ঢাকা 11:41 pm, Saturday, 26 July 2025

কচুয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১০

দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ।

কচুয়া উপজেলা বিএনপির গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শনিবার বিকালে উপজেলার রহিমানগর বাজারে এ সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। আহতরা হচ্ছেন আজাদুর রহমান (৩৫), তানভীর আহম্মেদ (২৮), ওমর ফারুক (৩৪), মিজান মৌলভী (৫৫), সোহেল হোসেন (৩২), গাজী রশিদ (২৫), শামিম (৩০), শুভ (২৫), এমদাদুল হাসান লিমন (২৬)। বর্তমানে রহিমানগর বাজার এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে পূর্ব নির্ধারিত গণমিছিল ও প্রতিবাদ সভা ওইদিন বিকালে রহিমানগর বাজারে গোহট উত্তর, দক্ষিণ ও আশ্রাফপুর ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও কচুয়া উপজেলা বিএনপির সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেনের সমর্থনে কচুয়া উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ হুমায়ুন কবির প্রধান সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মঞ্জুর আহম্মেদ সেলিম সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম, বিশেষ অতিথি জেলা যুব দলের সভাপতি মোঃ মানিকুর রহমান মানিক। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে গণমিছিল বের হলে বিএনপির অপর গ্রুপ সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে করে জনমনে আতংক দেখা দেয় ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এতে করে রহিমানগর বাজার জনশূন্য হয়ে পড়ে। পরে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জুর আহম্মেদ সেলিম বলেন, বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এহছানুল হক মিলনের সমর্থিত নেতাকর্মীরা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ও গণমিছিলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে করে আমাদের বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মিলন সমর্থিত যুবদল নেতা হাবিবুন্নবী সুমনের ব্যক্তিগত ভেরিফাইড ফেইজবুকে শুক্রবার রাতে দেয়া পোস্টকে ঘিরে এ উত্তোজনা দেখা দেয়। তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেন “আগামীকাল শনিবার রহিমানগর বাজার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে, ৯, ১০, ১১, ১২নং ইউনিয়নের বিএনপির সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাদেরকে সকাল ১০ ঘটিকায় রহিমানগর দক্ষিণ বাজার উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান করা গেল”। এ পোস্টকে ঘিরে রাতভর বিএনপির উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুন্নবী সুমন জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের এ প্রতিরোধ কর্মসূচি ছিল। মোশারফ গ্রুপের লোকজন আমাদের প্রতিরোধ কর্মসূচিতে হামলা চালায়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে পূর্ব নির্ধারিত গণমিছিল ও সমাবেশে কোন বিএনপির সমর্থকরা হামলা করতে পারে না। তারা ফ্যাসিবাদের দোসর ও বিএনপির পথভ্রষ্ট বিপদগামী। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, বিএনপির নেতা মোশাররফ হোসেনের সমর্থিত পূর্ব নির্ধারিত কচুয়া দক্ষিণ অঞ্চলে রহিমানগর বাজারে গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। সমাবেশ শেষে গণমিছিলটি রহিমানগর বাজার প্রদক্ষিণকালে একদল দূর্বত্ত লাঠি সোটা নিয়ে দাওয়া করে। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রহিমানগর বাজারে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া য়ায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

শহীদ হান্নানের একমাত্র সন্তান বাবার মুখ দেখেনি

কচুয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১০

Update Time : 11:03:57 pm, Saturday, 26 July 2025

কচুয়া উপজেলা বিএনপির গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শনিবার বিকালে উপজেলার রহিমানগর বাজারে এ সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। আহতরা হচ্ছেন আজাদুর রহমান (৩৫), তানভীর আহম্মেদ (২৮), ওমর ফারুক (৩৪), মিজান মৌলভী (৫৫), সোহেল হোসেন (৩২), গাজী রশিদ (২৫), শামিম (৩০), শুভ (২৫), এমদাদুল হাসান লিমন (২৬)। বর্তমানে রহিমানগর বাজার এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে পূর্ব নির্ধারিত গণমিছিল ও প্রতিবাদ সভা ওইদিন বিকালে রহিমানগর বাজারে গোহট উত্তর, দক্ষিণ ও আশ্রাফপুর ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও কচুয়া উপজেলা বিএনপির সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেনের সমর্থনে কচুয়া উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ হুমায়ুন কবির প্রধান সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মঞ্জুর আহম্মেদ সেলিম সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম, বিশেষ অতিথি জেলা যুব দলের সভাপতি মোঃ মানিকুর রহমান মানিক। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে গণমিছিল বের হলে বিএনপির অপর গ্রুপ সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে করে জনমনে আতংক দেখা দেয় ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এতে করে রহিমানগর বাজার জনশূন্য হয়ে পড়ে। পরে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জুর আহম্মেদ সেলিম বলেন, বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এহছানুল হক মিলনের সমর্থিত নেতাকর্মীরা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ও গণমিছিলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে করে আমাদের বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মিলন সমর্থিত যুবদল নেতা হাবিবুন্নবী সুমনের ব্যক্তিগত ভেরিফাইড ফেইজবুকে শুক্রবার রাতে দেয়া পোস্টকে ঘিরে এ উত্তোজনা দেখা দেয়। তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেন “আগামীকাল শনিবার রহিমানগর বাজার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে, ৯, ১০, ১১, ১২নং ইউনিয়নের বিএনপির সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাদেরকে সকাল ১০ ঘটিকায় রহিমানগর দক্ষিণ বাজার উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান করা গেল”। এ পোস্টকে ঘিরে রাতভর বিএনপির উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুন্নবী সুমন জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের এ প্রতিরোধ কর্মসূচি ছিল। মোশারফ গ্রুপের লোকজন আমাদের প্রতিরোধ কর্মসূচিতে হামলা চালায়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে পূর্ব নির্ধারিত গণমিছিল ও সমাবেশে কোন বিএনপির সমর্থকরা হামলা করতে পারে না। তারা ফ্যাসিবাদের দোসর ও বিএনপির পথভ্রষ্ট বিপদগামী। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, বিএনপির নেতা মোশাররফ হোসেনের সমর্থিত পূর্ব নির্ধারিত কচুয়া দক্ষিণ অঞ্চলে রহিমানগর বাজারে গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। সমাবেশ শেষে গণমিছিলটি রহিমানগর বাজার প্রদক্ষিণকালে একদল দূর্বত্ত লাঠি সোটা নিয়ে দাওয়া করে। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রহিমানগর বাজারে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া য়ায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।