চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মকিমাবাদ এলাকায় ‘করিমের বাগান’ নামে পরিচিত এক স্থানকে ঘিরে এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র উদ্বেগ ও ক্ষোভ। স্থানীয়দের দাবি, করিম বাগানো নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন এই বাগান ও এর আশপাশের সাহেব আলী বিল্ডিং এবং মসজিদের দক্ষিণ পাশের এলাকা এখন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষায়, এটি যেন একপ্রকার “ইয়াবা স্বর্গরাজ্য”।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই এই এলাকার বিভিন্ন কোণে অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাত গভীর হলে এখানে গোপনে চলে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকের ক্রয়-বিক্রয়। অভিযোগ রয়েছে, সাহেব আলী বিল্ডিং-এর আশপাশে ও করিমের বাগানের ভেতরে নিয়মিত মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। আশপাশের সাধারণ মানুষ এতে ভয় এবং আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা প্রতিবেশী হয়ে এখন ভয় নিয়ে বাঁচি। বাচ্চাদের সন্ধ্যার পর বাইরে যেতে দিই না। কেউ কিছু বললে হুমকি দেয়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কাজ হয় না।”
এলাকার ব্যবসায়ীরাও ক্ষুব্ধ। তারা জানান, মাদকসেবীদের কারণে দোকানপাটে চুরি, ছিনতাই এবং অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত এলাকাটি আগে শান্ত ছিল, কিন্তু গত কয়েক মাসে সেখানে অচেনা মুখের আনাগোনা এবং রাতভর সন্দেহজনক চলাচল বেড়ে গেছে।
একজন কলেজশিক্ষক বলেন, “আমরা বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করেছি। কিন্তু কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান না হলে এভাবে সমাজকে ধ্বংস করে দেবে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।”
হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট স্থানে নতুন করে যদি মাদককারবারের অভিযোগ ওঠে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
এলাকাবাসীর একমাত্র দাবি— করিমের বাগানসহ পুরো দক্ষিণ মকিমাবাদ এলাকা যেন মাদকমুক্ত হয় এবং পুলিশের নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়। তাদের মতে, প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নিলেই কেবল “ইয়াবা স্বর্গরাজ্য” নামের এই অভিশাপ থেকে মুক্তি সম্ভব।