ঢাকা ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুর সদরে ডাকাত আতংকে কয়েক গ্রামবাসী

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩
  • ৫০ Time View

ছবি-ত্রিনদী

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ও বালিয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘরের লোকদের গলায় ছুরি ধরে নিয়েগেছে মূল্যবান জিনিসপত্র। পূরুষ শূন্য পরিবারগুলো এখন আতংকে রাত কাটাচ্ছে। এসব এলাকার লোকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নূন্যতম গ্রাম পুলিশেরও ব্যবস্থা নেই বলে জানালেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিন বালিয়া ইউনিয়নের সাপদী গ্রামের ইসমাইল খান, লতিফ গাজী বাড়ী এবং বাগাদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন সাখুয়া গ্রামের মোরশেদ খান বাড়ী ও ময়দান খোলার কবির হোসেনের বাড়ীর চুরি ও ডাকাতির আলামত দেখাগেছে। এসব বাড়ীর ভুক্তভোগী লোকদের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

সাপদী গ্রামের ইসমাইল খান জানান, গত সপ্তাহে তিনি কুমিল্লায় ছিলেন। ১৪ অক্টোবর দিনগত রাতে তার বাড়িতে কেউ ছিল না। দুর্বৃত্তরা এসে তার ঘরের দরজার তালা ভেঙে ঘরের ভিতরে থাকা সবকিছু তছনছ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়েগেছে। দুটি স্টীলের আলমিরার তালা ভেঙেছে। ঘটনার পরিদন সকালে তিনি এসে এই দৃশ্য দেখেন এবং এলাকাবাসীকে জানান।

একই এলাকার লতিফ গাজীর প্রবাসী ছেলে ঘরে ডাকাতি হয় ১৩ অক্টোবর দিনগত রাতে। ঘরের জানালার গ্রীল কেটে মুখোশ পরে ডাকাতরা প্রবেশ করে। প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ছুরি ধরে ঘরে থাকা ১৫ হাজার টাকা এবং ৬ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়েগেছে। এই ঘটনায় তাদের আত্মীয় মো. মহিবুর রহমান পরিদন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

এদিকে পাশের বাগাদি ইউনিয়নের মোরশেদ খান বাড়ীতে গোলাপ হোসেন খান লিটনের ঘরে মুখশ পরে ডাকাতির চেষ্টা করা হয় ১৪ অক্টোবর দিনগত রাতে। ওই ঘরে লিটনের স্ত্রী সিরিন আক্তারের গলায় ছুরি ধরে ডাকাতির চেস্টা করে ডাকাত দলের সদস্যরা। এই ঘটনায় লিটন পরদিন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর পর পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

একই গ্রামের আবুর বাড়ীতে পর পর দুইদিন ডাকাত দলের সদস্যরা আসে। তারা ঘরের দজরায় নাড়া দিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে। কিন্তু ঘরে থাকা নারীরা কোন ধরণের শব্দ না করায় তারা চলে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঢালীরঘাট থেকে ফরক্কাবাদ পর্যন্ত দুই ইউনিয়নের সড়কের পাশের অধিকাংশ বাড়ীর কর্তা ব্যাক্তিরা প্রবাসে থাকেন। অনেকের বসতঘর পাকা এবং সেমিপাকা। বাড়ীতে পুরুষ শূণ্য থাকায় ডাকাত চক্রের সদস্যরা টার্গের নির্ধারণ করে প্রায় প্রতিদিন চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে।

বালিয়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনির হোসেন শেখ বলেন, সাপদী গ্রামটি আমার ওয়ার্ডে। একটি ডাকাতির ঘটনা আমি শুনেছি। আজকে আরো দুটি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা জেনেছি। বিষয়টি আমি আজই চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তবে ঘটনাস্থল এলাকায় গ্রাম পুলিশ দিয়ে টহলের ব্যবস্থা করব।

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটওয়ারীকে জানানো হয় ডাকাতির ঘটনা। তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলে আপনাদেরকে জানাব।

বাগাদী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মনির হোসেন বলেন, ব্রাহ্মন সাখুয়া গ্রামে দুটি ডাকাতির ঘটনা জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাদেরকে বলেছি থানায় অভিযোগ করার জন্য। পরবর্তীতে আমি তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করব। এই ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মারাগেছে। যে কারণে রাতে কেউ টহল দিতে পারছে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন

চাঁদপুর সদরে ডাকাত আতংকে কয়েক গ্রামবাসী

Update Time : ১১:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ও বালিয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘরের লোকদের গলায় ছুরি ধরে নিয়েগেছে মূল্যবান জিনিসপত্র। পূরুষ শূন্য পরিবারগুলো এখন আতংকে রাত কাটাচ্ছে। এসব এলাকার লোকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নূন্যতম গ্রাম পুলিশেরও ব্যবস্থা নেই বলে জানালেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিন বালিয়া ইউনিয়নের সাপদী গ্রামের ইসমাইল খান, লতিফ গাজী বাড়ী এবং বাগাদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন সাখুয়া গ্রামের মোরশেদ খান বাড়ী ও ময়দান খোলার কবির হোসেনের বাড়ীর চুরি ও ডাকাতির আলামত দেখাগেছে। এসব বাড়ীর ভুক্তভোগী লোকদের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

সাপদী গ্রামের ইসমাইল খান জানান, গত সপ্তাহে তিনি কুমিল্লায় ছিলেন। ১৪ অক্টোবর দিনগত রাতে তার বাড়িতে কেউ ছিল না। দুর্বৃত্তরা এসে তার ঘরের দরজার তালা ভেঙে ঘরের ভিতরে থাকা সবকিছু তছনছ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়েগেছে। দুটি স্টীলের আলমিরার তালা ভেঙেছে। ঘটনার পরিদন সকালে তিনি এসে এই দৃশ্য দেখেন এবং এলাকাবাসীকে জানান।

একই এলাকার লতিফ গাজীর প্রবাসী ছেলে ঘরে ডাকাতি হয় ১৩ অক্টোবর দিনগত রাতে। ঘরের জানালার গ্রীল কেটে মুখোশ পরে ডাকাতরা প্রবেশ করে। প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ছুরি ধরে ঘরে থাকা ১৫ হাজার টাকা এবং ৬ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়েগেছে। এই ঘটনায় তাদের আত্মীয় মো. মহিবুর রহমান পরিদন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

এদিকে পাশের বাগাদি ইউনিয়নের মোরশেদ খান বাড়ীতে গোলাপ হোসেন খান লিটনের ঘরে মুখশ পরে ডাকাতির চেষ্টা করা হয় ১৪ অক্টোবর দিনগত রাতে। ওই ঘরে লিটনের স্ত্রী সিরিন আক্তারের গলায় ছুরি ধরে ডাকাতির চেস্টা করে ডাকাত দলের সদস্যরা। এই ঘটনায় লিটন পরদিন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর পর পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

একই গ্রামের আবুর বাড়ীতে পর পর দুইদিন ডাকাত দলের সদস্যরা আসে। তারা ঘরের দজরায় নাড়া দিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে। কিন্তু ঘরে থাকা নারীরা কোন ধরণের শব্দ না করায় তারা চলে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঢালীরঘাট থেকে ফরক্কাবাদ পর্যন্ত দুই ইউনিয়নের সড়কের পাশের অধিকাংশ বাড়ীর কর্তা ব্যাক্তিরা প্রবাসে থাকেন। অনেকের বসতঘর পাকা এবং সেমিপাকা। বাড়ীতে পুরুষ শূণ্য থাকায় ডাকাত চক্রের সদস্যরা টার্গের নির্ধারণ করে প্রায় প্রতিদিন চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে।

বালিয়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনির হোসেন শেখ বলেন, সাপদী গ্রামটি আমার ওয়ার্ডে। একটি ডাকাতির ঘটনা আমি শুনেছি। আজকে আরো দুটি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা জেনেছি। বিষয়টি আমি আজই চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তবে ঘটনাস্থল এলাকায় গ্রাম পুলিশ দিয়ে টহলের ব্যবস্থা করব।

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটওয়ারীকে জানানো হয় ডাকাতির ঘটনা। তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলে আপনাদেরকে জানাব।

বাগাদী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মনির হোসেন বলেন, ব্রাহ্মন সাখুয়া গ্রামে দুটি ডাকাতির ঘটনা জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাদেরকে বলেছি থানায় অভিযোগ করার জন্য। পরবর্তীতে আমি তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করব। এই ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মারাগেছে। যে কারণে রাতে কেউ টহল দিতে পারছে না।