চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আসামী হাশিম মিজির দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করে প্রেসি ব্রিফিং করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কে অ্যাড. দুলাল পাটওয়ারীর বাড়িতে ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী রুজিনা বেগম প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় তার মা মাছুমা বেগম, তার স্বজন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। রুজিনা পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামের আ. রহমান মিজির মেয়ে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি উল্লেখ করেন, আমি একজন তালাকপ্রাপ্তা। আমার স্বামীর সাথে প্রায় ১৫ বছর পূর্বে বিচ্ছেদ হয় এবং আমার বাবার বাড়িতে বসবাস করি। আমার প্রতিবেশী মৃত মোহাম্মদ মিজির ছেলে হাশিম মিজির স্ত্রী গত ২/৩বছর পূর্বে মারা যায়। এরপর থেকে তিনি আমাকে চলাচলের পথ রোধ করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি এতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করে। কারণ তিনি এলাকার একজন প্রভাবশালী দুষ্টু প্রকৃতির লোক। সর্বশেষ গত ২৭/০৯/২০২৪ইং তারিখ রাতে আমি প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিলে ঘরের বাহিরে বের হই। ওই সুযোগে হাশিম মিজি আমার ঘরে প্রবেশ করে এবং আমি ঘরে প্রবেশ করলে দরজা বন্ধ করে আমার সাথে বিয়ের আশ্বাসে শারিরীক সম্পর্ক করে। যার ফলে আমি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ি। এরপর আমাকে বিয়ে না করে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বিয়ের আশ্বাস দিয়েও বিয়ে না করে নানা টালবাহনা করে।
স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় আমি গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে হাশিম মিজিকে বিবাদী করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করি। ওই মামলায় তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ বিবাদী হাশিম মিজিকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতে পাঠায়। মামলটি চলমান। তবে বিবাদী এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ার কারণে এবং সে সুদের কারবারে জড়িত থাকায় তার টাকা পয়সা অনেক। সে অর্থ ও এলাকার কু-চুক্রি মহল ব্যবহার করে আমাকে নিয়মিত হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। জানতে পারি আমলি আদালতে তার জামিন না দেয়ার কারণে সর্বশেষ সে জেলা জজ আদালত থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী জামিন নেয়।
আসামী হাশিম মিজি জামিনের খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে তার লোকজন দিয়ে আমাকে নানা ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে, আমি যেন ন্যয় বিচার থেকে বঞ্চিত হই। যার জন্য আসামীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন মিজি এলাকার একটি কু-চক্রি মহল সংঘবদ্ধ করে অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং আমাকে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।
এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে আমি জানতে পেরেছি আসামী হাশিম মিজি একজন সুদী কারবারি এবং এলাকা শালিশসহ বিভিন্ন মানুষের দালালীর কাজ করে। এলাকার দালাল চক্রের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ থাকে।
আমি মামলা দায়েরের পর গত প্রায় একমাস আসামী হাশিম মিজির ছেলে ১. সাদ্দাম হোসেন মিজি, এলাকার বিএনপির নামধারী ২. হোসেনপুর গ্রামের শরাফত আলী মালের ছেলে বিল্লাল হোসেন মাল (বিল্লাল মেম্বার), ৩. শাহজাহান মালের ছেলে মো. মাসুদ মাল, ৪. নাছির মোল্লার ছেলে মহসিন মোল্লা, ৫. মোহর আলী মোল্লার ছেলে তাজল মোল্লা, ৬. আজিম খানের (আজিম রাজাকার) ছেলে দেলোয়ার হোসেন খান (মাষ্টার), ৭. হাসিম গাজীর ছেলে রুবেল গাজী, ৮. চাঁন খার দোকান এলাকার বারেক খানসহ সংঘবদ্ধ কয়েকজন চক্রান্ত শুরু করেছে। তারা আসামীর জামিন নেয়ার জন্য অনেক অর্থ খরচ করে এবং নতুন করে আমাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়-ভিতি প্রদর্শন ও প্রাণ নাশের হুমকিসহ বিভিন্ন চক্রান্তে লীপ্ত হয়েছে। যার কারণে আমি প্রাণ ভয়ে জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে গোপন স্থানে অবস্থান করছি। এছাড়াও আমার জীবনের নিরাপত্তার জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার বরাবর আইনী সহায়তা চেয়ে দরখাস্ত এবং চাঁদপুর সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছি।