ঢাকা 2:36 pm, Thursday, 11 September 2025

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠনের ৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:30:23 pm, Wednesday, 4 December 2024
  • 42 Time View

ছবি-নতুনেরকথা।

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে মেডিকেল কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাসহ ৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেলা নাজনীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা যায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি, ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের যেতে বাধ্য করা, হোস্টেলে সিট দখলের চেষ্টা, ডাইনিং দখল, ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, ‘সন্ধানী’র কার্যক্রম এবং কমিটিতে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ রয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বী ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়বত দাস উৎসসহ কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন।

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর সাধারণ শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর কলেজ এডুকেশন ইউনিটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক (প্যাথলজি) ডা. মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ৬ সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে ২৭ নভেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সর্বসম্মতিক্রমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়।

মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেলা নাজনীন স্বাক্ষরিত নোটিসে উল্লেখ করা হয়- অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি চাঁমেক-১ ফজলে রাব্বীকে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ৩ মাসের জন্যে বহিষ্কার এবং ছাত্র হোস্টেলের বরাদ্দকৃত সিট স্থায়ীভাবে বাতিল, সাধারণ সম্পাদক চাঁমেক-২ প্রিয়বত দাস উৎসকে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ৬ মাসের জন্যে বহিষ্কার এবং ছাত্র হোস্টেলের বরাদ্দকৃত সিট স্থায়ীভাবে বাতিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাঁমেক-২ মাহিমা বিনতে মালেককে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ১ মাসের জন্যে বহিষ্কার, সব ধরনের সহপাঠ্যক্রম থেকে ৬ মাসের জন্যে বহিষ্কার এবং স্বভাবগতভাবে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় ভর্ৎসনা ও লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক চাঁমেক-৩ সানিলা রহমান সারাকে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ১ মাসের জন্য বহিষ্কার, চাঁমেক-২ হৃদয় কুমারের ১ মাসের জন্য ছাত্র হোস্টেলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করা হয়। তাছাড়া কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাঁমেক-৩ প্রিতম মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তদের শাস্তি ৬ আগস্ট থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কেউ ক্লাশ বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অভিযুক্ত সবাইকে মুচলেকা দিতে হবে এবং ভবিষ্যতে মেডিকেল কলেজ, হোস্টেল ও হাসপাতালে অবস্থানকালে এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যেকোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

এদিকে একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক আরোপিত শাস্তি প্রত্যাশিত না হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। শিক্ষার্থীরা জানান, নোটিশে উল্লেখ করা হয়, শাস্তি কার্যকর হয়েছে ৬ আগস্ট থেকে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের পর কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৮ আগস্ট থেকে এবং আমরা লিখিত অভিযোগ দাখিল করি ১৫ সেপ্টেম্বর। ৬ আগস্ট থেকে শাস্তির কার্যক্রম এবং শাস্তির মেয়াদ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

জানা যায়, কলেজের এ নোটিশ ২৭ নভেম্বর প্রকাশ করা হলেও তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আসে ৩ ডিসেম্বর। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে নানা অভ্যন্তরীণ নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৩ সদস্য আটক 

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠনের ৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি

Update Time : 08:30:23 pm, Wednesday, 4 December 2024

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে মেডিকেল কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাসহ ৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেলা নাজনীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা যায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি, ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের যেতে বাধ্য করা, হোস্টেলে সিট দখলের চেষ্টা, ডাইনিং দখল, ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, ‘সন্ধানী’র কার্যক্রম এবং কমিটিতে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ রয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বী ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়বত দাস উৎসসহ কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন।

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর সাধারণ শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর কলেজ এডুকেশন ইউনিটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক (প্যাথলজি) ডা. মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ৬ সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে ২৭ নভেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সর্বসম্মতিক্রমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়।

মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেলা নাজনীন স্বাক্ষরিত নোটিসে উল্লেখ করা হয়- অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি চাঁমেক-১ ফজলে রাব্বীকে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ৩ মাসের জন্যে বহিষ্কার এবং ছাত্র হোস্টেলের বরাদ্দকৃত সিট স্থায়ীভাবে বাতিল, সাধারণ সম্পাদক চাঁমেক-২ প্রিয়বত দাস উৎসকে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ৬ মাসের জন্যে বহিষ্কার এবং ছাত্র হোস্টেলের বরাদ্দকৃত সিট স্থায়ীভাবে বাতিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাঁমেক-২ মাহিমা বিনতে মালেককে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ১ মাসের জন্যে বহিষ্কার, সব ধরনের সহপাঠ্যক্রম থেকে ৬ মাসের জন্যে বহিষ্কার এবং স্বভাবগতভাবে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় ভর্ৎসনা ও লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক চাঁমেক-৩ সানিলা রহমান সারাকে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম থেকে ১ মাসের জন্য বহিষ্কার, চাঁমেক-২ হৃদয় কুমারের ১ মাসের জন্য ছাত্র হোস্টেলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করা হয়। তাছাড়া কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাঁমেক-৩ প্রিতম মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তদের শাস্তি ৬ আগস্ট থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কেউ ক্লাশ বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অভিযুক্ত সবাইকে মুচলেকা দিতে হবে এবং ভবিষ্যতে মেডিকেল কলেজ, হোস্টেল ও হাসপাতালে অবস্থানকালে এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যেকোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

এদিকে একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক আরোপিত শাস্তি প্রত্যাশিত না হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। শিক্ষার্থীরা জানান, নোটিশে উল্লেখ করা হয়, শাস্তি কার্যকর হয়েছে ৬ আগস্ট থেকে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের পর কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৮ আগস্ট থেকে এবং আমরা লিখিত অভিযোগ দাখিল করি ১৫ সেপ্টেম্বর। ৬ আগস্ট থেকে শাস্তির কার্যক্রম এবং শাস্তির মেয়াদ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

জানা যায়, কলেজের এ নোটিশ ২৭ নভেম্বর প্রকাশ করা হলেও তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আসে ৩ ডিসেম্বর। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে নানা অভ্যন্তরীণ নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।