চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সিরাজ তালুকদার বাড়ি এলাকায় ভয়াবহ টোরাগড় নদী ভাঙনে শতাধিক পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় পুরো এলাকা আতঙ্কের ছায়ায় ঢেকে গেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়জুড়ে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রতি মুহূর্তে মাটি খসে পড়ছে নদীতে। কোথাও কোথাও গাছপালাসহ বড় বড় অংশ নদীগর্ভে ধসে পড়েছে। স্থানীয়রা বাঁশ, বালুর বস্তা ও কাঠ দিয়ে যেভাবে পারছেন ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা তাইজুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিনই নদী পাড় ভেঙে যাচ্ছে। কখন যে ঘরবাড়ি নদীতে চলে যাবে, সেই আতঙ্কে দিনরাত ঘুমাতে পারি না।”
আরেক ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, “আমার ঘরের অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। এখন কোথায় আশ্রয় নেব, কিছুই বুঝতে পারছি না।”
আবুল কাশেম পাটোয়ারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “নদী ভাঙন রোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম নদীতে তলিয়ে যাবে। আমরা সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ চাই।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, টোরাগড় নদী ভাঙনের অন্যতম কারণ হলো হামিদিয়া জুট মিলে বালগেট নোঙর করা। নিয়মিত বালগেট থামানো ও ইঞ্জিন চালু রাখার ফলে প্রোপেলারের চাপেই নদীর তলদেশের মাটি সরে যাচ্ছে। আর তার ফলেই পাড় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
বর্তমানে নদী ভাঙনের হুমকিতে শুধু বসতভিটাই নয়, স্থানীয় রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ লাইনসহ গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামোও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে এগুলো নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা দ্রুত ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, জরুরি ব্যবস্থা না নিলে শিগগিরই এলাকার অর্ধেক অংশ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”