠ এই বিজেপি নেতাও মোদির জোট সরকারে পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন।
ভূপেন্দ্র যাদব: মোদির গত মন্ত্রিপরিষদে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ভূপেন্দ্র যাদব। এবারও তিনি মোদির নতুন মন্ত্রিপরিষদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত: বিজেপির এই নেতা লোকসভার যোধপুর আসন থেকে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
অন্নপূর্ণা দেবী: বিজেপি নেতা অন্নপূর্ণা দেবী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেব শপথ নিয়েছেন।
কিরেন রিজিজু: ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা কিরেন রিজিজু এবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
মনসুখ মান্দাভিয়া: আগের সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
হরদীপ সিং পুরি: ২০১৮ সাল থেকে ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য হারদীপ সিং পুরি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
জিকে রেড্ডি: জিকে রেড্ডিও নতুন মন্ত্রিপরিষদে জায়গা পেয়েছেন।
সিআর পাতিল: রোববার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
এইচ ডি কুমারাস্বামী: কর্ণাটকের আঞ্চলিক জনতা দলের (সেক্যুলার) প্রধান ও এনডিএ জোটের অংশীদার এইচ ডি কুমারাস্বামী মোদির মন্ত্রিসভার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
জিতন রাম মাঞ্জি: হিন্দুস্তানি আম মোর্চার (সেক্যুলার) এই প্রতিষ্ঠাতা এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
রাজীব রঞ্জন (লালান) সিং: নীতীশ কুমারের দল জেডি-ইউর নেতা রাজীব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
কিঞ্জারাপু রাম মোহন নাইডু: তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) এই নেতাও জোটের অংশীদার হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন।
চিরাগ পাসওয়ান: এনডিএ জোটের শরিক লোক জনশক্তি পার্টি-রাম বিলাশ (এলজেপি-আরভি) নেতা চিরাগ নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন।
রাও ইন্দ্রজিৎ সিং (বিজেপি), জিতেন্দ্র সিং (বিজেপি), অর্জুন রাম মেঘওয়াল (বিজেপি), প্রতাপ যাদব (শিবসেনা), জয়ন্ত চৌধুরী (আরএলডি)।
জিতিন প্রসাদ (বিজেপি), শ্রীপাদ নায়েক (বিজেপি), কিষান পাল গুলজার (বিজেপি), রামদাস আটওয়ালে (বিজেপি), পঞ্চজ চৌধুরী (বিজেপি), রামনাথ ঠাকুর (জেডি-ইউ), নিত্যানন্দ রায় (বিজেপি), অনুপ্রিয়া পাটেল (আপনা দল), ভি সোমান্না (বিজেপি), চন্দ্র শেখর প্রেমাসানি (টিডিপি), এসপি সিং বাঘেল (বিজেপি), শোভা করন্দলাজে (বিজেপি), কৃতি বর্ধন সিং (বিজেপি), বিএল ভার্মা (বিজেপি), শান্তনু ঠাকুর (বিজেপি), সুরেশ গোপি (বিজেপি), এল মুরুগান (বিজেপি), বান্দি সঞ্জয় কুমার (বিজেপি), অজয় টামটা (বিজেপি), ভাগীরথ চৌধুরী (বিজেপি), কমলেশ পাসওয়ান (বিজেপি), সতীশ চন্দ্র দুবে (বিজেপি), সঞ্জয় শেঠ (বিজেপি), রবনীত সিং বিট্টু (বিজেপি), দুর্গা দাস উইকে (বিজেপি), রক্ষা খাদসে (বিজেপি), সুকান্ত মজুমদার (বিজেপি), সাবিত্রী ঠাকুর (বিজেপি), টোখান সাহু (বিজেপি), রাজ ভূষণ চৌধুরী (বিজেপি), ভূপতি রাজু শ্রীনিবাস ভার্মা (বিজেপি), হর্ষ মালহোত্রা (বিজেপি), নিমুবেন বামভানিয়া (বিজেপি), মুরলিধর মোহল (বিজেপি), জর্জ কুরিয়ান (বিজেপি) ও পবিত্র মার্গারিটা (বিজেপি)।