ঢাকা 4:09 pm, Friday, 27 June 2025

কেন বারে বারে ইসফাহান শহরকে টার্গেট করছে দখলদার ইসরাইল, কি আছে এ শহরে

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:38:46 am, Saturday, 20 April 2024
  • 1 Time View

ইসফাহান শহরের মসজিদ ই ইমাম। ছবি-সংগৃহিত।

ইরানের কেন্দ্রে অবস্থিত গুরত্বপূর্ণ শহর ইসফাহান। রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শহরটি পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক বিমান ঘাঁটির আবাসস্থল। সামরিক গবেষণা ও উন্নয়নের স্থাপনা এবং সামরিক ঘাঁটিসহ বেশ কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে। এছাড়াও ইরানের সবচেয়ে পরিচিত নাটানজ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টও এই শহরটিতেই অবস্থিত। এছাড়া এখানে ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের বিশাল কমপ্লেক্সও রয়েছে বলে জানা যায়। দেশটির বেশকিছু সামরিক ঘাঁটিরও শহর ইসফাহান।

শহরটিতে হামলা সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক কিমিট বলেন, ইসফাহান অনেকাংশে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। প্রশিক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রেও এই শহরের আলাদা স্থান রয়েছে। এমনকি কারও কারও মতে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতার বিকাশ ঘটেছে এই ইসফাহান শহরে।

তিনি আরও জানান, ‘এটাই সম্ভাব্য স্থান, যেখানে ইসরাইল আঘাত করবে। কারণ ইসরাইলের আজকে অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র নয় বরং আগামীদিনের ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে ভয়।’ তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ইরানের ইসফাহান শহরটিতে হামলা চালিয়েছে তেলআবিব। বারবারই ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের টার্গেট করেছে এই গুরুত্বপূর্ণ শহরটি।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইসফাহান ইরানের সেনাবাহিনীর একটি সামরিক কারখানায় হামলা চালায় নেতানিয়াহু বাহিনী। তবে সেসব আক্রমণ ব্যর্থ হয়। অবশ্য ওই হামলায় তেলআবিবকে দায়ী করে তেহরান এবং মোসাদের চার সদস্যকে আটক করে। অন্যদিকে এ ঘটনার পর ইরান সংঘাত বাড়াতে চায় না। ইসরাইলকে এই বিষয়টি জানিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে। সরাসরি প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ বলেছেন, রুশ কর্মকর্তারা ইরান ও ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ইরানে ইসরাইলি ড্রোন হামলার পর তিনি বলেছেন, আমরা এসব কথোপকথনে স্পষ্ট করেছি এবং ইসরাইলিদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছি যে, ইরান সংঘাত বাড়াতে চায় না। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও একটি কূটনৈতিক মিশনে হামলার জবাব না দিয়ে উপায় ছিল না ইরানের। কিন্তু তারা সংঘাতের তীব্রতা বাড়াতে চায় না। ইরানে ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক হামলা নিয়ে লেবাননে যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত টম ফ্লেচার বলেছেন, পুরো বিষয়টি এখনো বেশ অস্পষ্ট। ওই অঞ্চলের অনেকেই সত্যিকারের ভয় থেকে জেগে উঠছে। বোঝা যাচ্ছে ইসরাইল ইরানের সঙ্গে জুয়া খেলা চালিয়ে যেতে চায়।

প্রসঙ্গত, সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলার প্রতিশোধে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরাইলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। এরপরই তেহরানকে আক্রমণের হুমকি দেয় তেলআবিব এবং সে অনুযায়ী হামলাও চালিয়েছে তারা।

তবে ইসরাইলের বিস্ফোরণে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এ তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এরপর ইসরাইলের হামলার খবরের মধ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরান বেশ কয়েকটি প্রদেশে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাটারি স্থাপন করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে ২ ডাকাত গ্রেপ্তার, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার

কেন বারে বারে ইসফাহান শহরকে টার্গেট করছে দখলদার ইসরাইল, কি আছে এ শহরে

Update Time : 10:38:46 am, Saturday, 20 April 2024

ইরানের কেন্দ্রে অবস্থিত গুরত্বপূর্ণ শহর ইসফাহান। রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শহরটি পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক বিমান ঘাঁটির আবাসস্থল। সামরিক গবেষণা ও উন্নয়নের স্থাপনা এবং সামরিক ঘাঁটিসহ বেশ কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে। এছাড়াও ইরানের সবচেয়ে পরিচিত নাটানজ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টও এই শহরটিতেই অবস্থিত। এছাড়া এখানে ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের বিশাল কমপ্লেক্সও রয়েছে বলে জানা যায়। দেশটির বেশকিছু সামরিক ঘাঁটিরও শহর ইসফাহান।

শহরটিতে হামলা সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক কিমিট বলেন, ইসফাহান অনেকাংশে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। প্রশিক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রেও এই শহরের আলাদা স্থান রয়েছে। এমনকি কারও কারও মতে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতার বিকাশ ঘটেছে এই ইসফাহান শহরে।

তিনি আরও জানান, ‘এটাই সম্ভাব্য স্থান, যেখানে ইসরাইল আঘাত করবে। কারণ ইসরাইলের আজকে অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র নয় বরং আগামীদিনের ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে ভয়।’ তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ইরানের ইসফাহান শহরটিতে হামলা চালিয়েছে তেলআবিব। বারবারই ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের টার্গেট করেছে এই গুরুত্বপূর্ণ শহরটি।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইসফাহান ইরানের সেনাবাহিনীর একটি সামরিক কারখানায় হামলা চালায় নেতানিয়াহু বাহিনী। তবে সেসব আক্রমণ ব্যর্থ হয়। অবশ্য ওই হামলায় তেলআবিবকে দায়ী করে তেহরান এবং মোসাদের চার সদস্যকে আটক করে। অন্যদিকে এ ঘটনার পর ইরান সংঘাত বাড়াতে চায় না। ইসরাইলকে এই বিষয়টি জানিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে। সরাসরি প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ বলেছেন, রুশ কর্মকর্তারা ইরান ও ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ইরানে ইসরাইলি ড্রোন হামলার পর তিনি বলেছেন, আমরা এসব কথোপকথনে স্পষ্ট করেছি এবং ইসরাইলিদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছি যে, ইরান সংঘাত বাড়াতে চায় না। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও একটি কূটনৈতিক মিশনে হামলার জবাব না দিয়ে উপায় ছিল না ইরানের। কিন্তু তারা সংঘাতের তীব্রতা বাড়াতে চায় না। ইরানে ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক হামলা নিয়ে লেবাননে যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত টম ফ্লেচার বলেছেন, পুরো বিষয়টি এখনো বেশ অস্পষ্ট। ওই অঞ্চলের অনেকেই সত্যিকারের ভয় থেকে জেগে উঠছে। বোঝা যাচ্ছে ইসরাইল ইরানের সঙ্গে জুয়া খেলা চালিয়ে যেতে চায়।

প্রসঙ্গত, সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলার প্রতিশোধে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরাইলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। এরপরই তেহরানকে আক্রমণের হুমকি দেয় তেলআবিব এবং সে অনুযায়ী হামলাও চালিয়েছে তারা।

তবে ইসরাইলের বিস্ফোরণে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এ তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এরপর ইসরাইলের হামলার খবরের মধ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরান বেশ কয়েকটি প্রদেশে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাটারি স্থাপন করেছে।