ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবিক পুলিশ আবুল হোসেন মানিকের সহযোগিতায়

ছয় বছর পর ভারসাম্যহীন যুবক ফিরে পেল পরিবার

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:০০:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০২৩
  • ৫৪ Time View

ছবি-ত্রিনদী

চাঁদপুর জেলা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ৬ বছর পর মো. টিপু (২৮) নামে ভারসাম্যহীন যুবক ফিরে পেল তার পরিবারের সদস্যদেরকে। কনস্টবল মানিকের এই ধরণের কাজ এটিই প্রথম নয়, পুলিশের চাকরীতে যোগদানের পর এই পর্যন্ত তিনি ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিভাবকদের নিকট হস্থান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে এসব তথ্য গনমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

জেলা পুলিশ জানায়, কনস্টেবল মানিক গত ৩০ জুলাই অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক টিপুকে দেখাশোনা করে আসছিল। অবশেষে গত ৩ আগস্ট তাকে চাঁদপুর আদালত চত্বর হতে উদ্ধার করে নিজ হাতে দাঁড়ি, চুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন জামা কাপড় পরিধান করিয়ে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুরের অর্পণ নামে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে।

এরপর মানিকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ও বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে ব্যক্তির পরিবারের সন্ধানে প্রচার চালায়। সর্বশেষ ৭ আগষ্ট অজ্ঞাতনামা যুবকের পরিচয় মিলে। ওই যুবক টিপু কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার পুরাতন চৌধুরী পাড়ার মো. ছবির মিয়ার ছেলে। পরিচয় পাওয়ার পর টিপুর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের চাঁদপুর আসার জন্য যোগাযোগ করা হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) দুপুরে টিপুকে পরিবারের নিকট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও টিপুর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এসপি। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় ও রাশেদ উপস্থিত ছিলেন।

কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের মানবিক কাজের বিবরণ হিসেবে জেলা পুলিশ জানায়, মানিক ইতি পূর্বেও কক্সবাজার জেলা পুলিশে কর্মরত থাকাকালীন ৯ জন, চট্টগ্রাম শহর হতে ৩ জন, নোয়াখালী সদর হতে ১ জন, লক্ষ্মীপুর সদর হতে ৪ জন এবং চাঁদপুর জেলা সদর হতে টিপুসহ ৫ জনসহ ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিবাকদের নিকট হস্থান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

এছাড়াও তিনি এ পর্যন্ত ২৯ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। সে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। মানিক লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার রোকনপুর গ্রামের রুহুল আমিন ও নুরজাহান দম্পত্তির ছেলে। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন।

মানিক জানান, ভবিষ্যতে তার সামর্থ্য অনুযায়ী বেতনের টাকার কিছু অংশ দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন, দুস্থ, এতিম, গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে চাকুরির পাশাপাশি দাঁড়াতে চায়।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মহৎ কাজটি পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এ ধরণের মানবিক কাজ জেলা পুলিশ প্রতিনিয়ত করবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন

মানবিক পুলিশ আবুল হোসেন মানিকের সহযোগিতায়

ছয় বছর পর ভারসাম্যহীন যুবক ফিরে পেল পরিবার

Update Time : ১১:০০:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০২৩

চাঁদপুর জেলা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ৬ বছর পর মো. টিপু (২৮) নামে ভারসাম্যহীন যুবক ফিরে পেল তার পরিবারের সদস্যদেরকে। কনস্টবল মানিকের এই ধরণের কাজ এটিই প্রথম নয়, পুলিশের চাকরীতে যোগদানের পর এই পর্যন্ত তিনি ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিভাবকদের নিকট হস্থান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে এসব তথ্য গনমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

জেলা পুলিশ জানায়, কনস্টেবল মানিক গত ৩০ জুলাই অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক টিপুকে দেখাশোনা করে আসছিল। অবশেষে গত ৩ আগস্ট তাকে চাঁদপুর আদালত চত্বর হতে উদ্ধার করে নিজ হাতে দাঁড়ি, চুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন জামা কাপড় পরিধান করিয়ে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুরের অর্পণ নামে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে।

এরপর মানিকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ও বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে ব্যক্তির পরিবারের সন্ধানে প্রচার চালায়। সর্বশেষ ৭ আগষ্ট অজ্ঞাতনামা যুবকের পরিচয় মিলে। ওই যুবক টিপু কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার পুরাতন চৌধুরী পাড়ার মো. ছবির মিয়ার ছেলে। পরিচয় পাওয়ার পর টিপুর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের চাঁদপুর আসার জন্য যোগাযোগ করা হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) দুপুরে টিপুকে পরিবারের নিকট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও টিপুর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এসপি। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় ও রাশেদ উপস্থিত ছিলেন।

কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের মানবিক কাজের বিবরণ হিসেবে জেলা পুলিশ জানায়, মানিক ইতি পূর্বেও কক্সবাজার জেলা পুলিশে কর্মরত থাকাকালীন ৯ জন, চট্টগ্রাম শহর হতে ৩ জন, নোয়াখালী সদর হতে ১ জন, লক্ষ্মীপুর সদর হতে ৪ জন এবং চাঁদপুর জেলা সদর হতে টিপুসহ ৫ জনসহ ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিবাকদের নিকট হস্থান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

এছাড়াও তিনি এ পর্যন্ত ২৯ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। সে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। মানিক লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার রোকনপুর গ্রামের রুহুল আমিন ও নুরজাহান দম্পত্তির ছেলে। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন।

মানিক জানান, ভবিষ্যতে তার সামর্থ্য অনুযায়ী বেতনের টাকার কিছু অংশ দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন, দুস্থ, এতিম, গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে চাকুরির পাশাপাশি দাঁড়াতে চায়।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মহৎ কাজটি পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এ ধরণের মানবিক কাজ জেলা পুলিশ প্রতিনিয়ত করবে।