চাঁদপুর জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজম খানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে দলের অপর পক্ষের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের চিত্রলেখা মোড়-সংলগ্ন সিংহপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় বিএনপি নেতা আজম খান বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। তিনি একটি কক্ষে অবস্থান নেওয়ায় হামলার শিকান হননি। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা সটকে পড়েন। ঘটনার পর থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শহরের চিত্রলেখা মোড় এলাকায় আতঙ্কে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ আছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জহির উদ্দিন বলেন, তাঁরা আজম খানের চাঁদপুর শহরের সিংহপাড়ার বাড়ির তৃতীয় তলায় ছিলেন। হঠাৎ ভাঙচুরের আওয়াজ শুনতে পান। এ সময় নিচে তাকিয়ে দেখেন, একদল লোক আজম খানের গাড়ি ভাঙচুর করছে। এ সময় তারা ওপরে উঠে আজম খানের ঘরেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আজম খান তখন ঘরের একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। এতে পুরো ভবনের সব ভাড়াটে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। এখন বাড়িটি পুলিশ পাহারা দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সাউথ আফ্রিকা বিএনপির সভাপতি আজম খান দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে আসেন। পরে তাঁকে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। ওই পদ পাওয়ার পর তিনি চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দলের বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলীয় কার্যক্রম ও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এ নিয়ে আজ বিকেলে শহরের হাসান আলী হাইস্কুল মাঠে নিজের পরিচিতির জন্য একটি সভার আয়োজন করেছিলেন আজম খান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির অপর পক্ষের কর্মী-সমর্থক তাঁর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এর আগে ২২ আগস্ট বিকেলে তিনি সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে গণসংযোগ, পথসভা ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করেন।
হামলার বিষয়ে আজম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তো এখানে কারও প্রতিপক্ষ হতে আসিনি। আমি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে এসেছি। প্রতিপক্ষ হয়ে লড়তে আসিনি। কিন্তু আমার বাসায় আমারই দলের অপর একটি গ্রুপের কর্মী-সমর্থকেরা হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর জেল-জুলুম ভোগ করে জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ জেলা বিএনপিকে সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে দলে কারও সঙ্গে তাঁর বিরোধ বা দ্বন্দ্ব নেই। হঠাৎ কয়েক দিন আগে উড়ে এসে জুড়ে বসে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি শুরু করছেন আজম খান। তিনি অভিযোগ করেন, আজম খান জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মনোনীত হয়ে আজ পর্যন্ত জেলা বা পৌর বিএনপির কারও সঙ্গে না বসে দলের শত্রু ও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজনকে টাকাপয়সা দিয়ে দলের ভেতর বিশৃঙ্খলাসহ চরম ক্ষতি করছেন। আজ তাঁর বাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, এটা তাঁর নিজের লোকেরাই করেছে। এখন তিনি জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের দোষারোপ করছে।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠান। বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এরপরও তাঁরা এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। এখনো কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি।