ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গুর ডেঞ্জার জোন হাজীগঞ্জ॥ ব্যবসায়ীর মৃত্যু

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৪০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
  • ৮৬ Time View

ঈমান হোসেন। ছবি-ত্রিনদী

চাঁদপুর জেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা হলো সবচেয়ে ডেঙ্গু প্রবণ এলাকা। জেলা সদরের চেয়ে হাজীগঞ্জে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশী। প্রতিদিনই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে ডেঙ্গু রোগী। হাজীগঞ্জে এ রোগীর সখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উপজেলার মধ্যে পৌরসভার ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশী। তবে ৫নং সদরেও কিছু ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে।

সোমবার বিকেলে হাজীগঞ্জের ডেঞ্জার জোন হিসেবেখ্যাত ৫নং ওয়ার্ড কলেজ রোডের কলার আড়তদার ব্যবসায়ী ঈমান হোসেন কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। অত্র এলাকার আরো কয়েকজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন কয়েকজন।

তাদের মধ্যে একজন উপজেলার ৮নং হাটিলা ইউনিয়নের ওসমান গনি। প্রথমে জ্বর, সর্দি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসা শেষে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়লে গেলো এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা নেন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখন কিছুটা সুস্থ আছেন তিনি।

তার মতোই উপজেলার টোরাগড়ের ফাতিন নূর, মকিমাবাদের কাউছার ও বাকিলার আশ্রাফ উদ্দিন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন। হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যঅনুযায়ী এপ্রিল- মে মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেন ৪৯ জন। শুধুমাত্র জুন মাসে ডেঙ্গ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ৩৭ জন। এদের মধ্যে ৩জনকে রেফার্ড করা হয়েছে কুমিল্লা এবং ঢাকায়।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন অর্ধশতাধীক। এ সব তথ্যের বাহিরে আরো অনেকেই আক্রান্ত হয়ে বাড়ীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যঅ বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. এম এ ইসলাম সুমন বলেন, হাজীগঞ্জে প্রতিদিনই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি।

হাজীগঞ্জ শাহমিরান হাসপাতালের ম্যানেজার জানান, শাহ মিরান হাসপাতালে প্রতিদিনই ২/৩জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়।

হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের এমডি শেখ তোফায়ল আহমেদ জানান, প্রতিদিন হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বেশী বেশী মশার ঔষধ স্প্রে করা প্রয়োজন।

বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ায় বৃষ্টির কারণে হাজীগঞ্জে বেড়েছে মশার উপদ্রব। পৌরবাসির দাবী পৌরসভার পক্ষ থেকে যেনো মশার ঔষধ ছিটানো হয়।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালটেন্ট মেডিসিন ও নিউরো মেডিসিনে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক, নিউ মেডিনোভা ডিজিটাল সেন্টারের এমডি ডাক্তার মোহাম্মদ মহিবুল আলম রুবেল বলেন জানান, জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়ছে হাজীগঞ্জে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে বাড়ির পাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন, বনজঙ্গল পরিস্কার রাখা ও ঘুমানোর সময় মশারি টানানো সহ সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন ডেঙ্গুর সাধারণত ৪টি লক্ষণ থাকে তা হলো টি-১, টি-২, টি-৩, টি-৪। এর মধ্যে টি-১, টি-২ হাজীগঞ্জ বা চাঁদপুরে চিকিৎসা হয় এবং ট-৩, টি-৪ যদি আলামত পাওয়া যায় তাহলে কুমিল্লা বা ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

১০ম গ্রেডসহ ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি প্রদান

ডেঙ্গুর ডেঞ্জার জোন হাজীগঞ্জ॥ ব্যবসায়ীর মৃত্যু

Update Time : ০৯:৪০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

চাঁদপুর জেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা হলো সবচেয়ে ডেঙ্গু প্রবণ এলাকা। জেলা সদরের চেয়ে হাজীগঞ্জে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশী। প্রতিদিনই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে ডেঙ্গু রোগী। হাজীগঞ্জে এ রোগীর সখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উপজেলার মধ্যে পৌরসভার ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশী। তবে ৫নং সদরেও কিছু ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে।

সোমবার বিকেলে হাজীগঞ্জের ডেঞ্জার জোন হিসেবেখ্যাত ৫নং ওয়ার্ড কলেজ রোডের কলার আড়তদার ব্যবসায়ী ঈমান হোসেন কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। অত্র এলাকার আরো কয়েকজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন কয়েকজন।

তাদের মধ্যে একজন উপজেলার ৮নং হাটিলা ইউনিয়নের ওসমান গনি। প্রথমে জ্বর, সর্দি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসা শেষে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়লে গেলো এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা নেন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখন কিছুটা সুস্থ আছেন তিনি।

তার মতোই উপজেলার টোরাগড়ের ফাতিন নূর, মকিমাবাদের কাউছার ও বাকিলার আশ্রাফ উদ্দিন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন। হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যঅনুযায়ী এপ্রিল- মে মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেন ৪৯ জন। শুধুমাত্র জুন মাসে ডেঙ্গ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ৩৭ জন। এদের মধ্যে ৩জনকে রেফার্ড করা হয়েছে কুমিল্লা এবং ঢাকায়।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন অর্ধশতাধীক। এ সব তথ্যের বাহিরে আরো অনেকেই আক্রান্ত হয়ে বাড়ীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যঅ বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. এম এ ইসলাম সুমন বলেন, হাজীগঞ্জে প্রতিদিনই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি।

হাজীগঞ্জ শাহমিরান হাসপাতালের ম্যানেজার জানান, শাহ মিরান হাসপাতালে প্রতিদিনই ২/৩জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়।

হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের এমডি শেখ তোফায়ল আহমেদ জানান, প্রতিদিন হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বেশী বেশী মশার ঔষধ স্প্রে করা প্রয়োজন।

বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ায় বৃষ্টির কারণে হাজীগঞ্জে বেড়েছে মশার উপদ্রব। পৌরবাসির দাবী পৌরসভার পক্ষ থেকে যেনো মশার ঔষধ ছিটানো হয়।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালটেন্ট মেডিসিন ও নিউরো মেডিসিনে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক, নিউ মেডিনোভা ডিজিটাল সেন্টারের এমডি ডাক্তার মোহাম্মদ মহিবুল আলম রুবেল বলেন জানান, জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়ছে হাজীগঞ্জে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে বাড়ির পাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন, বনজঙ্গল পরিস্কার রাখা ও ঘুমানোর সময় মশারি টানানো সহ সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন ডেঙ্গুর সাধারণত ৪টি লক্ষণ থাকে তা হলো টি-১, টি-২, টি-৩, টি-৪। এর মধ্যে টি-১, টি-২ হাজীগঞ্জ বা চাঁদপুরে চিকিৎসা হয় এবং ট-৩, টি-৪ যদি আলামত পাওয়া যায় তাহলে কুমিল্লা বা ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।