চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এর বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন তার পক্ষের আইনজীবী।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও চাঁদপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলাম এর কার্যালয়ে মায়া চৌধুরীর পক্ষে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার পক্ষের আইনজীবী মো. সেলিম মিয়া। তিনি বলেন- নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে অনুসন্ধান কমিটি।
মায়া চৌধুরী লিখিত ব্যাখ্যায় বলেন, আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণ বিধি মালা ২০০৮ এর ৭ (গ) বিধি লঙ্ঘনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এবং প্রার্থীর অভিযোগপত্রে বর্নিত অভিযোগের সাথে সংগতিপূর্ন নয়। গত ২ ডিসেম্বর আমার বড় ছেলে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে গত ২৭ নভেম্বর থেকে আমি ও আমার রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা শোকার্ত। ওই সময় থেকে আমি ও আমার পরিবার চিকিৎসা এবং অন্যান্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
অভিযোগে উল্লেখিত গত ১ ডিসেম্বর মটরসাইকেল নিয়ে হুমকি-ধমকি বা অন্য কোন বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি চাঁদপুর-২ আসনে দুইবার সংসদ সদস্য ছিলাম এবং মন্ত্রী ছিলাম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। আমি শতভাগ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং নির্বাচনী আচরণ সম্পর্কে অবগত। আমি আমার কর্মী সমর্থক এবং আমার দলের নেতাকর্মীদেরকে তফসিল ঘোষিত নির্বাচনী প্রচারনার সময় ব্যতিরেকে নির্বাচনী প্রচারণা কার্য না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
মায়া চৌধুরী বলেন-আমার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের যে অভিযোগ এনেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে আমার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা এবং আমাকে হয়রানি অসৎ উদ্দেশ্যে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। সর্বপরি বলতে পারি আমি নির্বাচনী বিধিমাল অনুসরণ করে সকল প্রকার নির্বাচনী কর্মকান্ড করার ক্ষেত্রে আমার কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। কোন ব্যাক্তি আমার অজ্ঞাতসারে কোন অপরাধ জনক কর্মকান্ড করলে আমি তার দায়ভার নিবো না।
এর আগে ৪ ডিসেম্বর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে আচরণ বিধি লঙ্ঘন বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নির্দেশ করেন।
ওই নির্দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম. ইসফাক আহসান লিখিত অভিযোগ করেন বিগত ৩০ নভেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর থেকে একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সমর্থক ও আশ্রয়কৃত সন্ত্রাসী বাহিনী নানাভাবে স্বতন্ত্র সমর্থক ও এলাকার সাধারণ মানুষের বড়িতে হামলা করে বাড়ি-ঘর ভাংচুর, মারধর করে শারীরিকভাবে আহত করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করে। তারা হুমকি প্রদান করে-যারাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে।
তিনি আরোও অভিযোগ করেন বিগত ১ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৪টায় প্রতিপক্ষ কলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোবান সরকার সুবা ৩০-৪০জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মোটর সাইকেল মহড়া দেয় এবং প্রার্থীর বাড়িতে প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করেন। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করবে তাদের চোখ তুলে ফেলবেন এবং ঘর বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিবেন।
নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও চাঁদপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলাম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আমরা ব্যখ্যা চেয়েছি। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তদন্ত পূর্বক বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।