বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় অর্থনীতিতে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নেওয়ার পাশাপাশি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও নারী উদ্যোক্তারা অবদান রেখে চলেছে। তিনি আজ শনিবার রাজধানীতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মাল্টি পারপাস হলে আয়োজিত ‘জাতীয় নারী উদ্যোক্তা সম্মেলনে’ অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি-বাংলাদেশ (নাসিব) ও নাসিব নারী উদ্যোক্তা কাউন্সিল যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
স্পিকার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে ‘জাতীয় নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন-২০২২’র আয়োজন যুগোপযোগি ও প্রশংসনীয়। কারণ,এই সম্মেলন নারী উদ্যোক্তাদের আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও নারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার দৃশ্যমান উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে আজ অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্বের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদরা এ উন্নয়নের অনেকগুলো কারণের মাঝে ‘বাংলাদেশের তৃণমূল নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে’ অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বাংলাদেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি যখন একটি জাতীয় চ্যালেঞ্জ, তখন দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অগ্রযাত্রী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্পিকার বলেন, বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে নারীর ক্ষমতায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। সরকার ঘোষিত জাতীয় শিল্পনীতি ও এসএমই নীতিমালার ফলে বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের দ্রুত বিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছে। এক্ষেত্রে, নাসিব সারা বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠিত করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও বিষয়-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ-কর্মশালা, নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রসার ও বাজারজাতকরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে নাসিব সহযোগিতা করছে।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের এখনো অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনা, কোলেটারল ফ্রি লোন ইত্যাদি সুবিধা যেন তারা সহজে পেতে পারে সে লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। স্পিকার বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ‘এসেস টু এভেইলেবিলিটি অফ সার্ভিস’ নিশ্চিত করতে হবে। কোভিড পরবর্তী সময়ে নারীদের জন্য সহযোগিতার হাত সকলকে আরো প্রসারিত করতে হবে। বর্তমান সরকার তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে কাজ করছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে ১০০০ নারী উদ্যোক্তাকে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। এ সময় তিনি একথাও জানান, বর্তমান সরকার নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর।
নাসিব সভাপতি সিআইপি মির্জা নূরুল গণী শোভনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নাজমা আক্তার এমপি, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ ও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বক্তব্য রাখেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া, মানতাশা আহমেদ, ইসমত জেরিন খান প্রমুখ নারী উদ্যোক্তা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গনমাধ্যমকর্মীরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।