মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
পৃথিবীতে আসার আগেই বাবাকে হারাল এক অনাগত সন্তান। বিয়ের মাত্র আট মাসেই স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হলেন স্ত্রী। আর নাড়ি ছেড়া ধন সন্তানকে হারিয়ে বার বার মুর্ছা যান মা। আর পরিবারের সদস্য ও স্বজনের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। বলছি, হাজীগঞ্জের আব্দুল হান্নানের কথা।
গত ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) আটাশ বছর বয়সে রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আব্দুল হান্নান। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের মৈশামূড়া গ্রামের বড় বাড়ির আমিন মিয়ার ছেলে। তিনি রাজধানীতে একটি বেকারীর লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, ওই দিন মার্কেটিংয়ের কাজ শেষে মধ্য বাড্ডা হয়ে কারখানায় ফিরছিলেন আব্দুল হান্নান। এসময় কোটা সংস্কারের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। একদিকে পুলিশ অপর দিকে হামলাকারীরা। মাঝখানে পড়ে যান হান্নানসহ একাধিক ব্যক্তি।
এসময় গুলি ও ইট-পাটকেলের আঘাতে গুরুতর হন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে আব্দুল হান্নানসহ ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যান। পরে পুলিশ নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বুঝে পেয়ে সোমবার গ্রামের বাড়ি হাজীগঞ্জে তার দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, নিহত আব্দুল হান্নান ধার্মিক ছিলেন। সে সততার সাথে জীবন-যাপন করতো। ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। সে গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে যুবলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর মৃত্যুতে নিজ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।