হাজীগঞ্জে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো শারদীয় দুর্গোৎস
সুজন দাস:
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় ধর্মীয় পূর্ণতা ও উৎসবের আমেজে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দশমী পূজা ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন হাজারো ভক্তবৃন্দ। উপজেলার ২৯টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ২৫টি প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্তি টানে। তবে একটি ঘটপূজা ও তিনটি প্রতিমা এ বছরও বিসর্জন না দিয়ে মন্দিরে সংরক্ষণ করেছে সংশ্লিষ্ট পূজা কমিটি।
সংরক্ষিত প্রতিমাগুলোর মধ্যে রয়েছে হাজীগঞ্জ পৌরসভার বলাখাল চৌধুরী বাড়ি পূজা মণ্ডপের প্রতিমা, ৬ নম্বর পূর্ব বড়কুল ইউনিয়নের সার্বজনীন পূজা মণ্ডপ এবং দ্বাদশ ইউনিয়নের সূর্যমনি সরকার বাড়ির পূজা মন্দির। মন্দির কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগুলো বছরব্যাপী পূজার্চনার জন্য রাখা হবে। অন্যদিকে বাকি ২৫টি প্রতিমা পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আনন্দ-উল্লাসে বিসর্জন দেয়া হয়।
হাজীগঞ্জ বাজারের পাঁচটি প্রধান পূজা মণ্ডপের প্রতিমা পৌর মহাশ্মশান সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীতে বিসর্জন দেয়া হয়। এ সময় নদী পাড়ে ভক্ত-অনুরাগীদের ঢল নামে। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত বিসর্জনের কর্মসূচি চলে। ভক্তরা ঢাক-ঢোল, উলুধ্বনি ও আনন্দোৎসবের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানান।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি রুহিদাস বণিক বলেন, “সকলের সহযোগিতায় এবারের দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ।” ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রাণ কৃষ্ণ সাহা মনা বলেন, “দুর্গাপূজা কেবল হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। হাজীগঞ্জের মানুষ মিলেমিশে যে সম্প্রীতির উদাহরণ তৈরি করেছেন তা অনন্য।”
এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন ও মণ্ডলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা জানান, নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সহায়তার কারণে ভক্তরা নির্বিঘ্নে পূজা ও বিসর্জন সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “প্রতিটি পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিলো জোরদার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আনসার সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবীরা সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করেছেন। এর ফলে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই পূর্ণাঙ্গভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন হয়েছে।”
এবারের দুর্গোৎসব উপলক্ষে হাজীগঞ্জের সর্বত্র উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছিল। নবমী ও দশমীতে হাজার হাজার মানুষ মণ্ডপে ভিড় করেন। ভক্তরা জানান, মাকে বিদায় জানানোর বেদনা থাকলেও আগামী বছর আবার দেবী দুর্গার আগমনের অপেক্ষায় তারা প্রহর গুনতে থাকবেন।