ভালোবাসার টানে সুদূর জার্মান থেকে ছুটে এসে সিলেটের আব্রাহাম হাসান নাঈমকে বিয়ে করেছেন মারিয়া নামে এক তরুণী। জানাশোনা থাকায় সিলেটে এসেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আব্রাহাম বিশ্বনাথ পৌরসভার শ্রীধরপুর গ্রামের আরিছ আলীর ছেলে। মারিয়াকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে অনুষ্ঠানে রাখা হয় বাঙালি ঐতিহ্য। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুসলিম রীতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। রাজসিক এ বিয়ের অনুষ্ঠানে পুরো গ্রামের মানুষকে দাওয়াত করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বিশ্বনাথের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মারিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় আব্রাহামের। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। একপর্যায়ে তাদের প্রেমের বিষয়টি জানান পরিবারকে। উভয়ের পরিবার সিদ্ধান্ত নেন আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার। প্রথমে মারিয়া নাঈমকে জার্মানিতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি হননি। এক পর্যায়ে গত ২৩ ডিসেম্বর পছন্দের মানুষ আব্রাহামের কাছে বাংলাদেশে ছুটে আসেন এই তরুণী।
আব্রাহাম হাসান নাঈম বলেন, বিশ্বনাথের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মারিয়ার সঙ্গে পরিচয়। এরপর থেকে তাদের ফোনে আলাপ শুরু। এভাবে কয়েকমাস যেতে আমরা একে অন্যকে পছন্দ করি। সেই থেকে শুরু হয় আমাদের প্রেম। মারিয়া বাঙালিয়ানাকে খুব বেশি পছন্দ করে। বিশেষ করে গ্রামীণ পরিবেশ তাকে খুবই আকৃষ্ট করে। প্রথমে মারিয়া আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে জার্মানিতে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু আমি এতে সাড়া দেইনি। এরপর তাকে বাংলাদেশে আসার কথা জানালে সে রাজি হয় এবং দেশে চলে আসে।
আব্রাহামের ভাই আবদুল বাতিন বলেন, মারিয়া নাঈমকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। তাদের মধ্যে অনেকদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টা পরিবারের সবারই জানা। মারিয়া প্রেমের টানে জার্মানি থেকে বাংলাদেশে চলে আসবেন তা কল্পনা করা যায়নি। তাদের দুজনের ভালোবাসা দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ। মারিয়া জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে গবেষণা করছেন। খুব শিগগির জার্মান থেকে মারিয়ার মা-বাবা বাংলাদেশে আসবেন।
শ্রীধরপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, মারিয়া ও নাঈমের এমন বিয়ে দেখে আমরা আনন্দিত। জার্মান কন্যা আমাদের গ্রামের বধূ এই কথা ভাবতে ভালো লাগে। মারিয়াকে বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখেছি খুব হাস্যোজ্জ্বল তরুণী।