দখলদার ইসরাইলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র নিয়ে আসা সৌদি আরবের জাতীয় জাহাজ কোম্পানির একটি জাহাজ আটকে দিয়েছেন ইতালির জেনোয়া বন্দরের কর্মীরা।
গত ৮ আগস্ট ‘বাহরি ইয়ানবু’ নামের সৌদি জাহাজটি জেনোয়া বন্দরে ভেড়ে। খবর দ্য ক্রাডল, মিডল ইস্ট মনিটরের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাহাজটির জেনোয়া থেকে অস্ত্র বোঝাইয়ের কথা ছিল। যেগুলো আবুধাবিতে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বন্দরকর্মীরা জানতে পারেন, ওই জাহাজে আগে থেকেই অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিল। যেগুলো ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হবে।
এরপর জাহাজটিতে অনেকটা জোরপূর্বক প্রবেশ করেন বন্দরের ৪০ কর্মী। তখন তারা ইসরাইলের জন্য আনা অস্ত্রের খোঁজ পান। ইতালির জেনোয়াতে আসার আগে জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে গিয়েছিল। সেখান থেকেই এটি এসেছে।
জেনোয়ার অটোনোমাস কালেক্টিভ অব পোর্ট ওয়ার্কার্স অ্যান্ড ইউনিয়নের জোসে নিভোই বলেছেন, আমরা যুদ্ধের জন্য কাজ করি না। সৌদির জাহাজের এই অস্ত্র ‘চোরাচালান’ ধরা পড়ার পর অস্ত্র চোরাচালান বন্ধে জেনোয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি স্থায়ী পর্যবেক্ষক দল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এরআগে ২০১৯ সালে জেনোয়া বন্দরের কর্মীরা একইভাবে অস্ত্রবাহী একটি জাহাজ আটকে দিয়েছিলেন।
এদিকে, সৌদি আরবের জাতীয় জাহাজ কোম্পানি (বাহরি) ইসরাইলে অস্ত্র পরিবহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের প্রতিবেদনগুলোকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সোমবার কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সরকারি বিবৃতিতে বাহরি জানায়, এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
কোম্পানিটি ফিলিস্তিনি স্বার্থে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠিত নীতির পাশাপাশি সামুদ্রিক পরিবহণ নিয়ন্ত্রণকারী সমস্ত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধানের প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার ওপর জোর দিয়েছে।
বাহরি স্পষ্ট করে বলেছে, তারা কখনও ইসরাইলে কোনো পণ্য বা চালান পরিবহণ করেনি এবং কোনোভাবেই এই ধরনের কোনো অভিযানে জড়িত হয়নি।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তাদের সমস্ত কার্যক্রম ‘প্রযোজ্য বিধিবিধানের সম্পূর্ণ সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য কঠোর তদারকি এবং স্পষ্ট পর্যালোচনা পদ্ধতির অধীনে হয়ে থাকে।
সৌদির জাহাজ কোম্পানিটি আরও জানায়, তারা এমন যে কোনো দাবির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত, যা তাদের সুনামের ক্ষতি করতে পারে বা তাদের নীতিগুলোকে ভুলভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে দখলদার ইসরাইল। দখলদাররা গাজায় যেন বর্বরতা চালাতে আর কোনো অস্ত্র না পায় সেজন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বন্দর কর্মীরা তৎপর হয়েছেন।
গত ৪ জুন ফ্রান্সের ফোস-মার্সেইয়ের বন্দর কর্মীরা ইসরাইলের জন্য বন্দরে আনা অস্ত্রের উপকরণ জাহাজে লোড করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ওই জাহাজ অস্ত্র উপকরণ বোঝাই না করেই ফিরে যায়।