অষ্টম শ্রেণি পাশ করে চিকিৎসক হিসেবে বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক বছর ধরে সিজার (প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার) করে আসছেন। শেষপর্যন্ত রক্ষা হয়নি। হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে। এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে রংপুর নগরীর ইউনাইটেড হাসপাতালে।
ঘটনার সময় প্রশান্ত রায় (৩০) নামে ওই প্রতারক চিকিৎসক বোরকা পরে বাথরুমে লুকিয়ে থেকে পালানোর চেষ্টা করে, তবুও রক্ষা পায়নি।
এ ঘটনা ঘটেছে বুধবার রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে।
জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের যৌথভাবে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ অভিযান চালায়।
সিভিল সার্জন ডা. শাহীনা সুলতানা এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, এই প্রতারণায় দায়ে প্রশান্ত রায়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান মিশু তাকে তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। এছাড়া হাসপাতালের মালিক সামসুদ তিবরীজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিন দিনের জেল দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর ধরে লাইসেন্স নবায়ন করেনি ওই হাসপাতাল। এছাড়া পরিবেশ ছাড়পত্রসহ বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। তবুও ওই হাসপাতালে জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করে আসছেন ‘অষ্টম শ্রেণি পাশ’ প্রশান্ত রায় নামে ওই যুবক- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই হাসপাতালে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত ওই যুবক বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাত থেকে রক্ষা পাননি। দুই ঘণ্টা টয়লেটে বোরকা পরে লুকিয়ে থাকার পর প্রশান্তকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের ময়না বেগমের (২৬) প্রসব বেদনা উঠলে তাকে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছুক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিয়ে তার সিজার করা হয়।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, অভিযানে ওই বেসরকারি হাসপাতালের ওটিতে গিয়ে এক প্রসূতি নারীকে পাওয়া যায়। তখন সিজার করে তার সন্তান বের করা হয়েছিল। সেলাই দিচ্ছিলেন এক যুবক। তিনি প্রথমে নিজেকে চিকিৎসক দাবি করেন। পরে বলেন, ‘আমি চিকিৎসক নই, এইট পাশ করেছি মাত্র।’ এরপর তিনি বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেন।