ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেপরোয়া ও বিলাসী জীবনের করুণ পরিণতি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৭৫ Time View

রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ভোরের দিকে তাসনিয়া রহমান (২৬) নামে এক মডেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। এরপর দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাসনিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

বেপরোয়া ও বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত তাসনিয়া রহমান আত্মহত্যার পথ কেন বেছে নিলেন তা নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন। জানা গেছে, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন তাসনিয়া। গত বছর যখন তার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে প্রকাশ্যে আসতে থাকে তখন তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে ও কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে কথা বলেন তাসনিয়া।

এসব লাইভে তাসনিয়া প্রকাশ করেন তার সঙ্গে কার কার সম্পর্ক ছিল এবং কাদের কাছ থেকে তিনি আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন। তদন্তে উঠে আসে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয় এই মামলা এবং প্রকাশ পায় তারা বেশ কয়েকবছর ধরে প্রেম করছিলেন।

মাত্র চার মাস পর একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ইফতেখারুল আলম নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পর্নো ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সাইবার মামলা করেছিলেন তাসনিয়া। কিন্ত সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে ইফতেখারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাসনিয়ার। করেছেন বিদেশ ভ্রমণও। বিভিন্ন সময়ে তার থেকে অন্তত বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এবং পরবর্তীতে মিথ্যা মামলা করেন ইফতেখারের বিরুদ্ধে।

সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় তাসনিয়া পেশাদার ব্ল্যাকমেলে জড়িত। মূলত ধনাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেল করে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। আরেক তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে একই চিত্র।

এ ছাড়াও শোবিজ অঙ্গনের আরেক মডেল ইশরাত পায়েলের স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্কে জরিয়েছিলেন তাসনিয়া। এ বিষয়ে ইশরাত পায়েলের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একটি কলরেকর্ড ফাঁস করেন তিনি। সেইসঙ্গে পায়েল দেশে ফিরলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।

এসব তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর গেল বছর তাসনিয়া রহমান নির্মাতা জসীম আহমদকে তা ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করে তাদের মধ্যকার ২০২০ সালের একটি পুরোনো মামলাকে সামনে নিয়ে এসে অনলাইনে মানহানীকর বক্তব্য দিতে থাকেন। এ সময় জসীম আহমেদের আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেন সাইবার আইনে মামলার আবেদনের কথা জানান।

আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম গণমাধ্যমে বলেন, ‌তাসনিয়া ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেল করত।

একের পর এক বিতর্কে জড়ানোর পর বেশ কিছুদিন ধরেই তাসনিয়া রহমান তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট করে আড়ালে চলে যান। সম্প্রতি আশিম খন্দকার নামে ইউল্যাবের এক ছাত্রের সঙ্গে লিভিং রিলেশনে ছিলেন তাসনিয়া। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে তাসনিয়ার নানা অপরাধ প্রকাশ্য আসতেই আশিম তাকে ছেড়ে গেলে লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন তিনি।

লাইভে আশিম সম্পর্কে তাসনিয়া জানান, আশিমের সঙ্গে আমার একটা বাসা নেওয়া ছিল। এখানে আশিম দায়িত্ববোধ থেকে সরে গেছে। আমরা ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে গেছিলাম, কিন্তু আশিম পুরো দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। আমাদেরত স্বামী-স্ত্রী হিসেবে চুক্তি আছে, আমি এটা তার ভাই আর মাকেও বুঝিয়েছি। তারা কোনো সাহায্য করেনি।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

১০ম গ্রেডসহ ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি প্রদান

বেপরোয়া ও বিলাসী জীবনের করুণ পরিণতি

Update Time : ০৯:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪

রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ভোরের দিকে তাসনিয়া রহমান (২৬) নামে এক মডেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। এরপর দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাসনিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

বেপরোয়া ও বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত তাসনিয়া রহমান আত্মহত্যার পথ কেন বেছে নিলেন তা নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন। জানা গেছে, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন তাসনিয়া। গত বছর যখন তার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে প্রকাশ্যে আসতে থাকে তখন তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে ও কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে কথা বলেন তাসনিয়া।

এসব লাইভে তাসনিয়া প্রকাশ করেন তার সঙ্গে কার কার সম্পর্ক ছিল এবং কাদের কাছ থেকে তিনি আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন। তদন্তে উঠে আসে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয় এই মামলা এবং প্রকাশ পায় তারা বেশ কয়েকবছর ধরে প্রেম করছিলেন।

মাত্র চার মাস পর একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ইফতেখারুল আলম নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পর্নো ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সাইবার মামলা করেছিলেন তাসনিয়া। কিন্ত সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে ইফতেখারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাসনিয়ার। করেছেন বিদেশ ভ্রমণও। বিভিন্ন সময়ে তার থেকে অন্তত বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এবং পরবর্তীতে মিথ্যা মামলা করেন ইফতেখারের বিরুদ্ধে।

সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় তাসনিয়া পেশাদার ব্ল্যাকমেলে জড়িত। মূলত ধনাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেল করে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। আরেক তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে একই চিত্র।

এ ছাড়াও শোবিজ অঙ্গনের আরেক মডেল ইশরাত পায়েলের স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্কে জরিয়েছিলেন তাসনিয়া। এ বিষয়ে ইশরাত পায়েলের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একটি কলরেকর্ড ফাঁস করেন তিনি। সেইসঙ্গে পায়েল দেশে ফিরলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।

এসব তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর গেল বছর তাসনিয়া রহমান নির্মাতা জসীম আহমদকে তা ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করে তাদের মধ্যকার ২০২০ সালের একটি পুরোনো মামলাকে সামনে নিয়ে এসে অনলাইনে মানহানীকর বক্তব্য দিতে থাকেন। এ সময় জসীম আহমেদের আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেন সাইবার আইনে মামলার আবেদনের কথা জানান।

আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম গণমাধ্যমে বলেন, ‌তাসনিয়া ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেল করত।

একের পর এক বিতর্কে জড়ানোর পর বেশ কিছুদিন ধরেই তাসনিয়া রহমান তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট করে আড়ালে চলে যান। সম্প্রতি আশিম খন্দকার নামে ইউল্যাবের এক ছাত্রের সঙ্গে লিভিং রিলেশনে ছিলেন তাসনিয়া। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে তাসনিয়ার নানা অপরাধ প্রকাশ্য আসতেই আশিম তাকে ছেড়ে গেলে লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন তিনি।

লাইভে আশিম সম্পর্কে তাসনিয়া জানান, আশিমের সঙ্গে আমার একটা বাসা নেওয়া ছিল। এখানে আশিম দায়িত্ববোধ থেকে সরে গেছে। আমরা ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে গেছিলাম, কিন্তু আশিম পুরো দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। আমাদেরত স্বামী-স্ত্রী হিসেবে চুক্তি আছে, আমি এটা তার ভাই আর মাকেও বুঝিয়েছি। তারা কোনো সাহায্য করেনি।