ঢাকা ০৯:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের দর–কষাকষি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:২০:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩
  • ৬৩ Time View

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শেষ মুহূর্তের দর–কষাকষি চলছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী আবদুলরহমান আল-থানি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার। গতকাল রোববার আবদুলরহমান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের সঙ্গে গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ মনে করেন তিনি। তবে আবদুলরহমান বলেন, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। কারণ, সম্ভাব্য চুক্তির পথে চ্যালেঞ্জ ‘খুবই সামান্য’।

এর আগে চলমান সমঝোতা প্রচেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জিম্মি নারী-শিশুদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে ইসরায়েল, হামাস ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি।

শনিবার ওয়াশিংটন পোস্ট–এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ছয় পৃষ্ঠার ওই সাময়িক সমঝোতা চুক্তির রূপরেখার ব্যাপারে জানেন—এমন ব্যক্তিরা সংবাদমাধ্যমটিকে এ কথা নিশ্চিত করেছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলে দুটি স্কুলে বিমান হামলার পর ইসরায়েল যখন দক্ষিণাঞ্চলে হামাস সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিসর বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো।

য়াশিংটন পোস্ট–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সমঝোতার আওতায় সব পক্ষকে কমপক্ষে পাঁচ দিনের জন্য যুদ্ধ স্থগিত করতে হবে। এ সময়ে প্রতি ২৪ ঘণ্টা পরপর ৫০ জন বা তার বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তবে শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘জিম্মিদের নিয়ে অনেক অপ্রমাণিত গুজব, অনেক ভুল প্রতিবেদন ছড়িয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। তবে আমি অঙ্গীকার করছি, যখন কিছু বলার থাকবে, আমরা আপনাদের তা জানাব।’

এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস এখনো কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। তাঁর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

হামলা বেড়েছে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায়

উত্তর গাজা থেকে বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। সেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা সরে গেছে। এখন মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুরেইজ ও নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে শনিবার চালানো হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন। গাজার হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন সংবাদকর্মী রয়েছেন। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে রাতে এক হামলায় মা ও তাঁর শিশুসন্তান নিহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ হাজার শিশু রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবের নারায়নপুরে ক্রয়কৃত সম্পত্তির চেয়ে অধিক জায়গা দখলের অভিযোগ

পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের দর–কষাকষি

Update Time : ১০:২০:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শেষ মুহূর্তের দর–কষাকষি চলছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী আবদুলরহমান আল-থানি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার। গতকাল রোববার আবদুলরহমান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের সঙ্গে গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ মনে করেন তিনি। তবে আবদুলরহমান বলেন, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। কারণ, সম্ভাব্য চুক্তির পথে চ্যালেঞ্জ ‘খুবই সামান্য’।

এর আগে চলমান সমঝোতা প্রচেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জিম্মি নারী-শিশুদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে ইসরায়েল, হামাস ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি।

শনিবার ওয়াশিংটন পোস্ট–এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ছয় পৃষ্ঠার ওই সাময়িক সমঝোতা চুক্তির রূপরেখার ব্যাপারে জানেন—এমন ব্যক্তিরা সংবাদমাধ্যমটিকে এ কথা নিশ্চিত করেছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলে দুটি স্কুলে বিমান হামলার পর ইসরায়েল যখন দক্ষিণাঞ্চলে হামাস সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিসর বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো।

য়াশিংটন পোস্ট–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সমঝোতার আওতায় সব পক্ষকে কমপক্ষে পাঁচ দিনের জন্য যুদ্ধ স্থগিত করতে হবে। এ সময়ে প্রতি ২৪ ঘণ্টা পরপর ৫০ জন বা তার বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তবে শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘জিম্মিদের নিয়ে অনেক অপ্রমাণিত গুজব, অনেক ভুল প্রতিবেদন ছড়িয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। তবে আমি অঙ্গীকার করছি, যখন কিছু বলার থাকবে, আমরা আপনাদের তা জানাব।’

এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস এখনো কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। তাঁর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

হামলা বেড়েছে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায়

উত্তর গাজা থেকে বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। সেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা সরে গেছে। এখন মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুরেইজ ও নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে শনিবার চালানো হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন। গাজার হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন সংবাদকর্মী রয়েছেন। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে রাতে এক হামলায় মা ও তাঁর শিশুসন্তান নিহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ হাজার শিশু রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।