ঢাকা ০৩:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কচুয়ায় মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:০১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২৫ Time View

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার উত্তর পালাখাল এলাকায় সড়কের পাশে যেতেই চোখে পড়ে বিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন হয়ে উঠেছে ফসলের মাঠ। শীতের সোনাঝরা রোদে চিকচিক করছে হলদে বরণ সরিষা ক্ষেত। সেই সঙ্গে মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে চারপাশ। মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ ফুলে ভরা গাছ। ফুলের ফাঁকে ফাঁকে ফল পরিপাকের আভাস। তাতেই তৃপ্তির হাসি কৃষকের মুখে।

আগাম জাতের সরিষার হলুদ ফুল মাঠের পর মাঠকে ঢেকে দিয়েছে। হিমেল হাওয়ায় দোল খাওয়া সরিষা ফুল প্রকৃতিতে যোগ করেছে এক অনন্য সৌদর্য। এই দৃশ্য শুধু পথচারীকে নয়, কৃষকের মনকেও উজ্জীবিত করছে। সরিষার সমারোহে খুশি কৃষকরাও। পাশাপাশি সরিষার ক্ষেত থেকে মধু আহরণকারীরাও আনন্দে রয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে সরিষার ফলন ও বাজারদর ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা সরিষা চাষে আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকেছেন।

কচুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৭৩ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে লাভের আশায় আছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে সরিষার চাষ হয়েছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে কেবল হলুদ আর হলুদ। এখানকার উৎপাদিত সরিষা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে আবাদ বৃদ্ধি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা বা¤পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।

উপজেলার সফিবাদ গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি সরিষা আবাদ করেছি। আবহাওয়া যদি এভাবেই অনুকূলে থাকে, তাহলে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছি। একই গ্রামের কৃষক আব্দুল গনি, আলমাছ শিকারী ও প্রবাসী জাকারিয়া বলেন, সরিষা চাষে রোপণ থেকে শুরু করে তেমন বাড়তি খরচ লাগে না। আমরা এ বছর ৭৫ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। শুধু সার দিলেই হয়, আলাদা করে সেচও দিতে হয় না। তাই সরিষা চাষে আমরা ভালো লাভ পাচ্ছি। সরিষার ক্ষেত থেকে মধু আহরণে যুক্ত হাবিব জানান, গত বছরের তুলনায় এবার সরিষার ক্ষেত অনেক বেশি। তাই এ বছর মধু উৎপাদনও বেশি হবে বলে আশা করছি।

বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসা নুরুন্নবী পাঠান বলেন, রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, মাঠ ভরা সরিষা ফুল দেখে ভিডিও করতে এলাম। বন্ধুদের নিয়ে সরিষা বাগান দেখতে বেশ ভালো লাগছে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তপু আহমেদ বলেন, সরিষা একটি স্বল্প খরচের লাভজনক ফসল। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় সরিষার আবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলন ভালো হলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এবং ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ছবি-৩: কচুয়ার সফিবাদ মাঠে হলদে সরিষার মাঠ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করলেন ইউএনও

কচুয়ায় মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ

Update Time : ১১:০১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার উত্তর পালাখাল এলাকায় সড়কের পাশে যেতেই চোখে পড়ে বিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন হয়ে উঠেছে ফসলের মাঠ। শীতের সোনাঝরা রোদে চিকচিক করছে হলদে বরণ সরিষা ক্ষেত। সেই সঙ্গে মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে চারপাশ। মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ ফুলে ভরা গাছ। ফুলের ফাঁকে ফাঁকে ফল পরিপাকের আভাস। তাতেই তৃপ্তির হাসি কৃষকের মুখে।

আগাম জাতের সরিষার হলুদ ফুল মাঠের পর মাঠকে ঢেকে দিয়েছে। হিমেল হাওয়ায় দোল খাওয়া সরিষা ফুল প্রকৃতিতে যোগ করেছে এক অনন্য সৌদর্য। এই দৃশ্য শুধু পথচারীকে নয়, কৃষকের মনকেও উজ্জীবিত করছে। সরিষার সমারোহে খুশি কৃষকরাও। পাশাপাশি সরিষার ক্ষেত থেকে মধু আহরণকারীরাও আনন্দে রয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে সরিষার ফলন ও বাজারদর ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা সরিষা চাষে আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকেছেন।

কচুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৭৩ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে লাভের আশায় আছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে সরিষার চাষ হয়েছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে কেবল হলুদ আর হলুদ। এখানকার উৎপাদিত সরিষা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে আবাদ বৃদ্ধি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা বা¤পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।

উপজেলার সফিবাদ গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি সরিষা আবাদ করেছি। আবহাওয়া যদি এভাবেই অনুকূলে থাকে, তাহলে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছি। একই গ্রামের কৃষক আব্দুল গনি, আলমাছ শিকারী ও প্রবাসী জাকারিয়া বলেন, সরিষা চাষে রোপণ থেকে শুরু করে তেমন বাড়তি খরচ লাগে না। আমরা এ বছর ৭৫ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। শুধু সার দিলেই হয়, আলাদা করে সেচও দিতে হয় না। তাই সরিষা চাষে আমরা ভালো লাভ পাচ্ছি। সরিষার ক্ষেত থেকে মধু আহরণে যুক্ত হাবিব জানান, গত বছরের তুলনায় এবার সরিষার ক্ষেত অনেক বেশি। তাই এ বছর মধু উৎপাদনও বেশি হবে বলে আশা করছি।

বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসা নুরুন্নবী পাঠান বলেন, রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, মাঠ ভরা সরিষা ফুল দেখে ভিডিও করতে এলাম। বন্ধুদের নিয়ে সরিষা বাগান দেখতে বেশ ভালো লাগছে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তপু আহমেদ বলেন, সরিষা একটি স্বল্প খরচের লাভজনক ফসল। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় সরিষার আবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলন ভালো হলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এবং ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ছবি-৩: কচুয়ার সফিবাদ মাঠে হলদে সরিষার মাঠ।