হত্যা মামলায় হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান হাজী জসিম উদ্দিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে রোববার (২ ফেব্রুয়ারী) আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসযোগ আন্দোলনকে ঘিরে গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে হাজীগঞ্জে আজাদ সরকারকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি হিসেবে তাকে এ রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার কারাগার থেকে হাজী জসিম উদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব শর্মা। অন্যদিকে আসামির আইনজীবী রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে হাজী জসিম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পরবর্তীতে তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে আজাদ সরকার হত্যা মামলার নামীয় আসামি হিসেবে গত ৯ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার (৮ জানুয়ারী, বুধবার দিবাগত রাতে) হাজী জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী। হত্যাকাণ্ডের শিকার আজাদ সরকার হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় এলাকার সরকার বাড়ির মৃত আনু সরকারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন গত ৪ আগস্ট, রোববার বিকালে নিজ বসতবাড়ির সামনে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি হিমেলের বাবা আজাদ সরকারকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরে তিনি ওই দিন রাতেই কুমিল্লায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এই ঘটনার গত ১৪ আগস্ট, বুধবার হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, নিহতের ছেলে হিমেল সরকার। মামলায় এজাহারে আওয়ামী, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার নামীয় আসামি হিসেবে বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানী ঢাকা থেকে আলহাজ¦ জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে র্যাব ও পুলিশের একটি আভিযানিক দল।
প্রসঙ্গত : আজাদ সরকার হত্যা মামলার আসামিরা হলেন, পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় এলাকার কাজী বাড়ির ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিঠু কাজী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোবারক কাজী, আওয়ামী লীগ নেতা বশির কাজী, বাদল কাজী ও নুরু কাজী, ছাত্রলীগ নেতা তুষার কাজী, রাকিব কাজী, সিয়াম কাজী ও রুবেল কাজী।
অপর আসামিরা হলেন, পৌরসভাধীন মকিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল আলম বেপারী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলম শুভ ও তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন আজাদ ও গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের মৈশামূড়া গ্রামের আবুল বাসারের ছেলে সুমন।