ঢাকা 5:49 am, Thursday, 16 October 2025

বেয়াই ও দুলাভাইয়ের লালসার শিকার শ্যালিকা, গর্ভপাতের পর শিশুকে জীবিত দাফনের চেষ্টা, আটক ৩

চাঁদপুরে জীবিত নবজাতক দাফনের ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের এক কর্মচারী, এক নার্স ও নবজাতকের গর্ভধারী কিশোরীর মাকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি পৌরসভার সুয়াপাড়া এলাকার ১৫–১৬ বছরের এক কিশোরী ভগ্নিপতি মুন্না ও মুন্নার ভাই সাব্বিরের লালসার শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পরিবার গোপন রাখে। পরে গর্ভপাত করাতে তাকে চাঁদপুর শহরের ‘দি ইউনাইটেড হাসপাতালে’ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর নবজাতককে জেলার চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে দাফনের জন্য পাঠানো হলে কবর খননকারী শাহাজাহান শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পান। সঙ্গে থাকা সাংবাদিক মুসাদ্দেক আল আকিব ও আশিক বিন রহিম নবজাতককে উদ্ধার করে চাঁদপুর ফেমাস স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করান। তবে আট ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর শিশুটি মারা যায়। ঘটনার পর কবরস্থান এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গোয়েন্দা পুলিশ হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় ফারুক হোসেন গাজীকে গ্রেফতার করে। তার জবানবন্দিতে ঘটনার নেপথ্য কাহিনি উদঘাটিত হয়। পরে পুলিশ হাসপাতালের এক নার্স ও নবজাতকের মাকেও আটক করে। এ ঘটনায় কবর খননকারী শাহাজাহান এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আদালতের পরামর্শে ‘দি ইউনাইটেড হাসপাতাল’ সিলগালা করে দেয়। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিকদের মানবিক প্রচেষ্টা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। একইসঙ্গে শাহরাস্তির ওই কিশোরীর জীবনাবসান ও তার ওপর ঘটে যাওয়া অমানবিকতার ঘটনায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

শাহরাস্তিতে রেলওয়ের সম্পত্তি নবায়ন করেও রেহাই পেল না  ১টি পরিবার

বেয়াই ও দুলাভাইয়ের লালসার শিকার শ্যালিকা, গর্ভপাতের পর শিশুকে জীবিত দাফনের চেষ্টা, আটক ৩

Update Time : 12:09:14 am, Tuesday, 23 September 2025

চাঁদপুরে জীবিত নবজাতক দাফনের ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের এক কর্মচারী, এক নার্স ও নবজাতকের গর্ভধারী কিশোরীর মাকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি পৌরসভার সুয়াপাড়া এলাকার ১৫–১৬ বছরের এক কিশোরী ভগ্নিপতি মুন্না ও মুন্নার ভাই সাব্বিরের লালসার শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পরিবার গোপন রাখে। পরে গর্ভপাত করাতে তাকে চাঁদপুর শহরের ‘দি ইউনাইটেড হাসপাতালে’ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর নবজাতককে জেলার চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে দাফনের জন্য পাঠানো হলে কবর খননকারী শাহাজাহান শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পান। সঙ্গে থাকা সাংবাদিক মুসাদ্দেক আল আকিব ও আশিক বিন রহিম নবজাতককে উদ্ধার করে চাঁদপুর ফেমাস স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করান। তবে আট ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর শিশুটি মারা যায়। ঘটনার পর কবরস্থান এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গোয়েন্দা পুলিশ হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় ফারুক হোসেন গাজীকে গ্রেফতার করে। তার জবানবন্দিতে ঘটনার নেপথ্য কাহিনি উদঘাটিত হয়। পরে পুলিশ হাসপাতালের এক নার্স ও নবজাতকের মাকেও আটক করে। এ ঘটনায় কবর খননকারী শাহাজাহান এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আদালতের পরামর্শে ‘দি ইউনাইটেড হাসপাতাল’ সিলগালা করে দেয়। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিকদের মানবিক প্রচেষ্টা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। একইসঙ্গে শাহরাস্তির ওই কিশোরীর জীবনাবসান ও তার ওপর ঘটে যাওয়া অমানবিকতার ঘটনায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।